খেলাধূলা ডেস্ক :
কদিন আগেই দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে ওয়ানডেতে ইতিহাস হয়েছে। উদিত হয়েছে লাল-সবুজের নতুন সূর্যোদয়। বাকি ছিল টেস্ট। দক্ষিণ আফ্রিকার তারকা খেলোয়াড়রা আইপিএলে ব্যস্ত থাকায় বড় ‘মওকা’ হিসেবেই দেখা হচ্ছিল দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজকে। এছাড়া টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে নিজেদের পয়েন্ট তালিকা সমৃদ্ধ করারও দারুণ সুযোগ ছিল বাংলাদেশের সামনে। কিন্তু প্রথম তথা ডারবান টেস্টে দায়িত্বহীন ব্যাটিংয়ে ব্যর্থতার পাল্লা আরও দীর্ঘ হলো মুমিনুল বাহিনীর। এদিকে, ওয়ানডেতে সিরিজ হারের দগদগে ক্ষতের পর প্রথম টেস্ট জয় কিছুটা হলেও স্বস্তি দিচ্ছে স্বাগতিক প্রোটিয়া শিবিরে।
টেস্ট ক্রিকেটে টস জিতে ফিল্ডিং করার নজির খুবই কম। ডারবানের কিংস্টনে সেটিই নিলেন অধিনায়ক মুমিনুল। যে সিদ্ধান্ত অবাক করেছিল খোদ প্রোটিয়া অধিনায়ক ডিন এলগারকে। টস জিতে ফিল্ডিং নেওয়ার পর শুরুটাও ভালো হয়নি বাংলাদেশের। তবে টাইগার পেসারদের শেষদিকের তোপ আর প্রথম ইনিংসে মাত্র তৃতীয় টেস্ট খেলতে নামা মাহমুদুল হাসান জয়ের অভিষেক টেস্ট সেঞ্চুরিতে ম্যাচে ফেরে বাংলাদেশ।
এবাদত-মিরাজদের তোপ আর বেশ কয়েকটি দারুণ ক্যাচে দ্বিতীয় ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকাকে অলআউট করতে পারলেও ইতিহাস গড়ে জয় তুলে নিতে বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৭৪ রান। এর আগে টেস্ট ক্রিকেটে এত রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড নেই লাল-সবুজ বাহিনীর, তবুও প্রথম ইনিংসে জয়ের অনবদ্য সেঞ্চুরিতে দ্বিতীয় ইনিংসেও আশা দেখছিল বাংলাদেশ।
আশা ছিল ওয়ানডে সিরিজের মতো টেস্টেও নতুন করে ইতিহাস লিখবে বাংলাদেশ। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমেই মাত্র ৮ রান তুলতেই তিন তিনটি উইকেট হারায় বাংলাদেশ। শেষমেশ চতুর্থ দিনের খেলা শেষ হয় ৩ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ১১ রান তুলে।
পঞ্চম দিনে বাংলাদেশ তাকিয়ে ছিল অভিজ্ঞ টাইগার সদস্য মুশফিকুর রহিমের দিকে। এছাড়া লিটন দাসও ছিলেন দুর্দান্ত ফর্মে। কিন্তু পঞ্চম দিনে যেন বাংলাদেশের ব্যাটে মড়ক শুরু হয়। ঘরির কাটার হিসেব দেখলে মাত্র ৫৫ মিনিটের মধ্যে অবশিষ্ট সাতটি উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ২৭৪ রান তাড়া করতে নেমে অলআউট হয়ে যায় মাত্র ৫৩ রানে। স্বাগতিকদের জয় ২২০ রানের বড় ব্যবধানে।
দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে পরপর উইকেট হারানোর পর চতুর্থ দিন শেষেই খাদের কিনারায় ছিল বাংলাদেশ। পরাজয়ও ধরা হচ্ছিল সময়ের ব্যাপার হিসেবে। কিন্তু তবুও টিম ম্যানেজমেন্টের তরফে বারবার বলা হচ্ছিল, শেষ দিনে জয়ের জন্যই লড়বে বাংলাদেশ।
কিন্তু মুশফিক-লিটন কিংবা শান্তরা শেষ লড়াইটাও লড়তে পারলো না। হার্মার এবং মাহারেজদের বোলিং তোপে মাত্র ৫৩ রান করতে পারল ১০ উইকেটে। একটা মজার তথ্য হচ্ছে, বাংলাদেশের সবকটি উইকেটই তুলে নিয়েছেন আফ্রিকান স্পিনাররা। কেশভ মাহারাজ একাই তুলে নিয়েছেন ৭ উইকেট। এছাড়া শিমন হার্মার শিকার করেছেন বাকি তিনটি। অথচ এমন টেস্টে সুযোগ দেওয়া হয়নি বাংলাদেশের টেস্ট স্পেশালিস্ট স্পিনার তাইজুল ইসলামকে।