হোম খুলনাযশোর মনিরামপুরে শহীদ মিনার ভেঙ্গে টয়লেট স্থাপন করা সেই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাগজের শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন

মনিরামপুরে শহীদ মিনার ভেঙ্গে টয়লেট স্থাপন করা সেই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাগজের শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 21 ভিউজ
মনিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি:
যশোরের মনিরামপুরে শহীদ মিনার ভেঙ্গে টয়লেট নির্মাণ করা সেই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কাগজের শহীদ মিনার তৈরি করে তাতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন উপলক্ষে আজ শুক্রবার সকালে কামিনিডাঙ্গা বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ইট নিয়ে হাতে শহীদ মিনার তৈরি করে তাতে সাদা কাগজ মুড়িয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে। এসময় বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা তাদের শহীদ মিনার ভেঙ্গে টয়লেট নির্মাণ করা অভিযুক্ত শিক্ষক আব্দুর রশিদের শাস্তি দাবি করেছেন।
উপজেলার দূর্বাডাঙ্গা ইউনিয়নের কামিনীডাঙ্গা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় ও কুশরীকোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি একই চত্বরে অবস্থিত। দুই বিদ্যালয়ের জন্য নির্মিত একটি শহীদ মিনারে বিভিন্ন জাতীয় দিবসে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা শ্রদ্ধা নিবেদন করে আসছিল। সম্প্রতি কুশরীকোনা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদ সেই শহীদ মিনার ভেঙ্গে দিয়ে সেখানে টয়লেট নির্মাণ করেছেন। এই নিয়ে চলিতি মাসের প্রথম দিকে কামিনীডাঙ্গা বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক কামরুল হাসান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। পাশাপাশি শিক্ষক কামরুল হাসান বিদ্যালয়ের জমি দখল করে গাছ রোপন ও শহীদ মিনার ভেঙ্গে দেওয়ার বিষয়ে চলতি মাসের ১১ তারিখে কুশরীকোনা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান আব্দুর রশিদ ও সহকারী শিক্ষক শুকুমার মল্লিকের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন।
এরপর আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলে মনিরামপুর থানা পুলিশ বুধবার দুই শিক্ষককে ধরে আদকলতে হাজির করে। পরে ওইদিন বিকেলে আদালত তাদের জামিনে মুক্তি দেন।
শিক্ষক কামরুল হাসান বলেন, শহীদ মিনার ভেঙ্গে টয়লেট নির্মানের খবর ছড়িয়ে পড়লে তড়িঘড়ি নিজেদের ভবন ঘেষে নামমাত্র শহীদ মিনার নির্মাণ করেন আব্দুর রশিদ। আমরা বিষয়টি মেনে নেয়নি। আজ ভাষা দিবসে শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে আমাদের মেয়েরা ইট ও কাগজ দিয়ে শহীদ মিনার বানিয়ে তাতে ফুল দিয়েছে।
কামিনীডাঙ্গা বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাইমা খাতুন জানায়, আমাদের শহীদ মিনার ভেঙ্গে দিয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আব্দুর রশিদ স্যার। এজন্য আমরা কাগজ দিয়ে শহীদ মিনার বানিয়ে তাতে শ্রদ্ধা জানিয়েছি।
অভিযোগকারী শিক্ষক কামরুল হাসান বলেন, ১৯৮৩ সালে কামিনীডাঙ্গা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর আমাদের বিদ্যালয়ের জমিতে কুশরীকোনা প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপিত হয়। আমাদের নিজ খরচে বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়। আমাদের সাথে কোন পরামর্শ ছাড়াই প্রভাব খাটিয়ে সেটা ভেঙ্গে জমি দখলে নিয়ে সেখানে টয়লেট নির্মাণ করেছেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
এদিকে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদ বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ে সরকারিভাবে ওয়াশরুম বরাদ্দ এসেছে। বিদ্যালয়ের মাঠে বৃষ্টির পানি জমে। একারণে উপযুক্ত  জায়গা না পেয়ে পুরোন শহীদ মিনার ভেঙ্গে সেই জায়গায় ওয়াশরুম নির্মাণের জন্য দেওয়া হয়েছে।
আব্দুর রশিদ বলেন, চলতি মাসের ৬ তারিখে নতুন করে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে। আজ আমাদের শিক্ষার্থীরা সেখানে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে।
মনিরামপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবু মুত্তালিব আলম বলেন, অভিযোগ তদন্তের দায়িত্ব পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছি। প্রধান শিক্ষকের কাছে শহীদ মিনার ভাঙ্গার লিখিত জবাব চেয়েছি। তিনি জবাব দিয়েছেন। ব্যবস্থা গ্রহণ কার্যক্রম চলমান আছে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন