আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
ভালোবাসা জাতি-ধর্ম কিংবা সীমান্ত মানে না। এ কথা আবারও সত্য প্রমাণিত হয়েছে। রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে সংঘাত চলছে। কিন্তু দেশ দুটির দুই তরুণ-তরুণী একে অপরকে ভালোবাসে। আর তাই যুদ্ধের বাধা উপেক্ষা করে ভালোবাসার জন্য দেশ ছেড়েছেন তারা। শুধু তাই নয়, ভালোবাসাকে সফল রূপ দিতে মেক্সিকোয় গিয়ে বিয়েও সেরে ফেলেছেন এ জুটি।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনে তিন বছর ধরে বসবাস করছিলেন রুশ নাগরিক সেমেন ববরোভস্কি। বসবাসের সূত্রে শুরুর দিকেই তার পরিচয় হয় ইউক্রেনের নাগরিক দারিয়া সাখনিউকের সঙ্গে। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরিকল্পনা ছিল রাজধানী কিয়েভে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সারবেন তারা।
কিন্তু এর মধ্যে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। অভিযান শুরুর পর বিয়ে নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে যান সাখনিউক ও ববরোভস্কি। এ অবস্থায় তারা পাড়ি জমান মেক্সিকোতে। উদ্দেশ্য, মেক্সিকো সীমান্ত হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমানো।
কিন্তু অভিবাসন বিধির কারণে যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে পারেননি তারা। ফলে বুধবার (১৩ এপ্রিল) মেক্সিকোর সীমান্তবর্তী শহর তিজুয়ানাতে ছোট আয়োজনের মধ্য দিয়ে বিয়ে করেন সাখনিউক ও ববরোভস্কি।
স্থানীয় টিভি নেটওয়ার্ক টেলিমুন্ডকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সাখনিউক বলেন, ‘আমি খুবই খুশি। এখানে দারুণ কিছু মানুষের সঙ্গে পরিচয় হয়েছে। তারাই আমাদের বিয়ের ব্যাপারে সহযোগিতা করেছেন।’ এই জুটি আরও জানান, কয়েক হাজার কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে মেক্সিকো সীমান্তে পৌঁছান তারা। এ সফরে তাদের সময় লেগেছে ছয় দিন।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হওয়ার পর মারিয়াচি ব্যান্ডের তালে তালে সাখনিউকের ২৭তম জন্মদিন উদ্যাপন করা হয়েছে। মেক্সিকোর ঐতিহ্যবাহী তাকুইজা পার্টিরও আয়োজন ছিল।
তিজুয়ানা পৌর কাউন্সিলের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দুই সপ্তাহ আগে সাখনিউক ও ববরোভস্কি শরণার্থী হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ঢোকার উদ্দেশ্যে মেক্সিকোতে পৌঁছান। তবে সাখনিউক যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসনের জন্য আবেদন করতে পারলেও ববরোভস্কির সে সুযোগ নেই।
শুধু যুদ্ধ থেকে পালিয়ে আসা ইউক্রেনীয় নাগরিকরা যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসনের জন্য আবেদন করতে পারছেন। তবে এখন সাখনিউক ও ববরোভস্কি বিবাহিত। এ নবদম্পতির আশা, তাদের যুক্তরাষ্ট্রে যেতে দেওয়া হবে এবং নিউইয়র্কে তারা পুনর্বাসিত হতে পারবেন।