স্বাস্থ্য ডেস্ক:
ডায়েট ও ব্যায়াম করে শরীর হালকা হয়েছে অনেকটা। কিন্তু কমছে না পেটের জেদি চর্বির বোঝা। উচ্চ চর্বিযুক্ত খাবার যে পেটের মেদ বাড়ায় তা নয়, বেশি ক্যালরিযুক্ত যেকোনো খাবারই পেটের মেদ বাড়াতে পারে। একবার পেটে মেদ জমলে সেটা কাটিয়ে ওঠা যাবে না, এ ধারণা ভুল। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনে অভ্যস্থ হলে সহজে মেদ কমিয়ে ফেলা সম্ভব।
পেটের জেদি চর্বি
শরীরের ওজন বাগে আনা গেলেও পেটের মেদ কমতে চায় না। আর এ কথা তো আমরা সবাই জানি যে শরীরের মধ্যভাগে অতিরিক্ত চর্বি জমলে তা হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় অনেকটা। কোমরে ব্যথা, ফ্যাটি লিভারসহ বহু শারীরিক সমস্যা তো আছেই সঙ্গে। বসে বসে ডেস্কে কাজ করা হয় যাদের, তাদের ক্ষেত্রে অল্প বয়সেই ভুঁড়ি হওয়ার প্রবণতা থাকে।
যথেষ্ট ঘুম যেন হয়, তা খেয়াল রাখুন
ঘুম ভালো না হলে দিনটাই মাটি হয়। আর রাতজাগা পাখিদের জন্য দুঃসংবাদ হলো, এতে পেটে মেদ জমে। গবেষণা বলে, দিনে অন্তত পাঁচ ঘণ্টা ঠিকঠাক ঘুম না হলে ভিসেরাল ও সাবকিউটেনিয়াস এই দুই ধরনের চর্বিই বাড়ে। ফলে পেটে যেমন মেদ জমে, তেমনি রক্তের কোলেস্টেরল বা লিভারের ফ্যাটও বৃদ্ধি পায়। আর তা ঘটতে পারে ৪০ হওয়ার আগেই। চর্বি জমার সঙ্গে সঙ্গে অপর্যাপ্ত ঘুম ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স বাড়ায়৷ তাই পেটের মেদ কমাতে রাতে পর্যাপ্ত ঘুমান।
খাবারের প্লেটে পর্যাপ্ত আমিষ রাখা
ভালো স্বাস্থ্যের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে চর্বিমুক্ত আমিষ খাওয়া খুবই প্রয়োজন। দিনে প্রতি বেলার খাবারে ২০ থেকে ৩০ গ্রাম আমিষ খেতে হবে৷ আর স্ন্যাকসেও ১০ গ্রাম আমিষ থাকলে ভালো। খাবারে যথেষ্ট প্রোটিন থাকলে খেয়ে সন্তুষ্টি মেলে। ফলে একটু পরেই আবার চিপস–বিস্কুট খোঁজাখুঁজি করতে হয় না। এগুলোতে প্রায়ই মাত্রাতিরিক্ত চিনি আর ট্র্যান্সফ্যাট থাকে। আবার প্রাণিজ আমিষ দিনে বেশি না খেলেই ভালো। ননিমুক্ত দুধ ও ডিম রাখতে হবে ডায়েটে।
কার্ডিও ব্যায়াম আর স্ট্রেংথ ট্রেনিং করুন
ওজন কমানোর মতো পেটের মেদ প্রতিরোধ বা হ্রাস করতে ব্যায়ামের বিকল্প নেই। পেটের মেদের জন্য স্কোয়াটও খুব কার্যকর। বিভিন্ন রেজিস্ট্যান্স ট্রেনিং আর অ্যারোবিক্স রুটিন রয়েছে, যা শুধু পেটের মেদ কমানোর লক্ষ্য নিয়ে সাজানো। কিছু যোগব্যায়ামও ভালো কাজ করে ভুঁড়ি কমাতে। এ জন্য সপ্তাহে ১৫০ মিনিট মাঝারি ব্যায়াম যেমন দ্রুত হাঁটা বা সাইক্লিং অথবা ৭৫ মিনিট ভারী ব্যায়াম, যেমন দৌড়ানো বা খেলা এ রকমই পরামর্শ দেন ফিটনেস বিশেষজ্ঞরা।
শর্করা নির্বাচনের ব্যাপারে সাবধান হোন
পেটে যে চর্বি জমে, তার জন্য মূলত শর্করাজাত চর্বি ট্রাইগ্লিসারাইডই দায়ী। তাই আমরা ফ্যাট কম খেলেও যদি ঠেসে ভাত-রুটি খাই, তবে ভুঁড়ি হবেই। যদি ক্ষয় না হয়, তবে এই অতিরিক্ত শর্করা জমে যায় শরীরে। সাদা চাল, সাদা আটা আর প্রক্রিয়াজাত খাবারের শর্করা এ জন্য অনেকাংশে দায়ী। তবে বর্তমানে ক্রেজে পরিণত হওয়া লো কার্ব বা নো কার্ব ডায়েট অনুসরণ করতে হবে, এমন কোনো কথা নেই। যেটা করতে হবে, তা হলো পরিমিত পরিমাণে আর জটিল শর্করা গ্রহণ। সরল শর্করা যেমন চিনিযুক্ত পানীয় ও খাবার এসব কমাতে হবে। এর বদলে জটিল শর্করা যেমন লাল আটা, লাল চাল, গোটা শস্য দিয়ে বানানো খাবার বা আঁশযুক্ত শর্করাজাতীয় খাবার খেতে হবে।