রিপন হোসেন সাজু, মণিরামপুর (যশোর) :
মণিরামপুরে চাহিদার ৪ গুনেরও বেশি মাছ উৎপাদিত হয়। এমনকি দেশের কয়েকটি জেলার চেয়েও বেশি মাছ উৎপাদিত হয় এ উপজেলায়।
দেশের মানুষের স্বাভাবিক প্রোটিন চাহিদার একটি বড় অংশ পূরণ হয় মাছ থেকে। যা এ উপজেলার অভিশপ্ত জলাবদ্ধতা ভবদহ তৎসংলগ্ন এলাকা, কপোতাক্ষ নদের আববাহিকা ও বাওড়সহ বিল থেকে এ মাছ উৎপাদিত হয়। শনিবার মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় কালে এসব তথ্য উঠে আসে।
জানা যায়, দেশের বৃহত্তম উপজেলা যশোরের মণিরামপুর। ৪৪৬ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এ জনপদে ১৭টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা সহ ২৫৭টি গ্রামে প্রায় সাড়ে পাঁচ লক্ষাধিক নানা শ্রেণি পেশার মানুষের বসবাস।
এখানকার অধিকাংশ মানুষ কৃষির উপর নির্ভরশীল হলেও নানা কারণে তারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মৎস্য চাষে নিয়োজিত হয়ে পড়েছেন।
যশোর-খুলনা তথা দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের দুঃখ খ্যাত ভবদহের স্থায়ী জলাবদ্ধতা, কপোতাক্ষ অববাহিকা অধ্যুষিত হওয়ায় এ অঞ্চলের কৃষিজীবী মানুষেরা মৎস্য চাষে উদ্ভুদ্ধ হয়ে পড়েন।
উপজেলা মৎস্য দপ্তরসূত্রে জানা যায়, অত্র উপজেলায় ৩টি নদী, ১২টি খাল, ১৩টি বিল,৫টি বাওড়, প্রায় ৫হাজার পুকুর ও ১১হাজার মৎস্য ঘের আছে।
এসব উৎসের অন্ততঃ ১৬হাজার হেক্টর আয়তনের জলাশয় থেকে প্রায় ৩৯ হাজার মে.টন বিভিন্ন প্রজাতির মাছ উৎপাদিত হয়।
যার মধ্যে স্থানীয় চাহিদা মাত্র ৯,১৪২ মে.টন। উপজেলা মৎস্য দপ্তরের দিকনির্দেশনা, নিয়মিত প্রশিক্ষণ, নজরদারি, সর্বোপরি মৎস্য চাষের সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারিদের সেবামূলক মনোভাব ও সহযোগিতা মাছ উৎপাদনে ধারাবাহিক ঈর্ষনীয় সাফল্য অর্জিত হচ্ছে বলে জানান মৎস্য চাষি ও মৎস্যজীবীরা।
ঝিনাইদহ, মাগুরাসহ কয়েক জেলার চেয়েও বেশি মাছ উৎপাদিত হয় এ উপজেলায় উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা রিপন কুমার ঘোষ বলেন, উপজেলায় পাবদা, শিং, মাগুর, টেংরা, তেলাপিয়া, পাঙ্গাস, রুই, কাতলা, মৃগেল, গ্রাসকার্প, কমন কার্প,গালদা চিংড়ী ইত্যাদি নানা প্রজাতির মাছের চাষ করা হয়। এখানে চাহিদার অন্ততঃ ৪গুন মাছ উৎপন্ন হয়। মাছ চাষ একটি সম্ভবনাময় খাত এবং একটি শিল্পে পরিনত হয়েছে।
দক্ষ চাষি, কর্মসংস্থান ও স্বনির্ভরতা সৃষ্টিতে সরকার নানামুখী কার্যক্রম পরিচালনা করছে। আধুনিক পদ্ধতিতে মাছ চাষে চাষিদের বিভিন্নভাবে প্রশিক্ষণ, কারিগরী সহযোগীতা এবং পরামর্শ সেবা দেওয়া হচ্ছে। মৎস্যচাষে যান্ত্রীকীকরণ ও নিরাপদ মৎস্য উৎপাদন ও নায্যমূল্য প্রাপ্তিতে উপজেলা মৎস্য দপ্তর নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে।। আত্ম-কর্মসংস্থান ও স্বনির্ভর হতে মাছ চাষের কোন বিকল্প নেই।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ জাকির হাসান বলেন, অত্র উপজেলায় মৎস্য সম্পদ একটি সম্ভাবনাময় খাত। বর্তমান সরকার মৎস্য উৎপাদনের ওপর গুরুত্ব দিয়ে নানাভাবে এই সেক্টরকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় প্রতিবছর জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদযাপিত হচ্ছে।
