জাতীয় ডেস্ক:
ভারত মহাসাগরে জলদস্যুদের কবলে পড়া বাংলাদেশি পতাকাবাহী ‘এমভি আব্দুল্লাহ’ জাহাজে অপহৃত মোহাম্মদ আনারুল হক রাজুর (২৯) পরিবারের একটিই দাবি বাংলাদেশিদের উদ্ধার করে সরকার যেন স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করে। রাজু ওই জাহাজটিতে ‘এবি’ (অ্যাবল সীমেন) হিসেবে কর্মরত।
রাজুর মা দৌলত আরা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার ঘর ভাঙ্গা ছিল, এখন বিল্ডিং করতেছি ঘরের কাজ শেষ হলে ছেলে জাহাজ থেকে এলে তাকে বিয়ে করাবো, তার জন্য পাত্রী দেখতেছি। এরই মধ্যে গতকাল খবর পেলাম আমার ছেলেসহ ২৩ জন্য বাংলাদেশিসহ অপহৃত হয়েছে।’
আমি প্রধানমন্ত্রী ও আমাদের নেতা সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সহযোগিতা চাই।
রাজুর বন্ধু ইমরান সময় সংবাদকে জানান, গতকাল (১২ মার্চ) ভোর রাতে রাজু হোয়াটসঅ্যাপে কল দিয়ে বলেন তাদরকে জাহাজের একটি কেবিনে আটকিয়ে রেখেছে। রাতে সেহরি খাবার জন্য দিয়েছে দ্যুশরা। এরপর তার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
রাজু’র বড় ভাই মো জিয়াউল রনি বলেন, ‘আমরা দুই ভাই এক বোন সে সবার ছোট রাজু। ২০১৬ সালে সে জাহাজে উঠে গত ৮ বছর সে জাহাজ কর্মরত রয়েছে। গত নভেম্বরে সে সিঙ্গাপুর থেকে জাহাজে ওঠে। গতকাল সে আমার মোবাইলে মেসেজ লেখেন ‘সোমালিয়ান পাইরেটস অনবোর্ড, বাঁচি থাকলে দেখা হবে, দোয়া কইরেন…..’!
রাজুর বাবা আজিজুল হক মাস্টার বলেন, ‘আমার ছেলেসহ সবাইকে উদ্ধার করার জন্য প্রধানমন্ত্রী ও কোম্পানীগঞ্জের সংসদ সদস্য সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সহযোগিতা কামনা করছি। গতকাল থেকে আমাদের পরিবারে হতাশা ও আতংক। তার মা ক্ষণে ক্ষণে ছেলের জন্য মূর্ছা যাচ্ছেন।’
সোমালিয়ায় অপহৃত মোহাম্মদ আনারুল হক রাজু নোয়াখালী কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার রামপুর (আজিজুল হক মাস্টারের বাড়ি) আজিজুল হক মাস্টার ও দৌলত আরা বেগমের ছেলে। তার পাসপোর্ট নম্বর PP. No.A12012944
সে অবিবাহিত। ২ ভাই ১ বোনের মধ্যে সে তৃতীয়।
রাজু বামনী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১২ সালে এসএস পাস করেন। বামনী কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। চট্টগ্রামের ন্যাশনাল মেরিটাইম ইনস্টিটিউট (এনএমআই) থেকে সিডিসি কোর্চ সম্পূর্ণ করেন।
জাহাজটি চট্টগ্রামের কবির গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এস আর শিপিং লিমিটেডের মালিকানাধীন। যার নাম এমভি আবদুল্লাহ। পণ্যবাহী জাহাজটি কয়লা নিয়ে ভারত মহাসাগর হয়ে মোজাম্বিক থেকে আরব আমিরাতের আল-হামরিয়া বন্দরের দিকে যাচ্ছিল। গন্তব্য ছিল দুবাই। বুধবার (১৩ মার্চ) মালিকপক্ষ জিম্মি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নাবিকদের ছাড়িয়ে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান কবির গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম।