স্পোর্টস ডেস্ক:
১৪ বছর পর ভারতের মাটিতে পা রেখেছেন বিশ্ব ফুটবলের মহাতারকা লিওনেল মেসি। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত আড়াইটায় কলকাতায় পা রাখেন মেসি। এর মাধ্যমে শুরু হয় ‘গোট ইন্ডিয়া ট্যুর ২০২৫’। এ সময় আটবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী এই ফুটবলারকে এক পলক দেখতে পুরো শহরে ছিল উৎসুক জনতার ভিড়।
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) কলকাতার সল্ট লেকের যুবভারতী স্টেডিয়ামে হাজির হন লিওনেল মেসি। তাকে দেখা জন্য অধীর আগ্রহে গ্যালারিতে অপেক্ষায় ছিলেন হাজার-হাজার ভক্ত। এ সময় চরম অব্যবস্থাপনার কারণে বিশৃঙ্খলা ঘটে। সে কারণে আর্জেন্টাইন মহাতারকার কাছে ক্ষমা চেয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।
এক্সে দেওয়া বার্তায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, ‘আজ সল্টলেক স্টেডিয়ামে যে অব্যবস্থাপনা হয়েছে, তাতে আমি গভীরভাবে বিচলিত ও মর্মাহত। আমি নিজেও হাজার হাজার ক্রীড়াপ্রেমীর সঙ্গে প্রিয় ফুটবলার মেসিকে দেখতে অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে ছিলাম।’
মেসির কাছে ক্ষমা চেয়ে তিনি আরও লেখেন, ‘এই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনার জন্য আমি আন্তরিকভাবে লিওনেল মেসি এবং সব ক্রীড়াপ্রেমী ও তার ভক্তদের কাছে ক্ষমা চাইছি।’
মমতা জানান, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অসীম কুমার রায়ের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে মুখ্য সচিব এবং স্বরাষ্ট্র ও পার্বত্য বিষয়ক দফতরের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব থাকবেন।
মমতা ব্যানার্জি লেখেন, ‘কমিটি এই ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত করবে, দায় ঠিক করবে এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনা ঠেকাতে সুপারিশ দেবে। আবারও সব ক্রীড়াপ্রেমীর কাছে আমার আন্তরিক ক্ষমাপ্রার্থনা।’
ভারত সফরের প্রথম দিনে সকাল সাড়ে ১১টায় যুবভারতীর মাঠে ঢোকে মেসির গাড়ি। তবে স্টেডিয়ামে ছিল চরম অব্যবস্থাপনা। গাড়ি থেকে মেসি নামার সঙ্গে সঙ্গে তাকে বেশ কিছু মানুষ ঘিরে ধরেন তাকে। ফলে গ্যালারি থেকে প্রায় ২০ মিনিট মেসিকে দেখাই যায়নি। এক সময় ক্ষুব্ধ ফুটবলপ্রেমীরা ‘উই ওয়ান্ট মেসি’ স্লোগান দিতে শুরু করেন।
মেসিকে ঘিরে রাখেন নিরাপত্তা রক্ষীরা। এতে গ্যালারি থেকে তাকে দেখা যাচ্ছিল না। চড়া দামে টিকিট কেটে মেসিকে দেখতে যাওয়া ফুটবলপ্রেমীদের ভরসা ছিল স্টেডিয়ামের তিনটি জায়ান্ট স্ক্রিন। মোহনবাগান এবং ডায়মন্ড হারবারের প্রাক্তন ফুটবলারদের সঙ্গে মেসি পরিচিত হওয়ার সময়ও ভিড় ঘিরে ছিল তাকে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস এবং প্রধান আয়োজক শতদ্রু দত্তকে মাইক্রোফোনে ঘোষণা করতে হয়। এতেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। ১১.৫২ মিনিটে আচমকা মেসিকে বের করে নিয়ে যাওয়া হয়।
মেসি স্টেডিয়াম থেকে বের হওয়ার পরই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। চড়া দামে টিকিট কিনে মাঠে এসেও মেসিকে দেখতে না পেয়ে দর্শকরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। এ সময় গ্যালারিতে লাগানো হোর্ডিং ভাঙচুর শুরু করেন তারা। ক্ষোভে গ্যালারির চেয়ার ভেঙে মাঠে ছুড়তে শুরু করেন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দিশেহারা হয়ে যায় পুলিশ। এক সময় মাঠের ধারে ফেন্সিংয়ের গেট ভেঙে হুড়মুর করে মাঠে ভক্ত-সমর্থকরা ঢুকতে শুরু করেন। এতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।
