হোম জাতীয় বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে নির্মাণাধীন বেড়িবাঁধে অনিয়মের অভিযোগ

জাতীয় ডেস্ক :

বরগুনায় বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে নির্মাণাধীন বেড়িবাঁধে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ‘মাটির পরিবর্তে বালু দিয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে বেড়িবাঁধ’। এদিকে এ অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় বেড়িবাঁধ নির্মাণ বন্ধ করে দিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপকূলীয় বেড়িবাঁধ নির্মাণ প্রকল্প-১ এর আওতায় বরগুনার পাথরঘাটায় ৩৪ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণ করছে চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চংকিং ইন্টারন্যাশনাল কনস্ট্রাকশন করপোরেশন। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে নির্মাণাধীন এ বেড়িবাঁধে ব্যয় ধরা হয়েছে ১২৮.৯ কোটি টাকা।

কিন্তু পাথরঘাটার চরদুয়ানি এলাকায় বলেশ্বর নদীর তীরের বেড়িবাঁধ মাটির পরিবর্তে বালু দিয়ে নির্মাণের অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। এতে বাঁধের স্থায়িত্ব কম হওয়ার পাশাপাশি প্রকৃত উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন হবে না বলে দাবি স্থানীয়দের।

স্থানীয় বাসিন্দা লালমিয়া বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমাদের টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি ছিল। আমাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে পাথরঘাটায় সুউচ্চ টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ শুরু হয়। কিন্তু বলেশ্বর নদীর তীরে নির্মাণাধীন বেড়িবাঁধ মাটির পরিবর্তে বালু দিয়ে নির্মাণ করেছে। এতে এই বেড়িবাঁধ সামান্য জোয়ারের পানিতে বিলিন হয়ে যাওয়ার শঙ্কায় রয়েছি আমরা।‘

আবদুল হামিদ নামের আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘শক্ত মাটি দিয়ে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করার কথা। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বালু দিয়ে বেড়িবাঁধ নির্মাণ শুরু করে। আমরা এর প্রতিবাদ করলে আমাদের নানা ধরনের হুমকি দেয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যেভাবে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করেছে এ বেড়িবাঁধ আমাদের কোনো কাজে আসবে না। এতে একদিকে যেমন কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে হবে অন্যদিকে এ বেড়িবাঁধ আমাদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়াবে।‘

বাবুল নামে আরেকজন জানান, ‘যেখানে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হবে, প্রথমে সেখান থেকে ১৫ থেকে ২০ ফুট গর্ত করে মাটি তুলে সেই গর্ত বালু দিয়ে ভরাট করা হয়েছে। এরপর সামান্য মাটি দিয়ে সেই বালু ঢেকে দিয়েছে বেড়িবাঁধ নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান। চারটি ড্রেজার দিয়ে বালু ফেলা হয়েছে। এর প্রতিবাদ করতে গিয়ে আমরা হুমকির সম্মুখীন হয়েছি। বালুর বেড়িবাঁধ আমরা চাই না। আমরা শক্ত মাটি দিয়ে নির্মাণ করা বেড়িবাঁধ চাই।’

এ বিষয়ে বরগুনার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নুরুল ইসলাম, বালু দিয়ে নির্মাণ করা বেড়িবাঁধ মোটেই টেকসই হয় না। বেড়িবাঁধ নির্মাণ করতে হয় শক্ত মাটি দিয়ে।

তিনি আরও বলেন, পাথরঘাটায় যে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে তা আমাদের দফতর করছে না। তবে শুনেছি বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে উপকূলীয় বেড়িবাঁধ নির্মাণ প্রকল্প-১ এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হারুন-অর-রশিদ বলেন, বেড়িবাঁধ নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ শুনে আমরা কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। যেখানে বেড়িবাঁধ নির্মাণে অনিয়ম করা হয়েছে, সেই কাজ যদি তারা সংশোধন না করেন তাহলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন