জাতীয় ডেস্ক :
দ্বিতীয় ধাপে পিরোজপুর সদর উপজেলার শংকরপাশা ও দুর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ১১ নভেম্বর। এ নিবার্চন ঘিরে দুই ইউপিতে আ.লীগ মনোনীত প্রার্থীদের নামে বিএনপির নেতাদের সই জালিয়াতি করে ফেসবুকে অপপ্রচারের অভিযোগ উঠেছে। ব্যবহৃত হয়েছে বিএনপির ভুয়া প্যাড!
জেলা বিএনপি নেতাদের দাবি, বিএনপির নেতাদের সই জালিয়াতি করে ভুয়া প্যাড ব্যবহার করা হয়েছে। আর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতির দাবি, একটি কুচক্রী মহল নৌকা মার্কাকে ভয় পেয়ে তার বিরুদ্ধে জালিয়াতির মাধ্যমে নানা মিথ্যা তথ্য প্রচার করছে।
জেলা বিএনপির সভাপতি গাজী নুরুজ্জামান বাবুল দাবি করেন, এই দুই ইউনিয়নের নৌকা মার্কার প্রার্থীদের নামে বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত থাকার যে তথ্য প্রচার করা হচ্ছে, তা বিএনপি নেতাদের সই জালিয়াতি করে ভুয়া প্যাড ব্যবহার করা হয়েছে।
এদিকে এ মিথ্যাচারের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন পিরোজপুর সদর উপজেলার শংকরপাশা ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা মার্কার প্রার্থী তোফাজ্জেল হোসেন মল্লিক স্বপন ও দুগার্পুর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা মার্কার প্রার্থী রাম প্রসাদ রায়।
পিরোজপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও শংকরপাশা ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী তোফাজ্জেল হোসেন মল্লিক স্বপন জানান, ১৯৮৫ সাল থেকে জেলা আওয়ামীলীগের বর্তমান সভাপতি আলহাজ এ কে এম এ আউয়ালের নেতৃত্বে মাঠ পর্যায়ে আওয়ামী লীগের কর্মী হিসেবে কাজ করে আসছেন তিনি।
২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ করার জন্য তার বিরুদ্ধে জন নিরাপত্তার আইনে তিনটি মামলার আসামি করা হয়। যা আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পরে স্বারাষ্ট্রমন্ত্রাণালয় রাজনৈতিক মামলার হিসেবে অব্যাহতি দেওয়া হয়। বর্তমানে তিনি পিরোজপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে আছেন। এর আগেও তিনি পিরোজপুর সদর উপজেলার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি ২০০৩ সালের শংকারপাশা ইউনিয়ন পরিষদে প্রথমে তিনি আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়। এরপরে ২০১১ সালেও আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী এবং ২০১৬ সালে আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকা মার্কার প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। বর্তমানে ২০২১ এই নির্বাচনেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নৌকা মার্কা দেন। কিন্তু একটি কুচক্রী মহল নৌকা মার্কাকে ভয় পেয়ে তার বিরুদ্ধে জালিয়াতির মাধ্যমে নানা মিথ্যা তথ্য প্রচার করছে।
তোফাজ্জেল হোসেন মল্লিক স্বপন অভিযোগ করে জানান, তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে তার রাজনৈতিক ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ণ করাসহ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিব্রত করার জন্যই বিএনপির জেলা সভাপতির স্বাক্ষর জালিয়াতি করে এবং ভুয়া প্যাড ব্যবহার করে তার বিরুদ্ধে ফেসবুকসহ নানা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা প্রচারণা করছে। তিনি কখনোই বিএনপির কোন রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন না।
এদিকে দুর্গাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী রাম প্রসাদ রায় জানান, ১৯৯৬ সালের আওয়ামী লীগের নিবার্চনে নৌকা মার্কার পক্ষে কাজ করার জন্য তৎকালীন বিএনপির নেতা-কর্মীদের হামলায় আহত হন তিনি। তিনিসহ তার পরিবারের সকল সদস্য বঙ্গবন্ধুর চেতনায় বিশ্বাসী হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বকে বিশ্বাস করেন।
তিনি ১৯৯৬ সাল থেকে ইউনিয়ন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ এবং বর্তমানে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্বরত আছি। কিন্তু একটি মহল আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার জন্য বিএনপির নেতার স্বাক্ষর জালিয়াতি করে এবং ভুয়া প্যাড ব্যবহার করে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা গুজব ছড়াচ্ছে।
এ বিষয়ে পিরোজপুর সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন মল্লিক নাসির জানান, তিনি আওয়ামী লীগ মনোনীত কোন প্রার্থীর নামে কোনো প্রত্যায়নে সই করেনি।
পিরোজপুর জেলা বিএনপির সভাপতি গাজী নুরুজ্জামান বাবুল জানান, পিরোজপুর জেলা বিএনপির ভুয়া প্যাড ও তার স্বাক্ষর জালিয়াতি করে একটি কুচক্রী মহল মিথ্যা প্রচারণা করেছে। তিনি এই প্রত্যায়নের বিষয়ে কোনো কিছুই জানেন না।
এছাড়া তিনি আরও জানান, তোফাজ্জেল হোসেন মল্লিক স্বপন কখনই বিএনপির কোনো রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন না। যারা এই জালিয়াতি করে এ মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে তিনি আইনগত ব্যবস্থা নেবেন বলেও জানান।