রাজনীতি ডেস্ক:
গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি হামলা নিয়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বিক্ষোভে বাধা দেয়া হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেছেন, আপনারা যা চান, তাই লিখতে পারেন, বলতে পারেন। কিন্তু ইউরোপে বিক্ষোভ করায় সেখানে লোকজনকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
রোববার (২২ অক্টোবর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নতুন ভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেলজিয়াম সফর উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৪ থেকে ২৬ অক্টোবর বেলজিয়াম সফর করবেন বলে জানান তিনি।
অর্থনীতির কঠিন সময়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে কোনো বাজেট সহায়তা চাওয়া হবে কি না- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, এরইমধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছরপূর্তি উদযাপন করেছি। তারা বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়ে এসেছেন। তারা আমাদের উন্নয়ন অংশীদার। ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে শুরু করে তাদের সঙ্গে আমাদের বহুপাক্ষিক সম্পর্ক। সম্প্রতি দেখেছেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টে ৭০০ এর বেশি সদস্য আছে। তাদের ছয় জন একটা বক্তব্য দিয়েছিল। পরবর্তীতে বাকিরা বলেছেন ভুল তথ্যের জন্য এটা বাদ দেয়া উচিত।
ইউরোপীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে মানবাধিকার নিয়ে আলোচনা করা হবে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাদের সঙ্গে মানবাধিকার, গণতন্ত্র ও বাকস্বাধীনতা নিয়ে আমরা অব্যাহত আলোচনা করছি। আমাদের বাকস্বাধীনতা, বিক্ষোভ করার স্বাধীনতা ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে সবাই অনেক সোচ্চার। আপনারা যা চান, তাই লিখতে পারেন, বলতে পারেন। কিন্তু ইউরোপের বিভিন্ন দেশে গাজায় ইসরাইলি হামলা নিয়ে বিক্ষোভ করতেও বাধা দেয়া হয়। গ্রেফতার করা হয়। আমরা তো সেই সব ঝামেলায় যাই না। আপনি যা করার করুন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের রাস্তাঘাট, বিপণিবিতন, পানশালা কিংবা রেস্তোরাঁয় কাউকে গুলি করে মারি না। আমরা সবার জন্য গণতন্ত্র রক্ষা করি। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের সঙ্গে তুলনা করলে এসব ক্ষেত্রে আমাদের অবস্থান অনেক উন্নত।
কঠিন সময়ে প্রধানমন্ত্রী দেশের বাইরে যাচ্ছেন, এই কঠিন সময় বলতে আপনি কী বুঝিয়েছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে আব্দুল মোমেন বলেন, সামনে নির্বাচন। আমাদের এখন কোনো সময় নেই দেশের বাইরে যাওয়ার। অর্থাৎ আমরা নিজ নিজ এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছি। সময় পেলেই এলাকায় চলে যাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও এলাকায় নিয়ে যেতে বিভিন্নভাবে তাগাদা করছি। এ সময়ে তার বাইরে যাওয়াটা…। আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ভোটাররা। তাদের কাছে আমাদের জবাবদিহিতা আছে। সে জন্য আমরা এলাকায় যাচ্ছি, সময় পেলেই।
এর আগে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম জানিয়েছিলেন, অর্থ দিয়ে বিদেশ থেকে প্রতিনিধি দল নিয়ে আসার মতো অবস্থায় আমরা নেই। কিন্তু আপনারা ব্রাসেলস যাচ্ছেন, সেখানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অনেকের সঙ্গে দেখা হবে। অর্থ ছাড়া বাংলাদেশে পর্যবেক্ষক পাঠাবে কি না ইউরোপ- জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন বলেন, তারা আগে বড় দল পাঠানোর চিন্তা করেছিলেন। কিন্তু তাদের বাজেটের সমস্যা। সব দেশে এখন বাজেটে সমস্যা। যে কারণে সাত জনের একটি প্রতিনিধি দল তারা পাঠাবেন। তাদের জন্য আমাদের কোনো পয়সা লাগবে না। তবে তারা এখানে আসার পরে বাকি যেসব সাহায্য সহযোগিতা লাগে, সেটা আমরা দেব। তারা এখানে বিভিন্ন জেলায় যাবে, সেটার ব্যবস্থা আমরা করবো। তবে বিদেশ থেকে টাকা দিয়ে প্রতিনিধি আমরা আনবো না।