আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
আফগানিস্তানের শাসক গোষ্ঠী তালেবান ভারতকে একটি ‘গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক ও অর্থনৈতিক অংশীদার’ বলে উল্লেখ করেছে। বুধবার (৮ জানুয়ারি) দুবাইয়ে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি ও তালেবানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির মধ্যে বৈঠকের পর এ মন্তব্য এসেছে। ২০২১ সালে কাবুল দখলের পর এটি দুই দেশের মধ্যে সবচেয়ে উচ্চ পর্যায়ের আলোচনা। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
আফগান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, বৈঠকে চাবাহার বন্দরের মাধ্যমে বাণিজ্য বৃদ্ধি এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
ইরানের এই বন্দরটি ভারত বিকাশ করছে, যাতে পাকিস্তানের করাচি ও গওয়াদার বন্দরের ওপর নির্ভরতা এড়ানো যায়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আফগানিস্তানের ভারসাম্যপূর্ণ ও অর্থনীতিমুখী পররাষ্ট্রনীতির অংশ হিসেবে ইসলামিক আমিরাত (আফগানিস্তান) ভারতের সঙ্গে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করতে চায়।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, আফগানিস্তানে উন্নয়ন প্রকল্পে কাজ করতে এবং বাণিজ্য সম্পর্ক বাড়াতে তারা আগ্রহী। এছাড়া আফগান শরণার্থীদের পুনর্বাসনে উপকরণগত সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দিল্লি।
পাকিস্তান ও ইরান থেকে ২০২৩ সালের শেষ দিক থেকে প্রায় ১০ লাখ আফগান শরণার্থী দেশে ফিরেছে। ভারতের বিবৃতিতে বলা হয়, আফগান পক্ষের অনুরোধে স্বাস্থ্য খাতে সহায়তা ও শরণার্থীদের পুনর্বাসনের জন্য আরও সহায়তা দেবে তারা। আফগানিস্তান ইতোমধ্যে শরণার্থীদের জন্য জমি বিতরণ শুরু করেছে।
ভারত আরও জানিয়েছে, তারা আফগান স্বাস্থ্য খাতে সহায়তা বাড়ানোর পাশাপাশি ক্রিকেটসহ ক্রীড়া ক্ষেত্রে সম্পর্ক জোরদার নিয়ে আলোচনা করেছে।
যদিও ভারতসহ কোনও বিদেশি সরকার তালেবান প্রশাসনকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়নি। তবু ২০২২ সালের জুনে ভারত কাবুলে তাদের দূতাবাস পুনরায় চালু করে। বর্তমানে কারিগরি বিশেষজ্ঞদের একটি দল দূতাবাস পরিচালনা করছে।
বুধবারের বৈঠকটি আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে হয়েছে। পাকিস্তান সম্প্রতি আফগানিস্তানের পাকতিকা প্রদেশে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে লক্ষ্য করে অভিযান চালায়। তালেবান পাকিস্তানের অভিযোগ অস্বীকার করলেও ওই অভিযানে বহু বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়। ভারতের পররাষ্ট্র দফতর ওই হামলার নিন্দা জানিয়েছে।
বৈঠকে আফগান পক্ষ ভারতের নিরাপত্তা উদ্বেগের প্রতি সংবেদনশীলতা প্রকাশ করেছে। ভারত জানিয়েছে, দুপক্ষ নিয়মিত যোগাযোগ রাখার বিষয়ে একমত হয়েছে।
ভারতের খাদ্যশস্য, ওষুধ, কোভিড টিকা ও শীতের পোশাকসহ বেশ কয়েকটি ত্রাণ সহায়তা ইতোমধ্যে আফগানিস্তানে পাঠানো হয়েছে।