আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে মিয়ানমারের বিদ্রোহীদের সঙ্গে জান্তার উত্তেজনা। একের পর এক সংঘর্ষ ঘটছে বিভিন্ন শহরে। এমন পরিস্থিতিতে সীমান্তবর্তী জেলার নাগরিকদির জন্য সতর্কবার্তা দিয়েছে চীন। বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
মিয়ানমারে চীনের দূতাবাস এক বার্তায় জানিয়েছে, সীমান্তবর্তী জেলার নাগরিকদের যুত দ্রুত সম্ভব সরে যাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হলো। নিরাপত্তার ঝুঁকি উল্লেখ করে দূতাবাস এ নির্দেশনা দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার কোকাং জেলার লাউক্কাই এলাকার জন্য এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ এলাকার সাথে দেশটির সীমান্ত রয়েছে। দেশটিতে ২০২১ সালে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জান্তার ক্ষমতা দখলের পর থেকে বিদ্রোহীদের সঙ্গে সংঘর্ষে বর্তমানে সবচেয়ে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে দেশটি এ সতর্কবার্তা দিয়েছে।
চলতি বছরের অক্টোবর থেকে মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলের শান স্টেটে আরাকান আর্মির পর আবার সংঘর্ষ ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। মান্দারিন ভাষাভাষী মিয়ানমারের ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যায়েন্স আর্মি (এমএনডিএএ), থান ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মিও (টিএনএলএ) তাদের সঙ্গে মিলে জান্তার বিরুদ্ধে অপারেশন ১০২৭ পরিচালনা করছে।
দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো বেশ কয়েকটি শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। এমনকি তারা চীনের সঙ্গে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক কেন্দ্রও দখল করেছে। দেশটিতে ইতিহাসে অপারেশন ১০২৭ সবচেয়ে বড় সহিংসতার ঘটনা। এর আগে এমন সহিংসতার সাক্ষী হয়নি দেশটি।
দূতাবাস উইচ্যাটের এক বার্তায় জানিয়েছে, মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চল এবং কোকাংয়ের লুক্কাই জেলায় ব্যাপক সংঘর্ষ চলছে। এর ফলে সেখানকার জনগণের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। এ কারণে মিয়ানমারে চীনের দূতাবাস আবারও লুক্কাই জেলার চীনা নাগরিকদের আবারও দ্রুত নিরাপদে সরে যেতে নির্দেশনা দিচ্ছে।
এমএনডিএ এ শহরটি পুনরুদ্ধারের হুমকি দিয়েছে। এ শহরটি জুয়া, আন্তর্জাতিক মানব পাচার এবং অনলাইন স্ক্যামের জন্য কুখ্যাত।
দেশটিতে সাম্প্রতিক আন্দোলনে পিডিএফসহ বিদ্রোহীরা ব্যাপক সফলতা অর্জন করেছে। এর মধ্যে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএএ), দ্য থান ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ) এবং দ্য আরাকান আর্মি (এএ) মিলে থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স গঠিত হয়। এ জোট গত ২৭ অক্টোবর জান্তার বিরুদ্ধে শান রাজ্যে সমন্বিত হামলা চালায়। এরপর থেকে বেশকিছু রাজ্যসহ সেনাচৌকি দখলে নেয় তারা।
হামলার ১০ দিনের ব্যবধানে থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স মিলে শতাধিক সামরিক ঘাঁটি দখল করে নিয়েছে। এ ছাড়া তারা দেশটির বেশ কয়েকটি মহাসড়ক ও সীমান্ত ক্রসিং দখলের দাবি করেছে। বিদ্রোহীদের জোটবন্ধ আন্দোলনে বড় বিপর্যয়ের মুখে দেশটির জান্তা।
মিয়ানমারের জাতীয় ঐক্য সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জিন মার অং চলতি নিক্কেই এশিয়াকে বলেছেন, সেনাদের মনোবল ইতিহাসের সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে। কারণ অনেকেই দলত্যাগ করছে। এমনকি বেশির ভাগ সামরিক ক্যাম্প আত্মসমর্পণ করতেও প্রস্তুত।