হোম রাজনীতি বিএনপির চেয়ে জামায়াতের আয় দ্বিগুণ, ব্যয় ৫ গুণ

বিএনপির চেয়ে জামায়াতের আয় দ্বিগুণ, ব্যয় ৫ গুণ

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 58 ভিউজ

নিউজ ডেস্ক:
সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনে (ইসি) ২০২৪ সালের অডিট রিপোর্ট (আয়-ব্যয়ের হিসাব) জমা দিয়েছে ২৮টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল। এর মধ্যে বিএনপি, জাতীয় পার্টির মতো বড় দলও রয়েছে। সব রাজনৈতিক দলকে ছাপিয়ে আয়-ব্যয়ের হিসাবে সবার উপরে রয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। এতে দেখা যায়, বিএনপির চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ আয় করেছে দলটি। ব্যয় করেছে বিএনপির চেয়ে প্রায় পাঁচ গুণ বেশি।

অডিট রিপোর্টের তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে জামায়াত ইসলামীর আয় ২৮ কোটি ৯৭ লাখ ২৯৯ টাকা। আর দলটি ব্যয় দেখিয়েছে ২৩ কোটি ৭৩ লাখ ৩৮ হাজার ১৭৭ টাকা।

এর আগে, গত ২৭ জুলাই ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে দলীয় আয়-ব্যয়ের হিসাব নির্বাচন কমিশনে (ইসি) জমা দেয় বিএনপি। সেখানে তারা জানায়, ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিএনপির মোট আয় ১৫ কোটি ৬৫ লাখ ৯৪ হাজার ৮৪২ টাকা। আর দলটির ব্যয় ৪ কোটি ৮০ লাখ ৪ হাজার ৮২৩ টাকা। ফলে দলের হাতে বর্তমানে উদ্বৃত্ত রয়েছে ১০ কোটি ৮৫ লাখ ৯০ হাজার ১৯ টাকা।

২৭ জুলাই হিসাব জমা দেওয়ার পর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী জানান, বিএনপির আয়ের প্রধান উৎস ছিল সদস্যদের মাসিক চাঁদা, বই ও পুস্তক বিক্রি, ব্যাংক সুদ এবং এককালীন অনুদান। অন্যদিকে ব্যয়ের বড় অংশ গেছে কর্মসূচি বাস্তবায়ন, লিফলেট-পোস্টার মুদ্রণ, ব্যক্তিগত ও দুর্যোগকালীন সহায়তার পেছনে।

নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার স্বাক্ষরিত হিসাব বিবরণী থেকে জানা গেছে, দলটির কর্মী ও সদস্যদের চাঁদা থেকে আয় করেছে ১৬ কোটি ৫৬ লাখ ৪২ হাজার ১৬২ টাকা। কার্যনির্বাহী কমিটি অথবা উপদেষ্টা পরিষদের চাঁদা অথবা অন্যান্য চাঁদা ৩৭ লাখ ৮৭ হাজার ১৪৯ টাকা। বিভিন্ন ব্যক্তি অথবা সংস্থার কাছ থেকে অনুদান পেয়েছে ১১ কোটি ৮৬ লাখ ৩৮ হাজার ৬১৯ টাকা। দলের পত্রিকা, সাময়িকী, বইপুস্তক বিক্রয় থেকে আয় ৯ লাখ ১১ হাজার ২৯০ টাকা। অন্যান্য চাঁদা থেকে দলটি আয় করেছে ৭ লাখ ২১ হাজার ৭৯ টাকা ও আগের বছর স্থিতি ছিল ১০ কোটি ৪৯ লাখ ৪৫ হাজার ১৯১ টাকা। মোট আয় ২৮ কোটি ৯৭ লাখ ২৯৯ টাকা।

জামায়াতে ইসলামীর কর্মীদের বেতন-ভাতা ও বোনাসে ব্যয় হয়েছে ৬ কোটি ৫৭ লাখ ৬৭ হাজার ৮৭৩ টাকা।

আবাসন ও প্রশাসনিক বাবদ ২ কোটি ৬৮ লাখ ৭ হাজার ৪৯৫ টাকা ব্যয় হয়েছে। বিদ্যুৎ, ওয়াসা, গ্যাসসহ বিভিন্ন ইউটিলিটি বিল পরিশোধ করেছে ২ লাখ ৪৬ হাজার ১৮ টাকা। ডাক, টেলিফোন, ইন্টারনেট, কুরিয়ার সার্ভিস, পত্রিকা বাবদ ব্যয় হয়েছে ৮ লাখ ৪৪ হাজার ৫২৬ টাকা। আপ্যায়নে ব্যয় হয়েছে ১০ লাখ ৯৫ হাজার ৯৬২ টাকা।

এ ছাড়া প্রচারণা ও পরিবহনে ব্যয় হয়েছে ২ কোটি ৭০ লাখ ৬ হাজার ৫৬৩ টাকা। যাতায়াত বাবদ খরচ হয়েছে ১ কোটি ২৭ লাখ ১ হাজার ৭৭৬ টাকা। জনসভা, পথসভা, ঘরোয়া বৈঠকে ব্যয় হয়েছে ১৯ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৫ টাকা। প্রার্থীদের অনুদান দেওয়া হয়েছে ১১ কোটি ৫ লাখ ১৫ হাজার ৪২০ টাকা। ধর্মীয় বিশেষ অনুষ্ঠান বাবদ ব্যয় ৩২ লাখ ৭৬ হাজার ৮৫০ টাকা। অন্যান্য ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ১২ লাখ ৫৬ হাজার ৯৮৯ টাকা। মোট ব্যয় হয়েছে ২৩ কোটি ৭৩ লাখ ৩৮ হাজার ১৭৭ টাকা।

হিসাব বিবরণী থেকে জানা গেছে, জামায়াতের কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নেই। দীর্ঘ ১ যুগ পর আয়-ব্যয়ের হিসাব দিল দলটি। এর আগে ২০১৩ সালে নিবন্ধন বাতিল হওয়ার পূর্বে সর্বশেষ হিসাব জমা দিয়েছিল দলটি। ‎

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও) নিবন্ধিত দলগুলোর প্রতি বছর জুলাইয়ের মধ্যে আগের পঞ্জিকা বছরের আর্থিক লেনদেনের প্রতিবেদন দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন