হোম জাতীয় ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলের হামলা: সারাদেশে পালিত হলো রাষ্ট্রীয় শোক

জাতীয় ডেস্ক:

গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর বর্বরোচিত হামলায় ফিলিস্তিনি নাগরিকদের মৃত্যুতে শনিবার (২১ অক্টোবর) সারাদেশে রাষ্ট্রীয় শোক পালন করা হয়েছে। এরসঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসসহ বিদেশি মিশনেও পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়।

ফিলিস্তিন ইস্যুতে দ্বিধাবিভক্ত বিশ্বে প্রথমবার রাষ্ট্রীয় শোক পালন করল বাংলাদেশ। ইসরাইলের বর্বরোচিত হামলায় নিহত হাজার হাজার নিরাপরাধ মানুষের স্মরণে দেশের সব প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। ফিলিস্তিনের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে সরকারের শোক পালনকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সাধারণ মানুষও।

একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করে গত বৃহস্পতিবার প্রজ্ঞাপনও জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, শনিবার বাংলাদেশের সব সরকারি, আধাসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সব সরকারি ও বেসরকারি ভবন এবং বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে।

এর আগে ওইদিন সকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে সড়ক ভবনে এক অনুষ্ঠানে ফিলিস্তিনিদের জন্য শোক পালনের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, শনিবার ফিলিস্তিনের জন্য শোক দিবস ঘোষণা করেছি। সেদিন আমাদের জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘ইসরাইল যেভাবে হাসপাতালে হামলা করে নারী-শিশুদের হত্যা করেছে, আমরা এর নিন্দা জানাই। দ্রুত এটা বন্ধ করতে হবে; ফিলিস্তিনিরা যেন ন্যায্য জায়গা ফেরত পায়।

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের হামলার পর থেকে অবরুদ্ধ গাজায় টানা বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইলি বাহিনী। দুই সপ্তাহের হামলায় গাজায় নিহত ব্যক্তির সংখ্যা চার হাজার ছাড়িয়েছে। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ১০ লাখ মানুষ। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও পানির সরবরাহ বন্ধ করে দেয়ায় গাজায় দেখা দিয়েছে মানবিক বিপর্যয়। এমন অবস্থায় অনেক দেশ মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছে ফিলিস্তিনিদের দিক থেকে। তবে দেশেটির মানুষের পাশে থাকার কথা জানিয়ে একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালন করল বাংলাদেশ।

এর আগে শুক্রবার জুমার পর সারা দেশের মসজিদগুলোতে দোয়া ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে প্রার্থনারও অনুরোধ জানান প্রধানমন্ত্রী। সেই মোতাবেক শুক্রবার (২০ অক্টোবর) সারা দেশে মসজিদে মসজিদে জুমার নামাজের পর ফিলিস্তিনের মজলুম স্বাধীনতাকামী মানুষের জন্য দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে জুমার নামাজ-পরবর্তী মোনাজাতে অংশ নিয়ে মহান সৃষ্টিকর্তার দরবারে চোখের পানি ফেলেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। হাজার হাজার মাইল দূরে অবস্থিত ফিলিস্তিনের শান্তিকামী মানুষের জন্য শূন্যে দুই হাত তুলে দোয়া করেন মহান রবের দরবারে। ধ্বংসলীলার পরিবর্তে সৃষ্টিকর্তা যেন শান্তি প্রতিষ্ঠা করেন সেই প্রার্থনা করেন তারা।

শুধু মসজিদ নয়, এদিন অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়গুলোতেও ফিলিস্তিনিদের জন্য প্রার্থনা করা হয়।

জাতিসংঘের তথ্যমতে, গত ৭ অক্টোবার ইসরাইলের সঙ্গে হামাসের সংঘাত শুরুর পর থেকে অন্তত ৪,১৩৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন; যার মধ্যে ৭০ শতাংশই নারী এবং শিশু। এছাড়া আহত হয়েছেন অসংখ্য ফিলিস্তিনি। অপরদিকে হামাসের হামলায় ১ হাজার ৪০০ ইসরাইলি নাগরিক নিহত হয়েছেন; যাদের অধিকাংশই মারা গেছেন যুদ্ধ শুরুর দিনেই।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন