জাতীয় ডেস্ক:
জাতীয় সংসদে বহুল আলোচিত ‘সাইবার নিরাপত্তা বিল-২০২৩’ পাস হয়েছে। আইনটি কার্যকর হলে চারটি ধারায় অভিযুক্ত ব্যক্তি জামিন পাবেন না। এছাড়া বিলের ৪২ ধারা অনুযায়ী সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে তল্লাশি ও গ্রেফতারের ক্ষমতা পাবে পুলিশ। পাশাপাশি এই আইনে দায়েরকৃত মামলা মিথ্যা প্রমাণিত হলে সেজন্য বাদীকে শাস্তি পেতে হবে।
সাইবার সংক্রান্ত মামলার সর্বোচ্চ শাস্তি ১৪ বছরের জেল ও কোটি টাকা জারিমানার বিধানও রাখা হয়েছে।
বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে বিলটি পাসের প্রস্তাব উত্থাপন করেন তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক। পরে কণ্ঠভোটে বিলটি পাস হয়। এরআগে জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে প্রেরণ এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি করেন স্পিকার।
বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন রহিত করে সাইবার নিরাপত্তা আইন প্রণয়নে গত ৫ সেপ্টেম্বর বিলটি সংসদে তোলা হয়।
এরপর বিলটি পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। ওই বিলের ৪২ ধারায় বিনা পরোয়ানায় তল্লাশি ও গ্রেফতারের ক্ষমতা দেয়া আছে পুলিশকে।
এছাড়া বিলের ১৭, ১৯, ২৭ ও ৩৩- এই চারটি ধারা অজামিনযোগ্য রাখা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোতে বেআইনি প্রবেশ (ধারা-১৭), কম্পিউটার ও কম্পিউটার সিস্টেমে ইত্যাদির ক্ষতি সাধন (ধারা-১৯), সাইবার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সংগঠনের অপরাধ (ধারা-২৭), হ্যাকিং সংক্রান্ত অপরাধ (ধারা-৩৩) সংগঠিত করা ব্যক্তি জামিন পাবেন না।
বিলের মিথ্যা মামলা সংক্রান্ত ৩৪ ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি অন্য কারো ক্ষতিসাধনের উদ্দেশে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে এই আইনের অন্য কোনো ধারার অধীন মামলা বা অভিযোগ দায়ের করার জন্য ন্যায্য বা আইনানুগ কারণ না জেনেও মামলা বা অভিযোগ দায়ের করেন বা করান, তাহলে তা হবে একটি অপরাধ।
এই অপরাধে মামলা বা অভিযোগ দায়েরকারী ব্যক্তি এবং যিনি অভিযোগ দায়ের করিয়েছেন ওই ব্যক্তি মূল অপরাধের জন্য যে দণ্ড নির্ধারিত রয়েছে সেই দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
এদিকে বিলটির প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টি, গণফোরাম ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা আইনের অপপ্রয়োগের আশঙ্কা করেন। তারা বিলের ৪২ ধারাসহ বেশকিছু ধারার বিষয়ে আপত্তি জানান।
এছাড়া মানবাধিকারকর্মী ও সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন বলছে, সাইবার নিরাপত্তা বিলের বিভিন্ন ধারা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতোই। মূল বিষয়বস্তু বহাল রেখে এটি আইনে পরিণত করা হচ্ছে।