জাতীয় ডেস্ক:
ব্যক্তিগত ইউটিউব চ্যানেল কিংবা ফেসবুক পেইজে লাইভ টক শো বা আলোচনা অনুষ্ঠানে কোনো অতিথির বিরূপ মন্তব্যের দায় অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ও চ্যানেল বা পেইজের মালিকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিতে হবে বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
সোমবার (১০ জুলাই) ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের দুই মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরার জামিন শুনানি ৪ মাসের জন্য মুলতবি করে এমন পর্যবেক্ষণ দেন আদালত। একইসঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমের টক শোতে উপস্থাপক, আলোচকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে বলেন আপিল বিভাগ।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা দুই মামলায় গত ১১ মাসের বেশি সময় ধরে কারাগারে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরা। বিচারিক আদালতে কয়েক দফায় খাদিজার জামিন আবেদন নামঞ্জুর হওয়ার পর গত ১৬ ফেব্রুয়ারি এই শিক্ষার্থীকে জামিন দেন হাইকোর্ট।
রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে পরে সেই জামিন স্থগিত করেন চেম্বার আদালত। সোমবার প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বিভাগে শুরু হয় জামিন শুনানি। শুনানিতে খাদিজার পক্ষে তার আইনজীবীরা জামিন চাইলে আপিল বিভাগ বলেন, যে বক্তব্যের জন্য এ মামলা সেখানে খাদিজা কিছু বোঝে না এটা বলা ঠিক না, কারণ সে অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী। আপনি টক শোতে ইন্টারভিউর জন্য কাউকে ডাকলে তিনি যা বলবেন তার দায়িত্ব কেনো নেবেন না? ব্যক্তিগত ইউটিউব চ্যানেল কিংবা ফেসবুক পেইজে লাইভে টক শো বা আলোচনা অনুষ্ঠানে কোনো অতিথির বিরূপ মন্তব্যের দায়, অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ও চ্যানেল বা পেইজের মালিকসহ সবাইকে নিতে হবে।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সহযোগী অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুল আলম বলেন, শুনানিতে দেশের সর্বোচ্চ আদালত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমের টক শোতে উপস্থাপক, আলোচকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে বলেও পর্যবেক্ষণ দেন। আর খাদিজাতুল কুবরার জামিন শুনানি ৪ মাসের জন্য মুলতবি করেন।
২০২০ সালের অক্টোবরে রাষ্ট্রবিজ্ঞান দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী খাদিজা নিজের ফেসবুকে একটি ওয়েবিনার হোস্ট করেন সেখানে একজন অতিথির বিতর্কিত মন্তব্যের অভিযোগে, তার বিরুদ্ধে রাজধানীর কলাবাগান ও নিউমার্কেট থানায় মামলায় করে পুলিশ। এরপর তাকে গ্রেফতার করা হয়।
আদালতে দেয়া মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, খাদিজা ও তার অনুষ্ঠানের অতিথি দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে ঘোলাটে করার চেষ্টায় সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ডে সাধারণ জনগণকে জড়িত করছেন এবং বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছেন। এ ছাড়া অভিযুক্তরা বাংলাদেশের বৈধ সরকারের পতনের চেষ্টা করছিলেন এবং প্রধানমন্ত্রী, সরকারি সংস্থা ও রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের অপমান করেছেন।