হোম জাতীয় যশোরে স্পিরিট পানে তিনজনের মৃত্যু

জাতীয় ডেস্ক :

যশোর সদর উপজেলার আবাদ কচুয়া গ্রামে রেক্টিফাইড স্পিরিট পানে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।

স্পিরিটপানে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) দুজন এবং শুক্রবার (২৭ জানুয়ারি) একজন মারা যান।

মৃতরা হলেন, আবাদ কচুয়া গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে ইসলাম (৪৫), শাহাজাহানের ছেলে জাকির হোসেন (২৯) এবং আবু বক্কারের ছেলে আবুল কাশেম ওরফে বাগানে(৫৫)।

স্থানীয়রা জানান, গত ২৫ তারিখ রাতে গ্রামের একটি মেহগনি বাগানে বসে ৫ জন রেক্টিফাইড স্পিরিট পান করে অসুস্থ হয়ে পড়লে গ্রাম্য চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়। অবস্থার অবনতিতে বৃহস্পতিবার তথ্য গোপন করে তারা যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়। এদিন মারা যায় ইসলাম ও জাকির। আর শুক্রবার রাতে মারা যায় কাশেম।

চা দোকানি আবু বক্কার বলেন, ‘ওরা দিনের বেলা প্রজা থাকে রাতের বেলা রাজা হয়। কীসব দামি দামি খাবার খায়। এই খাইয়ে এখন ঘুমোয় গেছে।’

কচুয়া ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আমির হোসেন বলেন, এরা একসাথেই ঘোরাফেরা করেন, নেশা করে। অধিকাংশই গরিব। অ্যালকো বা অন্যকিছু খেয়েছে। তারপর মারা গেছে। বৃহস্পতিবার মারা যায় ইসলাম ও জাকির, ইসলামের কবর হয়েছে আবাদ কচুয়া গ্রামে এবং জাকিরের দাফন হয়েছে শ্বশুর বাড়ি রামনগর গ্রামে। আর শুক্রবার রাতে মারা যাওয়া কাশেমের কবর খনন চলছে আবাদ কচুয়া গ্রামে।

তিনি বলেন, একই সঙ্গে নেশা করা আশরাফ হোসেনের দুটো চোখ নষ্ট হয়ে গেছে বলে জানতে পেরেছি।

তিনি জানান, ঘটনা ধামাচাপা দিতে মৃতের পরিবারের সদস্যরা হাসপাতাল থেকে স্ট্রোকে মৃত্যুবরণের সনদ সংগ্রহ করে নিয়ে এসেছে।

তবে আশরাফ হোসেনের স্ত্রী নাজমা বেগম এ দাবি নাকচ করে দিয়ে বলেন, আমার স্বামী বাজারে কাঠের ব্যবসা করে। সে নেশা ভাং করে না। এগুলো মিথ্যা কথা। তার চোখ নষ্ট হয়নি। তবে তিনি কোথায় সে বিষয়ে কোনো সদুত্তর দেননি নাজমা বেগম।

মৃত ইসলামের বাড়িতে গেলে তার স্বজনরা দাবি করেন মানসিক চাপে স্ট্রোক করে তার মৃত্যু হয়েছে। গত ৭ দিন ধরে তিনি অসুস্থ ছিলেন।

যশোর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আব্দুর রশিদ জানান, স্বজনরা তথ্য গোপন করে রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি করেন। তবে রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে যতটুকু বোঝা গেছে, তারা অতিরিক্ত বা বিষাক্ত নেশাজাতীয় দ্রব্য পানে অসুস্থ হয়ে পড়েন।

যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, তিনজন মারা গেছে, আমরা তৃতীয় জনের মৃত্যুর বিষয়টি জানার পর মামলা প্রস্তুতি নিয়েছি। রেক্টিফাইড স্পিরিট পানে মারা গেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।

কতজন অসুস্থ আছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সংখ্যাটা জানা নাই। একজন অসুস্থ ছিল ঠিক হয়ে গেছে বলে পুলিশ জানতে পেরেছে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন