হোম অন্যান্যশিক্ষা বাসায় ডেকে যৌন নিপীড়ন করেন অধ্যাপক নাদির, অভিযোগ ছাত্রীর

বাসায় ডেকে যৌন নিপীড়ন করেন অধ্যাপক নাদির, অভিযোগ ছাত্রীর

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 140 ভিউজ

শিক্ষা ডেস্ক:

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে একই বিভাগের এক ছাত্রী যৌন নিপীড়নের অভিযোগ তুলেছেন। শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর বিষয়টি লিখিতভাবে জানান ওই শিক্ষার্থী।

যৌন হয়রানির অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মাকুসুদুর রহমান বলেন, একজন ছাত্রীর লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগটি উপাচার্য বরাবর রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) দাখিল করা হবে।

এ ধরনের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কেমন ব্যবস্থা নেয়া হয় জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, সাধারণত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর অভিযোগ গেলে তিনি নিজ ক্ষমতাবলে পদক্ষেপ নিতে পারেন।

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে উপাচার্য তদন্ত কমিটি গঠন করতে পারেন জানিয়ে এই শিক্ষক বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া সাপেক্ষেও ব্যবস্থা নেয়া হতে পারে।

নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে ছাত্রীর যে অভিযোগ

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর দেয়া লিখিত অভিযোগে ভুক্তভোগী ছাত্রী বলেছেন, বিভাগের কোর্স নেয়ার মাধ্যমে শিক্ষক নাদির জুনাইদ তার সঙ্গে আলাপ শুরু করেন। এক পর্যায়ে তিনি প্রায়ই অরুচিকর কথাবার্তা বলতেন। রাতে কল করে নানা যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ কথাও বলতেন। শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের জন্যও প্রস্তাব দিয়েছেন।

অধ্যাপক নাদির জন্মদিনের কথা বলে বাসায় নিয়ে ছাদে তুলে শারীরিক নিপীড়ন করেন বলেও অভিযোগ করেছেন ওই ছাত্রী।

লিখিত অভিযোগে ছাত্রী উল্লেখ করেন, ‌“উনার বাসায় গিয়ে খাওয়া-দাওয়া করি। এক পর্যায়ে উনি ছাদে নিয়ে যান। এ সময় সিঁড়ির কাছে তিনি আমার উচ্চতা পরিমাপের কথা বলে কাছাকাছি হওয়ার চেষ্টা করেন। এক সময় আমার কাছে এসে বলেন, এটাকেই বলে ‘জিরো ফিট ডিসট্যান্স’। এ সময় আমি প্রচণ্ড অসহায়বোধ করতে থাকি। আমি ফিরে আসার পর উনি আমাকে আবার ফোন দেন। বলেন, ‘(বাসায়) কী ইচ্ছা করছিল জানো, তোমাকে হাগ করে, ইচ্ছেমত যা করার…’। আমি কোনোভাবে বিষয়টি এড়িয়ে যাই।”

লিখিত অভিযোগে তিনি জানান, শিক্ষক নাদির জুনাইদ প্রায়ই বাসায় ডাকতেন। তিনি বিষয়টি নানা চতুরতায় এড়িয়ে যান। তার হয়রানিতে ওই শিক্ষার্থী একপর্যায়ে মানসিক ট্রমায় ভুগতে থাকেন। রাতে ঘুমাতে পারতেন না তিনি। এজন্য ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী প্রায়ই ঘুমের ওষুধ সেবন করতেন। গত বছরের শুরুতে তিনি মানসিক কাউন্সেলিংও করান।

হয়রানির মুখে একসময় কোনোমতে অনার্স শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়ারও সিদ্ধান্ত নেন বলে অভিযোগে জানান ভুক্তভোগী।

অভিয়োগে তিনি বলেন, আমি সাধারণ ছাত্রী, আর তিনি ক্ষমতাধর- এই ভেবে দেড় বছর অত্যাচার সহ্য করেছি। তিনি শরীর নিয়ে স্পর্শকাতর মন্তব্য করতেন। শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের জন্য নানাভাবে প্রলোভন দেখাতেন। বিয়ে করে সম্পত্তির উত্তরাধিকার বানানো, আর্থিক সচ্ছ্বলতার প্রলোভনও দিতেন। তার কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় আমি মেয়ে কি না এমন প্রশ্নও তুলেছেন।

এদিকে সম্প্রতি অধ্যাপক নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কম নম্বর দেয়ার অভিযোগ তুলে উপাচার্যের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের একটি ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ, ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে পরীক্ষার ফল খারাপ করিয়ে দিয়েছেন শিক্ষক নাদির।

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে সময় সংবাদের পক্ষ থেকে একাধিকবার অধ্যাপক নাদিরের ফোনে কল করা হয়। তবে তিনি কল রিসিভ করেননি। একপর্যায়ে এসএমএস করেও তার কোনো সাড়া মেলেনি।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন