হোম জাতীয় যত দ্রুত সম্ভব মজুরি কাঠামো ঘোষণা করা হবে: শ্রম প্রতিমন্ত্রী

জাতীয় ডেস্ক:

শ্রমিকদের জন্য বাজারদর অনুযায়ী ন্যূনতম একটা মজুরি নির্ধারণের জন্য মজুরি বোর্ডকে সুপারিশ করেছেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান। যত দ্রুত সম্ভব মজুরি কাঠামো ঘোষণা করা হবে।

বৃহস্পতিবার (০২ নভেম্বর) শ্রম ভবনে শ্রমিক নেতাদের সাথে বৈঠক শেষে এসব কথা বলেন তিনি।

মালিক-শ্রমিকদের দাবিকে অযৌক্তিক বলে মনে করে সরকার। আগামী ৭ নভেম্বর মজুরি বোর্ড একটি গ্রহণযোগ্য মজুরি কাঠামো ঘোষণা করতে পারে বলেও জানান শ্রম প্রতিমন্ত্রী।

বাজার বিবেচনায় সম্ভাব্য ৭ তারিখ পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের জন্য গ্রহণযোগ্য মজুরি নির্ধারণ করবে সরকার এ কথা জানিয়ে শ্রমিকদের আন্দোলন বন্ধ করে কাজে যোগদানের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

এর আগে বুধবার -১ নভেম্বর রাজধানীর সেগুনবাগিচায় মজুরি বোর্ডের অফিসে সভা অনুষ্ঠিত হয়। তৈরি পোশাকশিল্পের শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানোর লক্ষ্যে গঠিত নিম্নতম মজুরি বোর্ডের সভা চূড়ান্তভাবে কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয়। তবে এ সভায় মজুরি নির্ধারণের সিদ্ধান্ত না হলেও শ্রমিকদের মজুরির গ্রেড ৭টি থেকে কমিয়ে ৫টি করার বিষয়ে সম্মত হয় মালিকপক্ষ।

সেগুনবাগিচায় মজুরি বোর্ড অফিসে সভায় মালিকদের পক্ষ থেকে ছিলেন তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) সাবেক সভাপতি ও স্টার্লিং গ্রুপের চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান। অন্যদিকে শ্রমিকপক্ষে ছিলেন জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক-কর্মচারী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম রনি।

সভা শেষে জানানো হয়, মজুরির ৭টি গ্রেডের বদলে ৫টি গ্রেড হবে। এ বিষয়ে মালিকপক্ষ সম্মত হয়েছেন। তবে নভেম্বরের মধ্যে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার চেষ্টা চলছে। আগামী মিটিংয়ে এ বিষয়ে প্রস্তাবনা আকারে জানানো হবে। এ ছাড়া সরকার যা সিদ্ধান্ত নেবে মালিকপক্ষ তা মেনে নেবে। সভায় মালিকপক্ষ থেকে দাবি করা হয়, যারা রাস্তায় আন্দোলন করেছেন তারা বেশিরভাগই শ্রমিক না। সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে আন্দোলনের কোনো মানে হয় না।

বিজিএমইএর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সরকার যা সিদ্ধান্ত নেবে তাই মেনে নেয়া হবে। যারা রাস্তা-ঘাট বন্ধ করে আন্দোলন করেছেন তাদের উদ্দেশ্য পরিষ্কার নয়। সভায় শ্রমিকপক্ষ থেকে বলা হয়, ২০ হাজার ৩৯৩ টাকার কথা আমরা বলেছি; এরমধ্যে কেউ এসে বলছে ২৩ হাজার টাকা, কেউ আবার বলছে ২৫ হাজার টাকা। এটি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য করা হচ্ছে।

নিম্নতম মজুরি বোর্ডের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলি জানান, মজুরি আরও বাড়ানোর পক্ষে মালিকপক্ষ সম্মত হয়েছে। শিগগিরই এ বিষয়ে আরেকটি মিটিং হবে।

এর আগে সোমবার (৩০ অক্টোবর) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয় সম্মেলন কক্ষে পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ১০ হাজার ৪০০ টাকার বেশিই নির্ধারিত হবে বলে জানিয়ে শ্রম প্রতিমন্ত্রী বলেন, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে মজুরি বোর্ড নূন্যতম মজুরি নির্ধারণ করবে। তৈরি পোশাক খাতের উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে সচিবালয়ে সাংবাদিক ব্রিফ করেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী, এ সময়ে তার সঙ্গে সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খানও উপস্থিত ছিলেন।

প্রতিমন্ত্রী ওইদিন বলেন, শ্রমিকদের মজুরি নির্ধারণ করতে বোর্ড গঠন করা হয়েছে। ২০১৮ সালের ডিসেম্বর থেকে ৫ বছরের জন্য নতুন মজুরি নির্ধারণ করা হয়। ৩০ নভেম্বর এর মেয়াদ শেষ হবে।

মালিক পক্ষ ও শ্রমিক পক্ষকে নিয়ে মজুরি বোর্ডের চেয়ারম্যান বসেছেন। মালিকপক্ষ ও শ্রমিকপক্ষ উভয়েই ন্যূনতম মজুরি কত হতে পারে তা তারা জানিয়েছেন। গার্মেন্টসের শ্রমিকরা বিভিন্ন দাবি-দাওয়ার কথা জানিয়ে রাস্তায় নেমেছেন। শ্রমিকদের মধ্যে কে বা কারা বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে যে মালিকপক্ষ প্রস্তাব দিয়েছে ১০ হাজার ৪০০ টাকা। আর শ্রমিকপক্ষ প্রস্তাব দিয়েছে ২০ হাজার ৩৯৩ টাকা। শ্রমিকদের কারা বুঝিয়েছে তাদের মজুরি ১০ হাজার ৪০০ টাকা নির্ধারণ হয়ে গেছে। আসলে তারা বিভ্রান্তিতে ভুগছেন বলেও জানান তিনি।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন