হোম আন্তর্জাতিক মার্কিন গোয়েন্দাপ্রধান কে এই তুলসী গ্যাবার্ড?

মার্কিন গোয়েন্দাপ্রধান কে এই তুলসী গ্যাবার্ড?

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 15 ভিউজ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসী গ্যাবার্ড। তিনি সোমবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি ওয়ার্ল্ডকে সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ আনেন। ইসলামিক খেলাফত নিয়ে মন্তব্য করেন। তাঁর এসব মন্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। ফলে নতুন করে আলোচনায় তুলসী। জেনে নেওয়া যাক, কে এই তুলসী? যার বিরুদ্ধে বারবার মতাদর্শ বদলানোর অভিযোগ, হিন্দু এক্সট্রিমিস্ট সংগঠনগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক নিয়েও বিতর্ক রয়েছে।

তুলসী গ্যাবার্ড একসময় ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর সদস্য। রাজনীতি করেছেন ডেমোক্রেটিক পার্টির হয়ে। পরে রিপাবলিকান পার্টিতে যোগ দেন তিনি। রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০২৪ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর তুলসীকে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক হিসেবে মনোনীত করেন।

৪৩ বছর বয়সী তুলসীর মনোনয়ন নিয়ে নানা তর্কবিতর্ক, আলোচনা-সমালোচনা হয়। তার ব্যাপারে খোদ রিপাবলিকান পার্টির অনেকে আপত্তি জানান। তাকে নিয়ে উদ্বেগ জানান যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রায় ১০০ কূটনীতিক, গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা কর্মকর্তা। তবে শেষ পর্যন্ত তুলসীর মনোনয়ন মার্কিন সিনেটে অনুমোদন পায়। গত ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি তিনি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালকের দায়িত্ব নেন।

আগে থেকে তুলসীর গোয়েন্দা বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিজ্ঞতা নেই। তবে দুই দশকের বেশি সময় মার্কিন বাহিনীতে একজন সেনাসদস্য হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে তার। কুয়েত ও ইরাক যুদ্ধের সময় দেশ দুটিতে তুলসীকে মোতায়েন করা হয়েছিল। এ ছাড়া দুই বছর যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়বিষয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন তিনি।

২০১৩ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ডেমোক্রেটিক পার্টির একজন কংগ্রেস সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তুলসী। ২০২০ সালে নিজ দল থেকে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হওয়ার জন্য দৌড়ঝাঁপ করেছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত সরে দাঁড়ান। ২০২২ সালে তুলসী ডেমোক্রেটিক পার্টি ছাড়েন। তখন তিনি অভিযোগ করে বলেছিলেন, ডেমোক্রেটিক পার্টি ‘যুদ্ধবাজদের’ আধিপত্যে চলছে।

তুলসী বিয়ে করেছেন আব্রাহাম উইলিয়ামস নামের এক সিনেমাটোগ্রাফারকে। তুলসীর বাবার নাম মাইক গ্যাবার্ড। মেয়ের মতো বাবারও দলবদলের ইতিহাস রয়েছে। তিনি প্রথমে রিপাবলিকান পার্টি থেকে সিনেট সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। পরে ডেমোক্রেটিক পার্টিতে যোগ দেন।

তুলসী রিপাবলিকান পার্টিতে যোগ দেওয়ার পর ২০২৪ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের প্রচারশিবিরের হয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। গত সেপ্টেম্বরে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী কমলা হ্যারিসের বিরুদ্ধে নির্বাচনী বিতর্কের প্রস্তুতি নিতে ট্রাম্পকে সহায়তা করেছিলেন তুলসী।

হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, নামের কারণে তুলসীকে অনেকেই ভারতীয় বলে মনে করেন। তবে ভারতের সঙ্গে তাঁর কোনো সম্পর্ক নেই। তবে ভারত সরকার ও দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে তুলসী গ্যাবার্ডের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। মোদির সঙ্গে কয়েকবার দেখাও করেছেন তিনি। সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্টারসেপ্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ২০১৯ সালে প্রতিনিধি পরিষদ নির্বাচনের সময় তুলসীর প্রচারশিবিরে “শত শত হাজার ডলারের” অনুদান দিয়েছিলেন হিন্দুত্ববাদী আন্দোলন- সংঘপরিবারের সঙ্গে যুক্ত শতাধিক ব্যক্তি। এই দলে মোদির বিজেপির লোকজনও রয়েছেন।

তুলসীর মা হিন্দু মতাদর্শে দীক্ষা নেন এবং তার সব সন্তানের হিন্দু নাম দেন। তুলসীও নিজেকে হিন্দু হিসেবে পরিচয় দেন। মার্কিন কংগ্রেসে তিনিই প্রথম হিন্দু সদস্য। আইনপ্রণেতা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার সময় ভগবত গীতা হাতে শপথ নিয়েছিলেন তুলসী গ্যাবার্ড।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন