জাতীয় ডেস্ক:
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, এখন প্রযুক্তিগত দিক থেকে অনেক উন্নত ফায়ার সার্ভিস। বাড়ানো হয়েছে লোকবল ও সঙ্গে রয়েছে উন্নত প্রশিক্ষণ ব্যবস্থাও। বুধবার (১১ অক্টোবর) বেলা ১১টায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরে আয়োজিত ইমার্জেন্সি রেসপন্স কট্রোল সেন্টারের (ইআরসিসি) উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
বর্তমান সরকারের সময়ে বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রমের চিত্র তুলে ধরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী আমাদের দেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। ডিজিটাল বাংলাদেশের পর স্মার্ট বাংলাদেশের মতো আধুনিক ও উন্নত পরিকল্পনা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মতো দূরদৃষ্টিসম্পন্ন বিশ্বনেতার পক্ষেই ঘোষণা করা সম্ভব।
তার এ সিদ্ধান্তের বাস্তবায়নে দেশের সকল ক্ষেত্রে ডিজিটালাইজেশনের কাজ চলমান রয়েছে। যার মাধ্যমে সকলের জন্য সেবা গ্রহণ প্রক্রিয়াকে সহজ ও সুবিধাজনক করে দেয়াই আমাদের সরকারের অন্যতম অঙ্গীকার। এরই ধারাবাহিকতায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সেবা ক্ষেত্রগুলোকেও ডিজিটাল সুবিধার আওতায় আনা হচ্ছে। আজকের এ ইআরসিসি ভবনের উদ্বোধন সেই প্রক্রিয়ারই ধারাবাহিকতা। আমি বিশ্বাস করি, ইআরসিসি ভবনের প্রযুক্তিগত সুবিধা কাজে লাগিয়ে ফায়ার সার্ভিস মানুষের আরও আস্থাভাজন হয়ে উঠবে বলেও জানান তিনি।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় আসাদুজ্জামান খান গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীনতার মহানায়ক, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। তিনি ১৫ আগস্ট জাতির পিতার সাথে বঙ্গমাতাসহ সকল শহীদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। একই সাথে মহান মুক্তিযুদ্ধসহ দেশের জন্য প্রাণ বিসর্জনকারী ১৩ অগ্নিবীরসহ শহীদ সকল ফায়ারফাইটারকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন।
সকাল ১১টায় প্রধান অতিথি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত হলে উপসহকারি পরিচালক ফয়সালুর রহমানের নেতৃত্বে একদল চৌকস অগ্নিসেনা তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করেন। অভিবাদন গ্রহণ করে প্রধান অতিথি ইমার্জেন্সি রেসপন্স কট্রোল সেন্টারের উদ্বোধন ফলক উন্মোচন করেন এবং বেলুন উড়ান। এরপর অতিথিরা ইমার্জেন্সি রেসপন্স কট্রোল সেন্টার পরিদর্শন করেন।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ডিরেক্টর জেনারেল ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন জানান, বর্তমানে ২০টি স্টেশন যুক্ত থাকলেও ধারাবাহিকভাবে দেশের সবগুলো ফায়ার সার্ভিস স্টেশনকে সংযুক্ত করা হবে ইআরসিসিতে।
এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত রিপাবলিক অব কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং সিক কোইকার কান্ট্রি ডিরেক্টর তাইয়ং কিম, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব মো. সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব (অগ্নি অনুবিভাগ) শাহানারা খাতুন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন, মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাগণ, ফায়ার সার্ভিসের পরিচালকগণ, প্রকল্প পরিচালক, উপপরিচালক, সহকারি পরিচালকসহ বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা, কর্মচারী ও গণমাধ্যম কর্মীরা।
উল্লেখ্য, ফায়ার ইমার্জেন্সি রেসপন্সের সক্ষমতা শক্তিশালীকরণ প্রকল্পের অধীন ফায়ার সার্ভিস সদর দফতরে ইমার্জেন্সি রেসপন্স কট্রোল সেন্টার নির্মাণ করা হয়। এ ইআরসিসির মাধ্যমে ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ জেলার ২৮টি ফায়ার স্টেশনের আওতাধীন এলাকার শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহকে সিসিটিভি ক্যামেরা ও আধুনিক জিআইএস সুবিধার আওতায় আনার পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিসের গাড়িগুলোতে জিপিআরএস সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। এতে অগ্নিকাণ্ড ও দুর্ঘটনার সঠিক অবস্থা ও অবস্থান জানা যাবে এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও দুর্ঘটনা মোকাবিলা করা সম্ভব হবে।
বাংলাদেশ সরকার ও কোরিয়া ইন্টান্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (কোইকার) অর্থায়নে নির্মিত এ ইআরসিসিতে আইটি সংশ্লিষ্ট সকল যন্ত্রাংশ ও সরঞ্জামাদি কোইকার কর্তৃক স্থাপন সম্পন্ন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানের অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন, রিপাবলিক অব কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং সিক, কোইকার কান্ট্রি ডিরেক্টর তাইয়ং কিম, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (অগ্নি অনুবিভাগ) শাহানারা খাতুন এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন।