স্বাস্থ্য ডেস্ক :
মেয়েরা বিয়ের পরে বিভিন্ন রকম সমস্যার সম্মুখীন হয়। তার মধ্যে অন্যতম বড় সমস্যা হলো ফার্টিলিটি কমে যাওয়া। সে কারণে কনসিভ করতে পারে না। আজ আমরা একজন পুষ্টিবিদের কাছ থেকে ফার্টিলিটি বাড়াতে মেয়েদের খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কে জানব।
নিয়মিত স্বাস্থ্যবিষয়ক অনুষ্ঠান স্বাস্থ্য প্রতিদিনের একটি পর্বে ফার্টিলিটি বাড়াতে মেয়েদের খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কে বলেছেন পুষ্টিবিদ রাজধানীর পল্লবীর ল্যাবএইডের পুষ্টিবিদ সামিয়া তাসনিম।
পুষ্টিবিদ সামিয়া তাসনিম বলেন, ফার্টিলিটি না বাড়ার সঙ্গে অনেক বিষয় জড়িত। যেমন মেয়েদের বয়স, ওজন ও বিভিন্ন হরমোনাল সমস্যা। ফার্টিলিটি বাড়ানোর জন্য প্রতিদিন অবশ্যই আপনাকে পুষ্টিকর খাবার খাদ্যতালিকায় রাখতে হবে। সেই সাথে খেয়াল রাখতে হবে, শরীরের অতিরিক্ত ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা। যদি আপনার শরীরের ওজন বেশি হয়ে যায়, সে ক্ষেত্রে আপনাকে কম পরিমাণে খাবার গ্রহণ করতে হবে, কিন্তু সে খাবারটা অবশ্যই সুষম ও পুষ্টিকর হতে হবে।
সামিয়া তাসনিম বলেন, ফার্টিলিটি বৃদ্ধির জন্য ভিটামিন ডি-র গুরুত্ব অনেক বেশি। ওভুলেশন বা হরমোনাল ব্যালেন্সের জন্য ভিটামিন ডি-র গুরুত্ব অনেক। আমাদের দেশের মেয়েদের বেশির ভাগই দেখা যায় ভিটামিন ডি-র ডেফিসিয়েন্সি তৈরি হয়েছে। সে ক্ষেত্রে গ্রামে যারা থাকে, তাদের ভিটামিন ডি-র ডেফিসিয়েন্সি তুলনামূলক কম হয়। কারণ, তারা সকালবেলার রোদ স্কিনে পাচ্ছে। কিন্তু আমাদের দেশের শহরের মেয়েরা সব সময় অফিস ও ঘরের মধ্যে থাকার কারণে পর্যাপ্ত সূর্যের আলো না পাওয়ায় তাদের শরীরে ভিটামিন ডি তৈরি হচ্ছে না। সে ক্ষেত্রে তারা অবশ্যই সকালবেলা সূর্যের আলোতে বসবে এবং ভিটামিন ডি-জাতীয় খাবার খাদ্যতালিকায় রাখবে।
এ পুষ্টিবিদ বলেন, যেসব খাবারে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়, সেগুলো হলো ডিম, দুধ, মাছ, মাছের তেল ইত্যাদি। ভিটামিন ই স্পার্ম ও এগের অবস্থাকে ভালো করে। ভিটামিন ই-জাতীয় খাবারের মধ্যে রয়েছে অলিভ অয়েল, সানফ্লাওয়ার অয়েল, বাদাম, পেঁপে এবং অন্যান্য গাঢ় সবুজ শাকসবজি। ভিটামিন সি আমাদের হরমোন ও ফার্টিলিটিকে বৃদ্ধি করে। ভিটামিন সি-জাতীয় খাবারের মধ্যে রয়েছে টকজাতীয় ফল, ব্রকলি, টমেটো ইত্যাদি। জিঙ্ক বডিতে তিনশ এনজাইমের সাথে কাজ করে আমাদের বিভিন্ন অরগানকে ভালো রাখে। জিঙ্কের অভাব হলে প্রথমেই মিসকারেজ হয়ে যেতে পারে। এ ছাড়া জিঙ্ক ছেলেদের ফার্টিলিটি বৃদ্ধিতেও সহায়তা করে। গরুর মাংস, মটরশুঁটি, দই, মিষ্টিকুমড়ার বিচি প্রভৃতি খাবার থেকে আমরা জিঙ্কের চাহিদা পূরণ করতে পারি। মনে রাখতে হবে জিঙ্ক রান্নায় নষ্ট হয়ে যায়।
পুষ্টিবিদ সামিয়া তাসনিম যুক্ত করেন, ওমেগা থ্রি-জাতীয় খাবার ফার্টিলিটি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। ডিম, ডাল, কিছু সবজি, মাছ ও মাছের তেল থেকে আমরা ওমেগা থ্রির চাহিদা পূরণ করতে পারি। যাঁরা এই ফার্টিলিটির সমস্যায় ভুগছেন, তাঁদের জন্য একটিই উপদেশ আপনারা প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় সব পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ খাবার যুক্ত করুন এবং প্রতিদিন সূর্যের আলোতে পাঁচ মিনিট করে বসুন।