রিপন হোসেন সাজু, মনিরামপুর (যশোর):
যশোর-৫, মনিরামপুর আসনের এমপি হাফেজ আলহাজ্ব ইয়াকুব আলী অভিযোগ করেছেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে বিচ্যুত এক শ্রেনীর নেতাকর্মী একই দলের লোকজনকে প্রতিপক্ষ হিসেবে দেখছেন, তাদেরকে মারপিট করা সহ নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। যা আওয়ামী লীগের জন্য শুভকর নয়। এ থেকে বিরত হওয়ার আহবান জানান তিনি।
শনিবার বিকেলে উপজেলা আওয়ামী লীগের পুরাতন কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে বিএনপি নেতা ইউপি চেয়ারম্যান আক্তার ফারুক মিন্টুর নেতৃত্বে উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ঢুকে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাংচুর করার ঘটনায় সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক প্রভাষক ফারুক হোসেন। তিনি বলেন, নবনির্বাচিত উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গত ২৪র মে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শেষে জোর করে ওই দলীয় কার্যালয়ে প্রবেশ করেন। এসময় বিএনপি নেতা আক্তার ফারুক মিন্টুসহ কতিপয় উচ্ছৃংকলকারি কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন।
কার্যালয়ে রক্ষিত বঙ্গবন্ধু ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ছবি এবং স্থানীয় এমপি হাফেজ আলহাজ্ব ইয়াকুব আলীর ছবি সংবলিত ব্যানার ছিড়ে অবমাননা করা হয়। খবর পেয়ে পরদিন ২৫ মে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান এমপি হাফেজ আলহাজ্ব ইয়াকুব আলী ও সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক ফারুক হোসেনসহ নেতাকর্মীরা। মনোহরপুর আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে স্থানীয় নেতাকর্মী, পুলিশ প্রশাসন, গণমাধ্যম কর্মীদের উপস্থিতিতে তালা খোলা হয়। প্রবেশ করতেই দেখতে পায় ভাংচুর অবস্থায় পড়ে রয়েছে বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রীর ছবি ও সংসদ সদস্যদের প্যানা। তাৎক্ষনিক প্রতিবাদ সমাবেশ করা হয়।
এ ঘটনায় ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের দপ্তর সম্পাদক আব্দুস সবুর বাদী হয়ে মণিরামপুর থানায় এজাহার দায়ের করলেও আমলে নেয়নি পুলিশ। এক পর্যায় সংসদ সদস্যসহ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দসহ কেন্দ্রীয় কমিটি এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীকে অবহিত করেন। প্রভাষক ফারুক হোসেন দাবী করেন, গত ৮ মে অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচনে উপজেলা বিএনপির এক শীর্ষ নেতা ও তার অনুসারিরা মোটা অংকের অর্থ নিয়ে আমজাদ হোসেনের পক্ষ নিয়ে প্রচারনায় অংশ নেয়াসহ ভোট দেয়। অভিযুক্ত বিএনপি নেতা ইউপি চেয়ারম্যান আক্তার ফারুক মিন্টু ওই শীর্ষ নেতার অনুসারি বলে পরিচিত। এই সখ্যতা অনেক থেকেই রয়েছে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে নৌকার বিদ্রোহী প্রার্থী হন সাবেক প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য এবং তার নির্বাচনী প্রধান এজেন্ট ছিলেন আমজাদ হোসেন লাভলু। এ কারনে পরবর্তিতে তারা উভয় দল থেকে বহিষ্কার হন। ২০১৯ সালে উপজেলা নির্বাচনে নৌকার প্রাথীর বিপক্ষে প্রার্থী হয়ে ফের বহিষ্কার হন আমজাদ হোসেন লাভলু। উপজেলা পরিষদ নির্বাচন পরবর্তী সময়ে আমজাদ হোসেন লাভলুর লোকজন উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি হাসেম আলীসহ অনেক নেতাকর্মীকে মারধর করে হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবুল কালাম আজাদ, হাসেম আলী, গৌর কুমার ঘোষ, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সন্দীপ কুমার ঘোষ, ইউপি চেয়ারম্যান শামসুল হক মন্টু, হাফিজ উদ্দিন, ফারুক হুসাইন, পৌর কাউন্সিলর বাবুুল আকতার, মনোহরপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি কালী পদ মন্ডল, ভোজগাজী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক শহিদুল ইসলাম মোড়ল, মনোহরপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মশিউর রহমান, মহিতুজ্জামান মহিত প্রমূখ।