হোম জাতীয় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আদালত কর্মচারীদের কর্মবিরতি

জাতীয় ডেস্ক :

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি চলছে। এতে আদালতে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বন্ধ রয়েছে বিচারিক কার্যক্রম। এদিকে, দূর-দূরান্ত থেকে আসা বিচারপ্রার্থীরা ভোগান্তিতে পড়েছেন।

আইনজীবীদের বিরুদ্ধে অসৌজন্যমূলক আচরণ, বিচারিক কাজে হস্তক্ষেপ, কর্মচারীদের মারধর, মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়াসহ নানা অভিযোগ এনে বুধবার (৪ জানুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতিতে যান বিচার বিভাগীয় অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। একইসঙ্গে আদালত প্রাঙ্গণে মানববন্ধন কর্মসূচিও পালন করেন তারা।

সম্প্রতি আইনজীবীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক (জেলা জজ) মোহাম্মদ ফারুক। এমন অভিযোগ এনে গত ১ জানুয়ারি থেকে আইনজীবীরা ওই বিচারকের আদালত বর্জন করে আসছেন।

অন্যদিকে, বিচারকদের সঙ্গে আইনজীবীদের অসৌজন্যমূলক আচরণ, বিচারিক কাজে হস্তক্ষেপ, কর্মচারীদের মারধর, মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়াসহ নানা অভিযোগ আনেন আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারী। তারা জানান, আইনজীবীদের ধৃষ্টতাপূর্ণ আচরণের বিষয়গুলো সুস্পষ্টভাবে সমাধান না হওয়া পর্যন্ত তাদের এ কর্মবিরতি চলবে।

কর্মবিরতি চলাকালে বিচার বিভাগের কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনের সহ সাধারণ সম্পাদক কাজী উজ্জল ইসলাম বলেন, ‘জেলা দায়রা জজ আদালতে কিছু অসাধু আইনজীবী নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনালের বিচারকের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছেন। পাশাপাশি আদালতে কর্মরত কর্মচারীদের তারা মারধর করেছেন। নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা চারশত কর্মচারী একযোগে কর্মবিরতি ও মানববন্ধন করেছি। যতদিন আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করতে পারি, ততদিন আমরা কর্মসূচি চালিয়ে যাব।

ভুক্তভোগী নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনাল-১-এর আপিল সহকারী মেহেদি হাসান অভিযোগ করে বলেন, ‘নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনাল-১ আদালতের বিচারকে সঙ্গে আইনজীবীরা হট্টগোল করছিলেন। তখন ঘটনাটি ভিডিও করার জন্য আমি মোবাইল বের করেছিলাম। এ সময় কিছু আইনজীবী আমাকে টেনে-হিচড়ে মোবাইল ফোনটি কেড়ে নেন। শুধু তাই নয়, তারা আমাকে মারধর করেন।’

অভিযোগের বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি তানভীর ইসলাম ভূঁইয়া জানান, তাদের বিরুদ্ধে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আনিত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। আদালত বন্ধ করে তারা যে আন্দোলন করছে সেটা সম্পূর্ণ বেআইনি।

জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মফিজুর রহমান বাবুল বলেন, ঘুষ বাণিজ্য ছাড়া আদালতের কোনো কাজ হয় না। দ্রুত সময়ের মধ্যে যদি পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হয় তাহলে আমরা জেলা জজ আদালতের বিচারকের কোর্ট বর্জন করতে বাধ্য হব।

এদিকে, সকাল থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জজ আদালত এবং চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের কার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ থাকায় দূর-দূরান্ত থেকে বিচার প্রার্থীরা এসে ভোগান্তিতে পড়েন। অনেকে আদালতে এসে ফিরে গেছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক বিচারপ্রার্থী জানান, তিনি নবীনগর থেকে এসেছেন। একটি মামলায় আজ শুনানির দিন ছিল। শুনানি তো হয়ইনি, পরবর্তী দিন কবে তাও জানার উপায় নেই।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন