আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
বিদ্রোহীদের মাত্র ১২ দিনের অগ্রাভিযানের মুখে বাশার আল আসাদের অবিশ্বাস্য পরাজয় বিস্মিত করেছে আন্তর্জাতিক সব মহলকে। সরকারবিরোধী বিদ্রোহীরা ৮ ডিসেম্বর (রবিবার) রাজধানী দামেস্কের নিয়ন্ত্রণ নিলে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে রাশিয়ায় উড়াল দেন। তার দেশত্যাগের পর দেশটির প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মাদ আল-জালালি জনগণের নির্বাচিত নেতৃত্বকে সহযোগিতা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
সিরিয়ায় আসাদ পরিবারের শাসন শুরু হয়েছিল সত্তরের দশকের শুরু থেকে। বাবার পর গত ২৪ বছর ধরে সিরিয়া শাসন করছিলেন আসাদ। আর দীর্ঘদিনের এই শাসনের পতন ঘটানোর পেছনে ছিলেন হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) নেতা আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি।
আসাদের পতনের পর গতকাল সিরিয়ার কিছু কিছু জায়গায় উদযাপন শুরু হয়। তুরস্ক, জর্ডান, লেবাননসহ বিভিন্ন দেশে থাকা বিদ্রোহী পক্ষ উল্লাস করছেন।
হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) নেতা আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের একজন বিশিষ্ট এবং বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব। মার্কিন সরকার একসময় তার মাথার জন্য ১০ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছিল। তবে সিরিয়া দখলের পর এখন জোলানির বিরুদ্ধে ১০ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার ঘোষণার ‘যৌক্তিকতা’ নিয়ে আলোচনা করেছেন মার্কিন কর্মকর্তারা।
মিডল ইস্ট আই বলছে, ২০১৩ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র জোলানিকে ‘সন্ত্রাসী’ হিসাবে মনোনীত করে। বিশেষ করে তার মিলিশিয়া দলকে ট্রাম্প প্রশাসন ২০১৮ সালে নিষিদ্ধ করেছিল এবং তার মাথার জন্য ১০ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। বছরের পর বছর ধরে আল-জোলানি তাহরির আল-শাম ‘নিষিদ্ধ তালিকা’ থেকে মুক্ত হতে তদবির করেছিল। তবে আবেদনগুলো বিবেচনার বাইরে পড়ে ছিল।
কিন্তু বিদ্রোহীরা আসাদের লৌহ-শাসনের অবসান দেখানোর পর ওয়াশিংটনকে ‘প্রাক্তন আল-কায়েদার’ সঙ্গে কীভাবে যুক্ত হবে, তা পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা বলেছেন, এ সংশ্লিষ্ট আলোচনা বাইডেন প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মধ্যে বিভক্ত সৃষ্টি করেছে।
৪২ বছর বয়সী জোলানি রবিবার দামেস্কের ঐতিহাসিক উমাইয়া মসজিদে বিজয় ভাষণ দেন। তিনি আসাদের মিত্র ইরান ও হিজবুল্লাহর প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, আসাদের শাসনামলে সিরিয়া ছিল ইরানের উচ্চাকাঙ্ক্ষার জায়গা। এখানে সাম্প্রদায়িকতা ছড়িয়ে পড়েছিল।