অনলাইন ডেস্ক:
বাগেরহাটে র্যাব পরিচয়ে ইজিবাইক ছিনতাই চক্রের ৯ সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি প্রাইভেট কার, মোটরসাইকেল, চেতনানাশক ওষুধ, মোটরসাইকেলের ভুয়া ব্লু বুক, নগদ টাকা ও দুটি ইজিবাইক উদ্ধার করা হয়েছে।
আইনগত প্রক্রিয়া শেষে বুধবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেলে আটককৃদের আদালতে সোপর্দ করেছে পুলিশ।
এর আগে ঢাকা, গোপালগঞ্জ ও পটুয়াখালীসহ বিভিন্ন জেলা থেকে এই ছিনতাইকারীদের আটক করেন পিবিআই, বাগেরহাটের সদস্যরা। বুধবার দুপুরে পিবিআই কার্যালয়ে এক প্রেসব্রিংয়ে পিবিআই, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আবদুর রহমান এসব তথ্য জানান।
আটক ব্যক্তিরা হলেন, মো. আ. কাদের, মো. বসির উদ্দিন ওরফে সাগর, মো. মহিউদ্দিন, ডালিম, মো. ইমরান মোল্লা ওরফে ইমন, মো. সাইফুল ইসলাম ওরফে চান মিয়া সিকদার, বাচ্চু, মো. আমির ফকির ও রসুল আমিন এদের বাড়ি গোপালগঞ্জ, নারায়নগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকা।
পুলিশ জানায়, গেল ৭ ডিসেম্বর পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর বাসস্ট্যান্ডে যাত্রীর জন্য অপেক্ষা ছিলেন আলম হাওলাদার নামে এক ইজিবাইক চালক। নিজেকে র্যাব পরিচয় দিয়ে মো. বসির উদ্দিন ওরফে সাগর নামে এক ব্যক্তি আলমের ইজিবাইকে ওঠেন। পিরোজপুর জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরিয়ে আলমকে বাগেরহাটের কচুয়া থানার বাধাল বাজার সংলগ্ন একটি সড়কে প্রবেশ করেন। সেখানে ওত পেতে থাকা বাচ্চু এসে বসির উদ্দিনকে বলে তার মোটরসাইকেল পুলিশ আটক করেছে। তখন বসির বলে কাগজ নিয়ে আয়। বাচ্চু আবার কাগজ আনতে বাড়ি যায়। বাচ্চুর আসতে দেরি হওয়ায় বসির ইজিবাইক চালক আলমকে বলে তুমি বাচ্চুর বাড়ি গিয়ে বল যেন ব্লু বুক নিয়ে আসে। আলম বাচ্চুর বাড়ি গেলে, চোর চক্রর আরেক সদস্য মো. সাইফুল ইসলাম ওরফে চান মিয়া সিকদার ইজিবাইকের তার কেটে লাইন সচল করে ইজিবাইক নিয়ে গোপালগঞ্জে চলে যায়। পরবর্তীতে ইজিবাইকটিকে প্রথমে ৬০ হাজার টাকায় এবং পরে ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন চোর চক্রের সদস্যরা। এ ঘটনায় ইজিবাইক চালক আলম হাওলাদার বাদী মোরেলগঞ্জ থানায় অভিযোগ দেন।
পিবিআই, বাগেরহাটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আবদুর রহমান জানান, ইজিবাইক চালক আলমের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত করে চোর চক্রের ৯ সদস্যকে আটক করা হয়েছে। তারা নিজেদেরকে র্যাব পরিচয় দেওয়ার পাশাপাশি নানা কৌশলে চাকলের সাথে সম্পর্ক ভাল করতেন। জুসের সঙ্গে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে চালক খাইয়ে ইজিবাইক ছিনতাই করতেন। আলমের ইজিবাইক অনুসন্ধান করতে গিয়ে আমরা আরও একটি ইজিবাইক চুরির ঘটনা উদঘাটন করি। জুসের সঙ্গে চেতনানাশক মিশিয়ে চালককে খাওয়ায়ে ওই ইজিবাইকটি ছিনতাই করেছিল চোর চক্রের সদস্যরা।
ইজিবাইক ও ব্যাটারির ভ্যান চালকদের সতর্ক থাকার আহবান জানিয়ে পুলিশ সুপার আরও বলেন, অপরিচিত ও দূরের যাত্রী বহনের ক্ষেত্রে পরিচয় যাচাইয়ের চেষ্টা করতে হবে। যদি সম্ভব হয়, যাত্রীদের ছবি নিকটাত্মীয়দের ফোনে পাঠিয়ে রাখার অনুরোধ করেন তিনি। অপ্রাপ্ত বয়স্ক ও শিশুদের কাছে ভ্যান ও ইজিবাইক না দেয়ারও অনুরোধ করেন তিনি।