হোম অর্থ ও বাণিজ্য বন্যায় ডুবেছে ৫৬ হাজার হেক্টর জমির আউশ ধান: কৃষিমন্ত্রী

বাণিজ্য ডেস্ক :

কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, বন্যায় ৫৬ হাজার হেক্টর জমির আউশ ধান ডুবে গেছে। বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হলে বীজতলাও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ফসলের ক্ষতি পোষাতে সার্বিক প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। এছাড়া বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হলে নাবি জাতের (লেইট ভ্যারাইটি) ধান চাষের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

মঙ্গলবার (২১ জুন) সচিবালয়ে মালদ্বীপের হাইকমিশনার শিরুজিমাথ সামীরের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে কৃষিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

এসময় তিনি বলেন, এখন মাঠে বড় ধরনের কোনো ফসল নেই। তারপরও চলমান বন্যায় সুনামগঞ্জে ও সিলেটে ২২ হাজার হেক্টর জমির আউশ ধান আক্রান্ত হয়েছে। এখন বন্যা কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী, মৌলভীবাজারসহ অনেক জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে। এতে এখন পর্যন্ত সারা দেশে প্রায় ৫৬ হাজার হেক্টর জমির আউশ ধান আক্রান্ত হয়েছে। এছাড়া শাকসবজি, তিল, বাদাম প্রভৃতি ফসলের ক্ষতি হয়েছে।

বন্যা দীর্ঘস্থায়ী না হলে এখন পর্যন্ত যতটুকু ক্ষতি হয়েছে, সেটি পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব মন্তব্য করে তিনি কৃষিমন্ত্রী বলেন, সে জন্য ইতোমধ্যে ব্যাপক প্রস্তুতিও শুরু করা হয়েছে।

আমন ধান উৎপাদন যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেদিকে গুরুত্ব দিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, দেশে আমন একটি বড় ফসল, যেখানে বছরে এক কোটি ৫০ লাখ টনের মতো চাল উৎপাদন হয়। এখন রোপা আমনের বীজতলা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। বন্যা আর না বাড়লে বীজতলা তেমন ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।

তবে বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হলে বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হবে উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমনের বীজতলা তৈরির জন্য সর্বোচ্চ ব্যবস্থা রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। যে সব বীজতলা করা হয়েছে, তা ক্ষতিগ্রস্ত হলে আবার করা হবে। আমাদের কাছে পর্যাপ্ত বীজ সংরক্ষিত রয়েছে, সে গুলো চাষিদের দেওয়া হবে। অন্যদিকে বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হলে নাবি জাতের (লেইট ভ্যারাইটি) ধান চাষের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

সব পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, বন্যার কারণে যদি আমন ক্ষতিগ্রস্ত হয় বা চাষ না করা যায়, তাহলে রবি মৌসুমে ফসলের উৎপাদন বাড়াতে হবে। সে জন্য ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কৃষকদের বীজ, সেচ, সারসহ বিভিন্ন উপকরণ বিনামূল্যে দেয়া হবে।

চলমান বন্যার কারণে শাকসবজির দামে প্রভাব পড়তে পারে বলেও জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, এ বন্যার কারণে দেশে খাদ্য সংকট হবে কি না, তা এখনই বলা যাচ্ছে না।

বৈঠকে মালদ্বীপের হাইকমিশনার শিরুজিমাথ সামীর বাংলাদেশ থেকে আম নেয়ার আগ্রহ ব্যক্ত করেন।

এছাড়া বাংলাদেশের বিশাল সামুদ্রিক সম্পদের আহরণে মালদ্বীপ সহযোগিতা করবে বলে জানান কৃষিমন্ত্রী।

এর আগে সকালে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে অধীনস্থ সংস্থাসমূহের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে মন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন এবং শুদ্ধাচার পুরস্কার বিতরণ করেন। এসময় মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সংস্থাপ্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন