হোম জাতীয় বন্যা নিয়ে দুঃসংবাদ

বন্যা নিয়ে দুঃসংবাদ

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 136 ভিউজ

জাতীয় ডেস্ক :

গত জুলাই মাসে ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছিল দেশ। সিলেট, সুনামগঞ্জসহ উত্তরের বেশ কয়েকটি অঞ্চল বন্যায় প্লাবিত হয়। চলতি মাসে অর্থাৎ আগস্টেও কিছু স্থানে স্বল্প থেকে মধ্যমেয়াদি বন্যা হতে পারে বলে আবহাওয়া অধিদফতরের মাসিক পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে।

বুধবার (৩ আগস্ট) ‘আগস্ট মাসের দীর্ঘমেয়াদি আবহাওয়ার পূর্বাভাসে’ এ তথ্য জানানো হয়েছে।

পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, চলতি আগস্ট মাসে বঙ্গোপসাগরে এক বা দুটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে, যার মধ্যে একটি মৌসুমি নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। মাসের দ্বিতীয়ার্ধে দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে মৌসুমি ভারি বৃষ্টি হতে পারে। এর কারণে কিছু স্থানে স্বল্প থেকে মধ্যমেয়াদি বন্যা হতে পারে।

গত জুলাই মাসের আবহাওয়ার বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিলো, পুরো মাস জুড়ে অপেক্ষাকৃত কম বৃষ্টি হতে পারে। হয়েছেও ঠিক সেটাই। শুধু তাই নয়, আগস্ট মাসের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আবহাওয়াবিদরা বলেছেন, জুলাইয়ে অবস্থা ছিল অস্বাভাবিক। ওই স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টি হয়েছে প্রায় ৫৮ ভাগ।

গত জুলাইয়ে স্বাভাবিকের চেয়ে সবচেয়ে কম বৃষ্টি হয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগে। এ হার ছিল প্রায় ৬৮ শতাংশ। কম বৃষ্টি হওয়ার দিক থেকে এরপর আছে বরিশাল বিভাগে। এ হার ৬৪ দশমিক ৭। দেশের আট বিভাগের মধ্যে স্বাভাবিক বৃষ্টি হয়েছে শুধু সিলেট বিভাগে।

আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ মো. আবুল কালাম মল্লিক সংবাদমাধ্যমকে বলেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে বৃষ্টিপ্রবণ এলাকা সিলেট। সেখানে গত মাসে স্বাভাবিক বৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপ্রবণ এলাকায় চট্টগ্রামে সবচেয়ে কম বৃষ্টি হয়েছে। বাকি সব বিভাগে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম বৃষ্টি হয়েছে। জুলাই বৃষ্টির মাস, কিন্তু গত মাসে এক অস্বাভাবিক অবস্থা দেখা গেছে।

জুলাইয়ের এই ‘অস্বাভাবিক’ আচরণের পেছনের কী কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ নিয়ে আমরাও ভাবছি, তবে শুধু বাংলাদেশে নয়, পাশের সব দেশ এবং বিশ্বের প্রায় সব জায়গায় জুলাই মাস ছিল উষ্ণ। জলবায়ু পরিবর্তন এবং প্রশান্ত ও ভারত মহাসাগরের বিশেষ কিছু পরিস্থিতির কারণে এ অবস্থা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে।’

আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে। চলতি আগস্টেও স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার পাশাপাশি দিন ও রাতের তাপমাত্রাও স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকতে পারে এ মাসে। সেই সঙ্গে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হতে পারে সিলেটে, তারপরই চট্টগ্রামে।

এদিকে, আবহাওয়াবিদ মো. আবুল কালাম মল্লিক জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ঢাকা ও খুলনা বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে। এসময়ে সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

আগামী পাঁচদিন বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে বলেও জানান এ আবহাওয়াবিদ।

বৃহস্পতিবার সবশেষ আবহাওয়া পরিস্থিতিতে বলা হয়, সমুদ্রবন্দর, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে সংকেত নামিয়ে ফেলতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাত ১ পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ময়মনসিংহ, ঢাকা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং সিলেট অঞ্চলের ওপর দিয়ে দক্ষিণ বা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘন্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন