মনিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি:
১০ বছরের শিক্ষা জীবনে চোয়াল ও বাহুতে কলম ধরে পরীক্ষার খাতায় লিখে শ্রেণিতে প্রথম হওয়া যশোরের মনিরামপুরের বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন লিতুন জিরা ২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। বৃহস্পতিবার উপজেলার নেহালপুর স্কুল এণ্ড কলেজ কেন্দ্রে বাংলা প্রথম পত্রের পরীক্ষা দিয়েছে সে।
সরেজমিন জানা গেছে, যশোরের মনিরামপুর উপজেলার গোপালপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী লিতুন জিরা। সে মনিরামপুর উপজেলার নেহালপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। মনিরামপুর উপজেলার শেখপাড়া খানপুর গ্রামের হাবিবুর রহমান ও জাহানারা বেগমের মেয়ে লিতুন জিরা। দুই হাত-পা বিহীন অবস্থায় জন্ম হয় তার।
লিতুন জিরা স্থানীয় খানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে ২০১৯ সালের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ-৫ পান।
লিতুন জিরার বাবা হাবিবুর রহমান বলেন, লিতুনজিরার লেখাপড়ার অদম্য আগ্রহে আমরা তাকে বোঝা মনে না করে সর্বদা তার পাশে থেকে সব ধরনের সুযোগ সুবিধা দিয়ে যাচ্ছি। লিতুনজিরা তার প্রতিভা দিয়ে একের পর এক কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখে আমাদের মুখ উজ্জ্বল করেছে। তার মেধার ও অনন্য প্রতিভার কারণে সে সবার কাছে পরিচিত। এমনকি সে জাতীয় পর্যায়েও মেধার স্বাক্ষর রেখে সর্বোচ্চ পুরস্কার পেয়েছে। বাবা হিসেবে আমি গর্ববোধ করি।
লিতুন জিরার শিক্ষক কায়ছেদ আলী বলেন, লিতুন জিরা অস্বাভাবিক শিশু হলেও তার মধ্যে রয়েছে অদম্য মেধা ও ইচ্ছা শক্তি। সে সবার সাথে হেসে খেলে কথা বলে। সে পিএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল। চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাবে বলে আমরা আশা করছি।
লিতুন জিরার গোপালপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ রেজাউল করিম বলেন, লিতুন জিরা অসম্ভব মেধাবী, সে তার শ্রেণিতে শুধু প্রথম নয় স্কুলের মধ্যেও সে অন্যতম ও অনন্য। শুধু লেখাপড়ায় না, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডেও অন্যদের চেয়ে ভালো সে। চলতি এসএসসি পরীক্ষাতেও সে ভালো ফলাফল করবে অর্থ্যাৎ জিপিএ-৫ পাবে।
মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিশাত তামান্না বলেন, কঠোর অধ্যবসায় ও অদম্য ইচ্ছা শক্তি দিয়ে যে সবকিছু অর্জন করা যায় তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত লিতুন জিরা। আমি তার সর্বাঙ্গীণ সাফল্য ও মঙ্গল কামনা করি।