এডিস ও কিউলেক্স। ঢাকা শহরের দুই মহাশত্রুর নাম। দুই প্রজাতির মশা নিধনে সারা বছরই ‘ক্রাশ প্রোগ্রাম’, ‘চিরুনি অভিযান’, ‘ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা’, ‘জেল-জরিমানা’ করছে সিটি করপোরেশন। প্রতিদিনই দেওয়া হচ্ছে ধোঁয়া, ছিটানো হচ্ছে ওষুধ। এরপরও কাজের কাজ হচ্ছে না তেমন। মশা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ সিটি করপোরেশনে দু-এক বছর পরপরই মহামারি আকারে দেখা দিচ্ছে ডেঙ্গু।
এভাবে মশকনিধন কার্যক্রম নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই প্রশ্ন তুলছিলেন বিশেষজ্ঞরা। ক্ষুব্ধ সাধারণ নাগরিকরাও। তাদের অভিযোগ ছিল, অব্যবস্থাপনা, অদক্ষতা, কর্মপরিকল্পনা না থাকাসহ নানান কারণে মশা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারছে না সিটি করপোরেশন। বিশেষ করে প্রতিদিন বিকেলে ধোঁয়া দিয়ে বা ফগিং করে মশা তাড়ানোর পদ্ধতি ছিল ভুল। এতদিন এ অভিযোগে তেমন পাত্তা না দিলেও এবার ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) স্বীকার করেছে, এ পদ্ধতি ভুল ছিল। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের মিয়ামি সফর করে এসে সে বোধ জন্মেছে ডিএনসিসি মেয়রের।
তিনি বলেছেন, আমরা এতদিন ভুল পদ্ধতি (ফগিং) ব্যবহার করেছি। তাতে মশা ধ্বংস হয়নি বরং অর্থের অপচয় হয়েছে।
মেয়র আতিকুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, আমরা এতদিন ভুল পদ্ধতি ব্যবহার করেছি। তাতে মশা ধ্বংস হয়নি। বরং অর্থের অপচয় হয়েছে। এখন আমরা মশার প্রজাতি চিহ্নিত করতে একটি ল্যাব স্থাপন করতে চাই। এর মাধ্যমে মশার জাত বুঝে কীটনাশক প্রয়োগ করা হবে। এখন ফগিংয়ে অর্থ অপচয় না করে লার্ভিসাইডিংয়ে বেশি গুরুত্ব দেবো।
মেয়র আরও বলেছেন, ধীরে ধীরে ফগিংয়ের পরিমাণ কমিয়ে আনা হবে। যেমন সপ্তাহে প্রতিদিনের বদলে এক দিন বা দুই দিন করা হবে। আর লার্ভিসাইডিংয়ে পুরোপুরি সক্ষমতা এলে ফগিং একেবারে বন্ধ করে দেওয়া হবে।
মেয়রের এমন স্বীকারোক্তির পর নানান মহলে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। কীট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অবশেষে মেয়র মশক নিধন কার্যক্রমের ব্যর্থতার কারণ বুঝতে পেরেছেন। এখন আধুনিক পদ্ধতিতে মশক নিধনে গুরুত্ব দিতে হবে।