মনিরামপুর প্রতিনিধি:
যশোরের মনিরামপুর থেকে সাব রেজিষ্ট্রারকে বদলির দুই মাস অতিবাহিত হলেও কাউকে পদায়ন বা পোষ্টিং করা হয়নি। ফলে দলিল রেজিষ্ট্রিতে স্থবিরতা বিরাজ করছে। যে কারনে জমি ক্রয়-বিক্রয় প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। দলিল রেজিষ্ট্রি না হওয়ার প্রভাব পড়েছে ভূমি অফিসে। অন্যদিকে সরকার প্রায় আট কোটি টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে। অথচ এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কোন তৎপরতা দৃশ্যমান নেই। উপজেলা সাব রেজিষ্ট্রি ও ভূমি অফিস সূত্রে জানাযায়, ১৭ টি ইউনিয়ন পরিষদ এবং একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত বিশাল আয়তনের মনিরামপুর উপজেলায় ইতিপূর্বে নিয়মিত একজন সাব রেজিষ্ট্রার পদায়ন ছিল। ফলে জমির ক্রেতা-বিক্রেতারা বেশ স্বাচ্ছন্দে দলিল রেজিষ্ট্রি করতে পারতেন। প্রতিমাসে এক হাজার থেকে দেড় হাজারের বেশি দলিল রেজিষ্ট্রি হতো। আর এ সব দলিল নামজারি করতে ভূমি অফিসে বেশ ভীড় হতো। দলিল রেজিষ্ট্রি এবং নামজারি করে সরকারের প্রতিমাসে রাজস্ব আয় হতো প্রায় আট কোটি টাকা। কিন্তু গত ৪ মে উপজেলা সাব রেজিষ্ট্রার মোস্তাক হোসেন শাকিলকে ঝিনাইদহে বদলি করা হয়। এর পর থেকে নিয়মিতভাবে কোন সাবরেজিষ্ট্রার পদায়ন করা হয়নি। ফলে রেজিষ্ট্রি কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। দলিল সম্পাদন করতে নিয়োজিত রয়েছেন ১৫৫ জন লেখক এবং ১৫৫ জন সহকারি। রেজিষ্ট্রি না হওয়ায় তারাও পড়েছে বিপাকে। পৌরশহরের গাংড়া এলাকার জমি ক্রেতা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, জমির টাকা পরিশোধ করেও সাবরেজিষ্ট্রার না থাকায় একমাস যাবত দলিল নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি।
দলিল লেখক মাহাবুবুর রহমান নাজিম বলেন, আমার সেরেস্তায় প্রতিদিন অন্তত ৮ থেকে ১০ টি দলিল জমা হচ্ছে। কিন্তু সাবরেজিষ্ট্রার না থাকায় চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। ভেন্ডার রবিউল ইসলাম জানান, ৪ মে সাবরেজিষ্টার বদলি হওয়ার পর ঝিকরগাছার সাবরেজিষ্ট্রার শাহিন আলম মনিরামপুরে অতিরিক্ত দায়িত্ব পান। কিন্তু তিনি কয়েকদিন পর আবার অন্যত্র চলে যান। উপজেলা সাব রেজিষ্ট্রার অফিসের অফিস সহকারি অসিম কুমার হালদার বলেন, অফিসে অত্যাধিক দলিল জটের কারনে জেলা রেজিষ্ট্রারের নির্দেশে অভয়নগর উপজেলা সাব রেজিষ্ট্রার ইকবাল হোসেন গতকাল বুধবার মনিরামপুরে দলিল রেজিষ্ট্রি করেন। তিনি জানান, সপ্তাহে এক থেকে দুইদিন ইকবাল হোসেন মনিরামপুরে অতিরিক্ত দায়িত্ব পেতে পারেন। সহকারি কমিশনার (ভূমি) নিয়াজ মাখদুম বলেন, মে মাসে নামজারি করা হয় এক হাজার ৬৮৫ টি এবং জুনমাসে হ্রাস পেয়ে হয় ৩০৬ টি। তিনি বলেন, দলিল রেজিষ্ট্রি না হলে নামজারির আবেদন হবেনা। তবে দলিল লেখক, ভেন্ডার, সাবরেজিষ্ট্রি ও ভূমি অফিসসহ এলাকাবাসীর দাবি মনিরামপুরে বিশাল জনগোষ্ঠি এবং সরকারের বিপুল পরিমান রাজস্বের স্বার্থে একজন নিয়মিক সাবরেজিষ্ট্রার পদায়ন করা উচিত। এ ব্যাপারে জানার জন্য জেলা রেজিষ্ট্রার আবু তালেবের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলে ও তিনি রিসিভ করেননি।