হোম জাতীয় বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যে বিশ্বাসের ঘাটতি তৈরি হয়েছে সেটিকে কমানো যাবে;পররাষ্ট্র সচিব

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যে বিশ্বাসের ঘাটতি তৈরি হয়েছে সেটিকে কমানো যাবে;পররাষ্ট্র সচিব

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 12 ভিউজ

অনলাইন ডেস্ক:
৫ আগস্টের পর বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিশ্বাসের ঘাটতি তৈরি হয়েছে এবং সেটিকে কমানো যাবে বলে আশা করে পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিন।

সোমবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের (এফওসি) আলোচনা হয়। বৈঠকে অংশ নেওয়ার জন্য ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিসরি সকালে ঢাকা আসেন। বিকালে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব সংক্ষিপ্ত একটি বিবৃতি দেন এবং তিনি প্রশ্ন নেননি। রাতে সংবাদ সম্মেলন করেন পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিন।

এক প্রশ্নের জবাবে মো. জসীম উদ্দিন বলেন, ‘একধরনের বোঝাপড়ার অভাব আছে। আজকে উনি (ভারতের পররাষ্ট্র সচিব) এখানে আসার পরে আমার প্রত্যাশা বোঝাপড়ার অভাবটা কমবে।’

তিনি বলেন, ‘বিশ্বাসের একটি ঘাটতি আছে। আমি যদি সমস্যাকে স্বীকার না করি, তাহলে সমাধানের দিকে যেতে পারবো না। আমি স্বীকার করে নিচ্ছি, বিশ্বাসের একটি ঘাটতি আছে। ঘাটতি ছিল বলেই আমাদেরকে এই পথটা অতিক্রম করতে হয়েছে। আজকের বৈঠক ওই ঘাটতি মেটানোর জন্য এগিয়ে যাওয়ার একটি পদক্ষেপ। রাজনৈতিক বার্তা হচ্ছে এই পথটি অনুসরণ করে এর পরবর্তী স্তরে যে আলাপ-আলোচনা— সেটি আশা করবো।’

শেখ হাসিনার বিষয়ে আলোচনা

সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে ফেরত আনার বিষয়টি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত এবং সেটি হলে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক ছাড়াও বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে যেমন একটি কূটনৈতিক পত্রের মাধ্যমে ভারতকে জানানো সম্ভব বলে জানান পররাষ্ট্র সচিব।

তিনি বলেন, ‘প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ভারতে অবস্থান করে যেসব বক্তব্য রাখছেন, সেগুলোর প্রতি আমরা তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। আপনারা গতকাল শুনেছেন তিনি একটি বক্তব্য দিয়েছেন এবং সেই বক্তব্যটি সরকার পছন্দ করছে না। তারা (ভারতীয়রা) যে কথাটি বলেছে যে তার উপস্থিতি দুইদেশের সম্পর্কে কোনও প্রভাব ফেলবে না। এ বাস্তবতা সত্ত্বেও তারা বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখতে চায়।’

তিনি বলেন, ‘আমরা বলেছি যে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ভারতে বসে যে বক্তব্য দিচ্ছেন সেটি আমাদের পছন্দ হচ্ছে না। আমরা এটিও বলেছি যে আমরা যে এটি পছন্দ করছি, এটি যেন সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হয়। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব এটির বিষয়ে নোট নিয়েছেন।’

ভারতের মিডিয়াতে অপপ্রচার

ভারতের মিডিয়াতে বাংলাদেশ নিয়ে বিভিন্ন মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর খবর প্রকাশিত হচ্ছে এবং এর প্রতি দৃষ্টি করেছে বাংলাদেশ।

পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘বাংলাদেশে জুলাই-আগস্ট বিপ্লব এবং বিপ্লব-পরবর্তী সংখ্যালঘুদের প্রতি কথিত বৈরী আচরণ নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমে অপপ্রচার, মিথ্যা তথ্য, এবং বিভ্রান্তিকর বয়ান রয়েছে, সে বিষয়ে আমরা ভারত সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপের অনুরোধ জানিয়েছি। সেই সাথে আমরা জোর দিয়ে বলেছি যে, বাংলাদেশে বসবাসরত সব ধর্ম-নির্বিশেষে স্বাধীনভাবে ধর্ম চর্চা করে আসছে এবং এ বিষয়ে কোনও ধরনের বিভ্রান্তি এবং অপপ্রচারের সুযোগ নেই। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার সরেজমিনে বাস্তব অবস্থা দেখার ও পর্যবেক্ষণ করার জন্য বিদেশি সাংবাদিকদেরও আহ্বান জানিয়েছে। সেই সাথে আমরা এও বলেছি যে, এটি আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অন্য দেশের মন্তব্য সমীচীন নয়। আমি এও স্মরণ করিয়ে দিয়েছি যে, বাংলাদেশ অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মন্তব্য থেকে বিরত থাকে এবং অন্যান্য দেশেরও একই ধরনের শ্রদ্ধাবোধ আমাদের প্রতি দেখানো উচিৎ।’

এছাড়া আগরতলা এবং কোলকাতা মিশনে সাম্প্রতিক হামলার ঘটনা নিয়ে বাংলাদেশ জোরালোভাবে প্রতিবাদ করেছে বলে তিনি জানান।

সীমান্ত হত্যা

সীমান্তে যে হত্যাকাণ্ড হচ্ছে এটি কাম্য নয় এবং দুইদেশের মধ্যে যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে সেটির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয় বলে জানান পররাষ্ট্র সচিব।

তিনি বলেন, ‘আমরা সবসময় বলেছি সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে। একটি মৃত্যুও অনেক বেশি। তাদের দিক থেকে বলা হয়েছে সীমানায় নানা ধরনের অপরাধ হয় এবং হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে অপরাধের একটি যোগ আছে বলে তারা মনে করে। আমরা বলেছি, আমরা কোনও ধরনের অপরাধ সমর্থন করি না। একই সঙ্গে আমরা হত্যাকাণ্ডও সমর্থন করি না।’

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন