বাণিজ্য ডেস্ক :
উৎপাদনে দ্বিতীয় হলেও রফতানিতে শীর্ষে বাংলাদেশের পাট ও পাটপণ্য। এবার এ পণ্যটিকে প্রোডাক্ট অব দ্য ইয়ার বা বর্ষপণ্য ঘোষণা করা হয়েছে। তবে বছর শেষে এ পণ্যটিকে কোথায় দেখতে চায় সরকার, সে সম্পর্কে কিছুই জানেন না এখাতের উদ্যোক্তা, রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো কিংবা এসএমই ফাউন্ডেশনের মতো সংস্থা।
স্বাধীনতার পর পাটের সোনালী আঁশে স্বপ্ন বুনে পথচলা শুরু করে কৃষি প্রধান অর্থনীতির দেশ সোনার বাংলার। এরপর বৈচিত্র্য এসেছে কৃষিতে-অর্থনীতিতে; তবে নিজের ব্যবহারিক উপযোগিতা ধরে রেখেছে পাট। তাই তো উৎপাদনে দ্বিতীয় হলেও রফতানিতে শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশের পাট ও পাটপণ্য। যদিও বছরের পর বছর ধরে এসব পণ্যের রফতানি আয় আটকে আছে ১ বিলিয়নের আশপাশেই।
এ অবস্থায় পাটপণ্যের বাজার সম্প্রসারণে গত ১ জানুয়ারি পাট ও পাটপণ্যকে চলতি বছরের জন্য বর্ষপণ্য ঘোষণা করা হয়েছে। যেখানে বছরজুড়েই সরকারের বিশেষ নজর এ খাতে থাকবে। তবে এখনও উদ্যোক্তারা জানেন না, বর্ষপণ্যের সুফল পেতে কোন লক্ষ্য সামনে রেখে কাজ করবেন তারা।
তুলিকা ইকো লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইসরাত জাহান চৌধুরী বলেন, শুধু উদ্যোক্তা হলে তো হবে না, উদ্যোক্তাদের তো বাঁচিয়েও রাখতে হবে। আমরা যে ফেব্রিক কিনি, সেটি কোনো না কোনো ফ্যাক্টরি থেকে কিনতে হয়, সেগুলোর সংখ্যা খুবই কম।
ক্রিয়েশন প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাশেদুল করিম মুন্না বলেন, আমরা কোথায় আছি এবং বিশ্ববাজারে বর্তমান চাহিদা কেমন; এগুলোকে মাথায় রেখে একটি সমন্বিত পরিকল্পনা ঘোষণা করতে হবে। তখনই আমরা এ খাতের সুবিধাটি উপভোগ করতে পারব।
তাই সুষ্পষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ ও তা বাস্তবায়নে দ্রুত নীতি কৌশল সাজানোর তাগিদ দেন খাত সংশ্লিষ্টরা।
তবে সমন্বিত পরিকল্পনা জানা নেই সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোরও। তারপরও ৫০ জন নতুন রফতানিকারক তৈরির চলমান কাজে গতি আনতে চায় এসএমই ফাউন্ডেশন।
এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. মফিজুর রহমান বলেন, এ ব্যাপারে জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টার (জেডিপিসি) ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে আমরা সহায়তা চাইব। এক্ষেত্রে বর্ষপণ্যকে ঘিরে এসএমই ফাউন্ডেশনের সিন্ধান্তগুলো তাদের জানানো হবে এবং সেক্ষেত্রে তারা আমাদের কি ধরনের সহায়তা করতে পারে, তা জানতে চাওয়া হবে।
এদিকে আগামী মাসে নব উদ্দামে রফতানি বাজার সম্প্রসারণের পরিকল্পনা হাতে নেবে রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)। সংস্থাটির ভাইস চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসান বলেন, বাণিজ্য মেলা নিয়ে আমরা বর্তমানে ব্যস্ত সময় পার করছি। আমরা হয় তো এ জানুয়ারি মাস শেষ হলেই ইপিবির পক্ষ থেকে বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রমগুলোর একটি ওয়ার্কপ্ল্যান তৈরি করে বাকি সময়গুলো সে অনুসারে কাজ করবো।
এ অবস্থায় দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক সুবিধা আদায়ে দূতাবাসগুলোকে আরও সক্রিয় করার পরামর্শ দিয়েছেন অর্থনীতিবিদ ড. মাহফুজ কবীর।
বর্ষপণ্যকে দেখভাল করার দায়িত্বে রয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।