নিউজ ডেস্ক:
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। প্রথমে মাঠ প্রশাসনের পদায়ন নিয়ে আলোচনা হয়। ১ নভেম্বর থেকে মাঠ প্রশাসন গোছানোর কাজ শুরু হবে।
বুধবার (২৯ অক্টোবর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি। এর আগে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সে বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে এই ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়।
শফিকুল আলম বলেন, ‘মাঠ প্রশাসনে যেন এমন পদায়ন না হয়, যারা গত তিনটি নির্বাচনে সম্পৃক্ত ছিলেন। সেখানে তারা রিটার্নিং অফিসার, পোলিং অফিসার বা অ্যাসিস্টেন্ট রিটার্নিং অফিসার হিসেবে থাকুন না কেন, গত তিন নির্বাচনে তাদের যদি ন্যূনতম ভূমিকা থাকে তাহলে যেন পদায়ন না হয় এ বিষয়ে বলা হয়েছে।’
প্রেস সচিব বলেন, ‘ইসির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এরই মধ্যে পদায়নের বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। পদায়নের ক্ষেত্রে কী কী ক্রাইটেরিয়া হবে এসব বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়। যিনি সবচেয়ে বেশি ফিট তার ক্রাইটেরিয়ায় আগের পোস্টিং, রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ড, কর্মদক্ষতা, তার বিরুদ্ধে কোনও নিউজ আছে কিনা অনেকগুলো বিষয় দেখা হচ্ছে। কতটুকু ফিট এবং যিনি ফিট তাকে দেওয়া হবে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায়। এগুলো র্যান্ডোমলি নির্বাচন করা হবে।’
শফিকুল আলম বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ‘‘আমাদের সেরাটা আশা করতে হবে কিন্তু সবচেয়ে খারাপের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।’’ যেকোনও পরিস্থিতির জন্য যেন প্রস্তুত থাকি আমরা। পদায়নের ক্ষেত্রে নিজ জেলায় কেউ যাবেন না। বিশেষ করে, আত্মীয় কিংবা শ্বশুরবাড়ি যদি থাকে সেখানে পোস্টিং হবে না। আরেকটি বিষয় দেখা হবে, পদায়নের ক্ষেত্রে নিকট আত্মীয় কেউ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে কিনা। আর এ বিষয়ে যে কাজ সেটি ১ নভেম্বর থেকে শুরু হবে।’
একই বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানিয়েছেন, তারাও এভাবে দেখছেন, কে সবচেয়ে বেশি ফিট। তারা ইতোমধ্যে একটা তালিকাও করে ফেলেছেন ৬৪ জনের। এ ক্ষেত্রে যাতে সর্বোচ্চ নিরপেক্ষ থাকে সেটিও লক্ষ্য রাখতে প্রধান উপদেষ্টা বার বার বলছেন।’
প্রেস সচিব জানান, সামাজিক মাধ্যম নিয়ে আজ অনেক আলাপ হয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে কীভাবে ভুল তথ্য ও অপতথ্য ছড়ানো হচ্ছে, সেটা নিয়ে আজকের মিটিংয়ে বড় রকমের আলাপ হয়। এ জন্য দুটি কমিটি করার কথা বলা হয়েছে। একটা হলো, সেন্ট্রাল সমন্বয় কমিটি, একদম উপজেলা পর্যন্ত এই কমিটি যেন থাকে। সেই বিষয়ে ইতোমধ্যে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। আরেকটা অপতথ্যের জন্য একটা কমিটি করা হচ্ছে। ইসি এবং মন্ত্রণালয়গুলোতেও এই কমিটি থাকবে। এটা উপজেলা পর্যায়েও থাকবে, যাতে সঙ্গে সঙ্গে রেস্পন্স করা যায়। দেখা গেছে, অনেক অপতথ্য কিংবা এআই দিয়ে বানানো কন্টেন্ট ফ্যাক্ট চেক করতে অনেক সময় দেরি হয়ে যায়। ফ্যাক্ট চেকিংয়ের টাইম যাতে খুব কম সময় করা যায়, সে বিষয়ে জোর দেওয়া হয়েছে। এর জন্য যা যা লজিস্টিকাল সাপোর্ট লাগে তার জন্য আইসিটি ও কালচারাল মিনিস্ট্রিকে বলা হয়েছে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মিসইনফরমেশন, ডিজইনফরমেশন, ফেক নিউজ সংক্রান্ত উদ্ভুত পরিস্থিতি সরকারের সব মেশিনারিজ ব্যবহার করে সরানো যায়, সেটা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘সবচেয়ে বেশি ফেক নিউজ ছড়ানো হয় ফেসবুকের মাধ্যমে। ফেসবুকের সঙ্গেও যাতে আমরা আরও গভীরভাবে কথাবার্তা বলি, আমাদের উদ্বেগগুলো যেন তাদের জানাই, সে বিষয়েও আলাপ হয়েছে।’
