জাতীয় ডেস্ক:
অবৈধভাবে সমুদ্রপথে ইতালি যাওয়ার সময় নৌকাডুবিতে মাদারীপুরের দুই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় নিখোঁজ রয়েছেন আরও একজন। বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১১টার দিকে দুই যুবকদের মৃত্যুর খবর জানাজানি হলে এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে।
নিহত মামুন শেখ রাজৈর উপজেলার খালিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম স্বরমঙ্গল গ্রামের ইউসুফ আলী শেখের ছেলে এবং সজল বৈরাগী একই উপজেলার সেনদিয়া গ্রামের সুনীল বৈরাগীর ছেলে।
নিখোঁজ আপন শেখ গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার গোয়ালা ইউনিয়নের পান্নু শেখের ছেলে।
স্বজনরা জানান, গত ১৪ জানুয়ারি মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার খালিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম স্বরমঙ্গল গ্রামের মামুন শেখ ও সেনদিয়া গ্রামের সজল বৈরাগীসহ বেশ কয়েকজন যুবক ইতালির উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হন। পরে গত বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) লিবিয়া থেকে একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকায় রওয়ানা দেন তারা। তিউনিসিয়ার ভূমধ্যসাগরে নৌকার ইঞ্জিন ফেঁটে যায়। এতে সাগরে ডুবে মামুন ও সজলসহ মারা যান ১২ জন। পরে খবর পেয়ে বেশ কয়েকজনকে জীবিত উদ্ধার করে স্থানীয় কোস্টগার্ড।
এ ছাড়া এখনো নিখোঁজ রয়েছেন আপন শেখ। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে মামুন ও সজলের মৃত্যুর খবরে পরিবারে চলছে শোকের মাতম। ব্যাংক ঋণ ও সুদে এনে দালালদের দেয়া টাকা পরিশোধ করা নিয়ে দুশ্চিন্তা রয়েছেন তাদের স্বজনরা।
স্বজনদের অভিযোগ, মানবপাচারকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার রাঘদি ইউনিয়নের সুন্দরদী গ্রামের বাদশা কাজীর ছেলে মোশারফ কাজী ইতালি নেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রত্যেকের কাছ থেকে নেন ১৩-১৫ লাখ টাকা। পরে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় ইতালি পাঠালে ঘটে এই দুর্ঘটনা। এই কাজে সহযোগিতা করেন মোশারফের ছেলে যুবরাজ কাজী। এমন ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন স্বজন ও এলাকাবাসী।
নিহত মামুনের বড়ভাই সজীব শেখ বলেন, আমার ভাইকে যে নৌকায় ওঠায়, সেটাকে ৫২ জন মানুষ ছিলেন। এটার ধারণ ক্ষমতা ১২-১৫ জন। অথচ, এতো মানুষ একসঙ্গে উঠিয়ে আমার ভাইকে মেরে ফেলছে দালাল। এই দালাল মোশারফের কঠিন বিচার চাই।
স্থানীয় বাসিন্দা সোহেল আহম্মেদ আকাশ বলেন, এই দালালরা প্রথমে প্রলোভন দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। পরে যুবকদের মৃত্যুর মুখে ফেলে দেয়। তাদের কঠিন বিচার হওয়া উচিত।
মাদারীপুরের রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান হাওলাদার আসাদ জানান, দুই যুবক মারা গেছেন এমন খবর এখনো কেউ জানাননি। ভুক্তভোগী পরিবারের কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।