জাতীয় ডেস্ক:
গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে জলহস্তী পরিবারে নতুন সদস্য যোগ হয়েছে। ১৪ অক্টোবর পার্কের মা জলহস্তী একটি শাবকের জন্ম দেয়।
জলহস্তীর নিরাপত্তাসহ সার্বিক দিক বিবেচনায় কর্তৃপক্ষ বুধবার (২৫ অক্টোবর) বিষয়টি গণমাধ্যমে জানায়।
নতুন সদস্য নিয়ে পার্কে এখন জলহস্তীর সংখ্যা চার-এ দাঁড়াল। এর আগে ২০২১ সালের ২১ অক্টোবর পার্কে আরও একটি শাবকের জন্ম হয়। সেটি এখনও টিকে আছে। তবে পার্কে জন্ম নেয়া দুটি শাবকের লিঙ্গ এখনও নির্ধারণ করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।
জন্মের পর থেকেই নতুন শাবকটি পানিতেই রয়েছে, মাঝে মধ্যে মায়ের সঙ্গে মাথা উঁচু করে নিজের অস্তিত্বও জানান দিচ্ছে সে। জলহস্তী পানিতে একবার ডুব দিয়ে পাঁচ মিনিট সময় পর্যন্ত থাকতে পারে। এরা নিশাচর, দিনের অধিকাংশ সময় পানিতেই থাকে, মাঝে মধ্যে খাবার খেতে ডাঙ্গায় উঠে আসে।
পার্ক কর্তৃপক্ষের দেয়া তথ্য মতে, জলহস্তী আফ্রিকার একটি তৃণভোজী নিশাচর প্রাণী। প্রাণীজগতে হাতির পরই দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রাণী হচ্ছে জলহস্তী। এরা আকারে অন্যান্য প্রাণীর তুলনায় দেখতে খাটো হলেও এরা খুবই মোটা। আন্তর্জাতিক ভাবে ২০০৬ সালে এ প্রাণীকে বিশ্বে সংকটাপন্ন প্রাণী হিসেবে স্থান দেয়া হয়েছে।
একটি পূর্ণবয়স্ক জলহস্তীর ওজন এক হাজার ৫০০ কেজি পর্যন্ত হয়। ভারী শরীর নিয়েও এরা ৩০ কিলোমিটার গতিতে ছুটতে পারে। জলহস্তী গর্ভকাল ২৪০-২৮০ দিন পর্যন্ত হয়। দুই বছর পর পর একটি করে শাবকের জন্ম দিতে পারে মা জলহস্তী। ৫-৭ বছরে জলহস্তী প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে উঠে। আবদ্ধ অবস্থায় এরা ২৫-৩৫ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। প্রাকৃতিক পরিবেশে আরও বেশি।
নিষ্ঠুর স্বভাবের হয় পুরুষ জলহস্তী:
পুরুষ জলহস্তী নিষ্ঠুর প্রাকৃতিক স্বভাবের হয়। এটি মারমুখী ও খুবই হিংস্র হয়। নতুন জন্ম নেয়া শাবক যদি পুরুষ হয় তাহলে বাবা জলহস্তী নিজের কর্তৃত্ব বজায় রাখতে তার সন্তানকে আক্রমণ করে হত্যা করতেও পিছপা হয় না।
সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, নতুন জন্ম নেয়া শাবকটিকে মাঝে মধ্যেই তার জন্য নির্দিষ্ট জলাধারে দেখা যাচ্ছে। নতুন শাবকটির সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা দিচ্ছে তার মা নিজেই। শাবকটি ও তার মায়ের পুষ্টিমানের কথা বিবেচনা করে আমরা তাদের খাবারের পরিমাণও বাড়িয়েছি। আমাদের আশা, নতুন শাবকটি যদি মাদী হয় তাহলে শঙ্কামুক্ত থেকেই সে বড় হয়ে উঠছে।