হোম ফিচার মৎস ব্যবসায়ীর ফেন্সিডিল সেবনের দৃশ্য ধারণ মোস্তফা-দ্বীপ ও র‌্যাব সদস্য রতনের ব্লাকমেলিং

মৎস ব্যবসায়ীর ফেন্সিডিল সেবনের দৃশ্য ধারণ মোস্তফা-দ্বীপ ও র‌্যাব সদস্য রতনের ব্লাকমেলিং

কর্তৃক
০ মন্তব্য 406 ভিউজ

হাবিবুর রহমান

গ্রামের ছোট-বড় সবাই দাদা বলে ডাকেন। কারো সাথে আজও একঠোঁট দুই হয়নি। এক র‌্যাব সদস্য ও দুই ফেন্সিডিল ব্যবসায়ী আমার জীবননাশ করতে চলেছে। এ প্রতিবেদকের সাথে একান্তে এসব কথা বলেন, পাটকেলঘাটা থানার টিকারামপুর গ্রামের কার্ত্তিক মন্ডলের ছেলে মঙ্গল মন্ডল(৪৫)।
গতকাল বুধবার সরজমিনে পাটকেলঘাটা থানার দলুয়া এলাকায় কথা হয় মঙ্গল মন্ডল সহ স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সাথে। মঙ্গল মন্ডল জানান, ৫০/৬০ বিঘার মাছের ঘের, দলুয়া মৎস্য বাজারে সততা ফিস নামের একটা আঁড়ৎ ব্যবসা আছে তার।

বছর দেড়েক আগে দলুয়া মৎস্য সেটের মালিক আব্দুল্লাহ আমানের ভাই জাহিদ তাকে নিয়ে যায় সাতক্ষীরা শহরে। পরে পরিচয় করিয়ে দেয় বাকালের মোস্তফার সাথে। পরে মোস্তফার মাধ্যমে পরিচয় হয় দীপ এবং র‌্যাব সদস্য রতনের। মোস্তফা ও দীপ ফেন্সিডিলের কারবারী এবং রতন ফেন্সিডিলসেবী। ওই সময় তারা মঙ্গলকে এক বোতল ফেন্সিডিল সেবন করায় তারা। একই ভাবে এর কিছুদিন পর মঙ্গল মন্ডলের দলুয়ার সততা ফিসে ঢুকে আবারও ১ বোতল ফেন্সিডিল সেবন করায়। দুটি ঘটনার ভিডিও চিত্র ধারণ করে মোস্তফা গংরা। মোস্তফা-দীপ দু’জনই ফেন্সিডিল ব্যবসায়ী। তারা র‌্যাব সদস্য ফেন্সিডিলে আসক্ত রতনকে সাথে নিয়ে মঙ্গলের কাছ থেকে চাঁদাবাজির ফাঁদ পাতে।

বছর খানেক আগে মঙ্গল মন্ডলকে বিনেরপোতায় আটকায় মোস্তফা। তার সাথে ছিল দীপ ও রতন। মোস্তফা এসময় মঙ্গলের নিকট এক লক্ষ টাকা দাবী করে। পরে দফারফা করে ২০ হাজার টাকা দিয়ে সে যাত্রায় রক্ষা পায় মঙ্গল মন্ডল। এরপর ত্রিশ হাজার ও পঞ্চাশ হাজার টাকা আদায় করে মঙ্গল মন্ডলের কাছ থেকে। কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা আদায়ের অস্ত্র ছিল ফেন্সিডিল সেবন ধারণ করা ভিডিও চিত্র। মঙ্গলকে বলা হতো তোকে ফেন্সিডিল মামলায় চালান দেব। কখন বলা হতো র‌্যাবের হাতে তুলে দেব।

মঙ্গল আরও জানায়, গত মঙ্গলবার ১২ টার দিকে ফেন্সিডিল ব্যবসায়ী মোস্তফা, দীপ ও র‌্যাব সদস্য রতন দলুয়া বাজারে সততা মৎস আড়তে গিয়ে মঙ্গলকে হুমকি দেয়, পঞ্চাশ হাজার টাকা দিবি নতুবা তোকে আজই র‌্যাব অফিসে নিয়ে যাব। অবস্থা বেগতিক দেখে টাকা আনার নাম করে মঙ্গল সটকে পড়ে। সে ঘটনাটি স্থানীয় চেয়ারম্যানকে জানায়। চেয়ারম্যান মোজাফ্ফর রহমান বিষয়টি জানার জন্য ফোনে মোস্তফার সাথে কথা বলে তার ইউনিয়ন পরিষদে চা খাওয়ার আমন্ত্রন জানান। কিন্ত চেয়ারম্যানের ফোন পেয়েই তারা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

একই দিন অর্থাৎ মঙ্গলবার এই চক্র দলুয়া মৎস আড়ৎ এর পল্লব ফিসের মালিক কৃষ্ণ মন্ডলের নিকট থেকে পয়ত্রিশ হাজার টাকা চাঁদাবাজি করে। চিংড়ি মাছে অপদ্রব্য পুশ করছে এই অভিযোগ এনে কৃষ্ণকে ভয়ভীতি দেখায় চক্রটি।

এ ব্যাপারে মোস্তফার সঙ্গে মোবাইলে কথা বললে তিনি জানান, ঘটনা সত্য নয়। আমি সিটি কলেজে অনার্স পড়ি। তবে তার পিতার নাম বার বার জানতে চাইলেও বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, তার বাড়ী বাকালে।

র‌্যাব সদস্য রতন জানান, তিনি কনস্টেবল। গোয়েন্দা বিভাগে সাতক্ষীরা র‌্যাব ক্যাম্পে আছেন গত দু’বছর। মোস্তফা ও দীপের বিষয়ে তিনি বলেন, তারা আমাদের সাথে কাজ করতো। তবে তিনি অনৈতিক কর্মকান্ডের কথা অস্বীকার করেন। তবে এ সিন্ডিকেটের অপর সদস্য দীপকে সনাক্ত করা যায়নি।

সাতক্ষীরা র‌্যাব ক্যাম্পের এএসপি মোঃ মোতাহার হোসেন জানান, আমাদের কোন সদস্য অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়লে তদন্তকরে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রতিবেদকঃ সম্পাদক ও প্রকাশক,দৈনিক সাতনদী

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন