হোম আন্তর্জাতিক ব্রেইন কম্পিউটার ইন্টারফেসের রোডম্যাপ প্রকাশ

ব্রেইন কম্পিউটার ইন্টারফেসের রোডম্যাপ প্রকাশ

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 55 ভিউজ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
চীনের প্রযুক্তিগত উন্নয়ন কেবল বৈদ্যুতিক গাড়ি, যন্ত্রপাতি কিংবা রোবটের মাঝেই সীমাবদ্ধ নেই। মানুষের মস্তিষ্ক সংক্রান্ত প্রযুক্তি বা বিসিআইতেও এখন চীন বিশ্বে নেতৃত্ব দিচ্ছে। মেশিনের মধ্যে মস্তিষ্কের তথ্য আদান-প্রদানের এই প্রযুক্তি এখন চীনের উচ্চপ্রযুক্তি শিল্প উন্নয়নের কৌশলগত অংশ। আর তাই ২০২৭ সালের মধ্যে বিসিআই শিল্পে বড় ধরনের সাফল্য অর্জনের রোডম্যাপও প্রকাশ করেছে দেশটি।

বেইজিংয়ের থিয়ানথান হাসপাতাল চলতি বছর প্রথমবারের মতো বিসিআই ক্লিনিক্যাল অ্যান্ড ট্রান্সলেশনাল ওয়ার্ড চালু হয়েছে। সেখানে বিসিআই প্রযুক্তিতে ৫০ বছর বয়সী এক রোগীর সফল চিকিৎসা সম্পন্ন হয়েছে, যিনি দুই বছর আগে ব্রেইন হেমারেজে আক্রান্ত হয়ে শরীরের বাম পাশ প্যারালাইজড হয়ে পড়েছিলেন।

ব্রেইন কম্পিউটার ইন্টারফেসের রোডম্যাপ প্রকাশ

গত জুনে তার মস্তিষ্কে বেইনাও-১ নামের একটি নমনীয় ইলেকট্রোড প্রতিস্থাপন করা হয়। চীনের ইনস্টিটিউট ফর ব্রেইন রিসার্চ এবং নিউসাইবার নিউরোটেক যৌথভাবে তৈরি সিস্টেমটি একটি সেমি-ইনভেসিভ, সম্পূর্ণ ইমপ্ল্যান্টেবল ওয়্যারলেস বিসিআই। এর মাধ্যমে রিয়েল-টাইমে নিউরাল সিগন্যাল মস্তিষ্ক থেকে বাইরের ডিকোডিং ডিভাইসে পাঠানো সম্ভব হয়।

থিয়ানথান হাসপাতালের নিউরোসার্জিক্যাল সেন্টারের নির্বাহী উপপরিচালক ছাও ইয়ং জানালেন, ‘অস্ত্রোপচারের আগে কার্যকরী এমআরআই ব্যবহার করে আমরা লক্ষ্যস্থান নির্ধারণ করি। এরপর মোটর কর্টেক্সের ওপরে নমনীয় ইলেকট্রোড স্থাপন করা হয় এবং সার্জারির সময় ক্রমাগত যাচাই করা হয় যে আমরা স্পষ্ট স্নায়বিক সংকেত পাচ্ছি কি না। কেবল তখনই আমরা নিশ্চিত হতে পারি যে অস্ত্রোপচারের পর সংকেত গ্রহণ, ডিকোডিং এবং অঙ্গপ্রত্যঙ্গের মোটর নিয়ন্ত্রণ সফল হবে।’

ব্রেইন কম্পিউটার ইন্টারফেসের রোডম্যাপ প্রকাশ

অস্ত্রোপচারের পর বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রক্রিয়ায় রোগীর নিউরাল সিগন্যাল অ্যালগরিদমের মাধ্যমে বাইরের ডিভাইস নিয়ন্ত্রণে ব্যবহার করা হয়, যা পুনর্বাসনে সহায়তা করে। কয়েক মাসের মধ্যেই রোগীর হাতে উল্লেখযোগ্য নড়াচড়া ফিরে আসে।

চাইনিজ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস-এর গবেষক ও নিউরোসার্জন চাও চিচং জানালেন, ‘বিসিআই কোনও সাধারণ ক্লিনিক্যাল কাজ নয়, কারণ এতে কম্পিউটিং, বায়োসায়েন্স ও ক্লিনিক্যাল প্র্যাকটিস—সবই জড়িত। আমরা চায়না ইনস্টিটিউট ফর ব্রেইন রিসার্চ এবং বিভিন্ন চিপ কোম্পানির সঙ্গে কাজ করি। এই বিশেষ ওয়ার্ড প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বেইজিং থিয়ানথান হাসপাতাল এমন একটি প্ল্যাটফর্ম গড়ে তুলেছে, যা প্রযুক্তি, কম্পিউটিং, ইলেক্ট্রোফিজিওলজি ও ক্লিনিক্যাল ইমেজিং–এর দক্ষতাকে একত্রিত করেছে। এতে করে বিসিআই ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের সবকিছু বলা যায় একটি চেইনে সংযুক্ত হয়েছে।’

চীনের বিসিআই প্রতিনিয়তই দিচ্ছে নতুন কিছু না কিছু। সন্দেহ নেই যে, চীনের এই প্রযুক্তির হাত ধরেই বিশ্বের স্বাস্থ্য খাতে ঘটতে চলেছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন