মণিরামপুর( যশোর) প্রতিনিধি :
প্রখর রোদ উপেক্ষা করে যশোরের মণিরামপুরের কৃষাণ-কৃষাণী ধান সেদ্ধ-শুকানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ ধান শুকানোর পরেই তা মাড়িয়ে তৈরী হবে পরবর্তি আমন পর্যন্ত খাওয়ার চাল। শুধু কৃষাণ-কৃষাণী নন, এ কাজে ছেলে-বউও সহযোগিতা করছেন। উপজেলার চন্ডীপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ সকল অঞ্চলের গ্রাম-গঞ্জের মাঠে চলছে শুকানোর মহোৎসব। আকাশে মেঘ জমেছে তাই পরিবারের ছোট থেকে বয়োবৃদ্ধ সবাই মিলে ধান উঠানোর কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। এদের কেউ সাপডা (ধান নাড়া চাড়া করার জন্য বাঁশের হাতল ও কাঠ দিয়ে তৈরী এক ধরনের যন্ত্র) দিয়ে ধান এক জায়গায় করছেন, কেউ ঝাড়- দিয়ে ধান কুড়াচ্ছেন, আবার কেউ ডালা দিয়ে ধান বস্তায় ভরছেন।
শত ব্যস্তর মধ্যে কথা হয় শাহিদা বেগমের সাথে তিনি বলেন, সেদ্ধ ধানে এট্টু পানি নাগলি চাল বানাতি কষ্ট হবেনে, এতে করে ওই চালের ভাত আর খাওয়া যাবেন না বাবা। এজন্যি স্কুল মাঠে ধান অ্যানে বাড়ির সবাই মিলে রোদি (রোদে) ধান শুানের কাজ করতেছি। তার এ কাজে সাহায্য হিসেবে ছেলে হাবিবুর রহমান সহযোগিতা করছিলেন। শুধু সাহিদা পরিবার না, ওই গ্রামের অধিকাংশ নারী-পুরুষ ওই মাঠে ধান শুকাচ্ছিলেন। চলতি বোরো মৌসুমে যশোরের মণিরামপুরে মাঠ থেকে ধান কাটা প্রায় শেষের পর্যায়। এ মূহুর্তে ধান ঝাড়া (পরিস্কার) করাও শেষের পথে। পরবর্তি আমন মৌসুম পর্যন্ত খাওয়ার চাল বানাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। তাইতো গ্রামের সিংহভাগ পরিবারে চলছে ধান সেদ্ধ-শুকানোর কাজ।
জামাই ইব্রাহিম তার শাশুড়ি নূরজাহানকে ধান শুকানোর কাজে সহযোগিতা করছেন। অবশ্য বসে ছিলেন না মেয়ে আসমাও, তিনি বাবার বাড়িতে বেড়াতে এসে মাকে সাহায্য করছেন। এ সময় কৃষক ইউসুফ আলী বলেন, আগে গ্রামের প্রত্যেক গৃহস্থ বাড়ি সংলগ্ন খলেন (বড় উঠান) থাকতো। কিন্তু আজ গ্রামের অধিকাংশ বাড়িতে ফাঁকা জায়গার অভাব। সেই কারণে স্কুল মাঠ কিংবা ফসলি মাঠের ফাঁকা জায়গায় নাইলোনের সুতোই বুনা নেট (জাল)-এর উপর ধান শুকানো হচ্ছে।