হোম অন্যান্যসারাদেশ মণিরামপুরে বাল্যবিবাহ রোধকল্পে ইউএনওর ডিজিটাল উদ্যোগ গ্রহন

মণিরামপুর(যশোর) প্রতিনিধি :

মণিরামপুরে বাল্য বিবাহ তড়িৎগতিতে রোধকল্পে নেওয়া হয়েছে ডিজিটাল উদ্যোগ। তৈরী করা হচ্ছে সিএমপি(চাইল্ড ম্যারেজ প্রিভেনশন) বিশেষ অ্যাপ। সিএমপি অ্যাপের মাধ্যমে হটলাইন ১০৯ নম্বরে বাল্য বিবাহের ম্যাসেজ অথবা কল দিলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে একযোগে পৌছে যাবে ইউএনও, এসিল্যান্ড, থানার ওসি, মহিলা বিষয়ক, সমাজসেবা, প্রাথমিক, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাসহ সকল ইউপি চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মোবাইলফোনে। ম্যাসেজ পাবার পর নিমিষেই বাল্যবিবাহের শিকার হওয়া ছাত্রীর প্রকৃত তথ্য যাচাইবাছাই করা হবে এ অ্যাপের মাধ্যমে।

অভিযোগ প্রমানিত(মাধ্যমিক পর্যায়ের)হলে তড়িৎগতিতে বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হবে। আর এ জন্য ইতিমধ্যে উপজেলার মাধ্যমিক পর্যায়ের ১৯০ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১৭ হাজার ছাত্রীর নাম ছবি ঠিকানা এবং মোবাইল নম্বও সম্বলিত প্রোফাইল করা হয়েছে। যা সন্নিবেশিত থাকবে সিএমপি অ্যাপে। আর ব্যতিক্রমধর্মি নন্দিত এ উদ্যোগটি গ্রহন করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ জাকির হাসান। বিশেষ এ অ্যাপ নির্মানের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে সিএমপি অ্যাপের কার্যক্রম সম্পন্ন হবে। সিএমপি(চাইল্ড ম্যারেজ প্রিভেনশন) অ্যাপ নির্মানের মূল কর্ণধার মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ জাকির হাসান জানান, মনিরামপুরে করোনাকালিন সময়ে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে শতাধিক ছাত্রীর বাল্য বিয়ে! শীর্ষক বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হবার পর থেকেই তিনি ভাবতে শুরু করেন বাল্য বিবাহ রোধকল্পে অত্যাধুনিক উদ্যোগ গ্রহনের। সেই চিন্তাধারা থেকেই তিনি আইসিটিতে পারদর্শি কর্মকর্তাবৃন্দসহ সংশ্লিষ্টদের সাথে দফায় দফায় বৈঠক করেন। বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেন সিএমপি(চাইল্ড ম্যারেজ প্রিভেনশন) অ্যাপ তৈরীর।

আর এ বিষয়টি তিনি যশোরের জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খানকে অবহিত করেন। জেলা প্রশাসক বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে তাকে বাস্তবায়নের জন্য উৎসাহ দেন। এ ব্যাপারে তাকে সবচেয়ে বেশি উদ্দিপনা দিয়েছেন তার সহধর্মিনী যশোর সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজের প্রভাষক শাহিনুর আক্তার। তিনি অ্যাপ তৈরীর কাজ শুরু করেন মাত্র দুই মাস আগে। এ জন্য তিনি পর্যায়ক্রমে মহিলা বিষয়ক, সমাজসেবা, সহকারি প্রোগ্রামার, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকতা,থানার ওসি, মাধ্যমিক পর্যায়ের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানসহ সংশ্লিষ্টদের সাথে মতবিনিময় করেন। এ ব্যাপারে সকলের সহযোগীতায় মাত্র দুইমাসের ব্যবধানে উপজেলার মাধ্যমিক পর্যায়ের ১৯০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের(১২০ টি মাধ্যমিক এবং ৭০ টি মাদ্রাসা) ১৭ হাজার ছাত্রীর নাম, ছবি, ক্লাস, জন্মতারিখ, মোবাইল নম্বর, অভিভাবক, প্রতিষ্ঠানের নামসহ পূর্নাঙ্গ ঠিকানা সম্বলিত তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করেন। সিএমপি অ্যাপের সাইডে এই ১৭ হাজার ছাত্রীর রয়েছে পৃথক প্রোফাইল।

আর এ জন্য সিএমপি অ্যাপের মাধ্যমে হটলাইনের ১০৯ নম্বরে যে কোন ব্যক্তি বাল্য বিবাহের ম্যাসেজ পাঠালে অথবা কল করলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে একযোগে পৌছে যাবে ইউএনও, এসিল্যান্ড, থানার ওসি, মহিলা বিষয়ক, সমাজসেবা, প্রাথমিক, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাসহ সকল ইউপি চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মোবাইলফোনে। ম্যাসেজ অথবা কল পাবার পর নিমিষেই ওই ছাত্রীর(বাল্যবিবাহের শিকার হওয়া) প্রকৃত তথ্য যাচাইবাছাই করা হবে এ অ্যাপের মাধ্যমে। ওই ছাত্রীর প্রকৃত তথ্য উপাত্ত সঠিক হলে তড়িৎগতিতে বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবেন উপজেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্টরা। অবশ্য সংবাদদাতার পরিচয় গোপন রাখারও নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে নাগোরঘোপ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল মজিদ জানান, সিএমপি অ্যাপটি বাল্যবিবাহ রোধকল্পে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রাখবে।

এ ক্ষেত্রে প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইন্টারনেট সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। পাড়িয়ালী বালিকা দাখিল মাদ্রাসার সুপার আবদুল হালিম একই মতামত ব্যক্ত করে জানান, এ ব্যাপারে এলাকায় প্রচারনা বাড়াতে হবে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র সরকার জানান, অ্যাপটি চালু হবার পর থেকে বাল্যবিবাহ রোধকরা সহজ হবে। অ্যাপটির মুল কর্ণধার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ জাকির হাসান জানান, সামাজিক ব্যধির ন্যয় বাল্য বিবাহ রোধকল্পে সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগীতায় সিএমপি অ্যাপ কার্যকরি ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে আরো জানান, অ্যাপটির একটি নামও দেয়া হবে ।

s

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন