আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
রাশিয়ার বিরোধী নেতা অ্যালেক্সি নাভালনির মৃত্যুর জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে দায়ী করেছেন তার স্ত্রী ইউলিয়া নাভালনায়া। এছাড়াও নাভালনির শরীর থেকে ‘বিষের চিহ্ন’ গায়েব করার জন্য ক্রেমলিন তার মরদেহ লুকিয়ে রেখেছে বলেও অভিযোগ করেছেন ইউলিয়া।
সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) ইউটিউবে পোস্ট করা এক ভিডিও বার্তায় এ অভিযোগ করেন ইউলিয়া নাভালনায়া। ভিডিওটি শেয়ার করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান।
রাশিয়ার সাইবেরিয়া অঞ্চলের একটি কারাগারে ছিলেন ৪৭ বছর বয়সী নাভালনি। সেখানে তিনি ৩০ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছিলেন। গত শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) তার মৃত্যু হয় বলে জানায় দেশটির কারা কর্তৃপক্ষ।
ভিডিও বার্তায় ৪৭ বছর বয়সী ইউলিয়া নাভালনায়া অভিযোগ করে বলেন, ভ্লাদিমির পুতিন আমার স্বামীকে হত্যা করেছে।
কান্নারত অবস্থায় তিনি তার স্বামীর কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া ও নাগরিকদের সহায়তায় ‘স্বাধীন রাশিয়ার’ জন্য লড়াই করার প্রতিশ্রুতি দেন। বলেন, আমি একটি স্বাধীন রাশিয়ায় থাকতে চাই। একটি স্বাধীন রাশিয়া গড়তে চাই। আমি অ্যালেক্সি নাভালনির কাজ চালিয়ে যাব।
এছাড়াও তিনি রুশ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে নাভালনির শরীর থেকে ‘নোভিচক নার্ভ এজেন্টের’ চিহ্ন অদৃশ্য করার জন্য তার মরদেহ লুকিয়ে রাখার অভিযোগ করেন।
নাভালনায়া বলেন, নাভালনিকে হত্যা করে পুতিন আমার অর্ধেককে হত্যা করেছে। আমার অর্ধেক হৃদয়, অর্ধেক আত্মাকে হত্যা করেছে। কিন্তু আমার কাছে এখনো বাকি অর্ধেক আছে। আর এ অর্ধেক আমাকে হাল না ছেড়ে দিতে বলে। আমি নাভালনির কাজ চালিয়ে যাব, আমাদের দেশের জন্য লড়াই চালিয়ে যাব।
ভিডিও বার্তায় তিনি রাশিয়ানদের উদ্দেশে বলেন, আমি আপনাদের আমার পাশে দাঁড়ানোর জন্য অনুরোধ করছি। যারা আমাদের ভবিষ্যৎ হত্যা করেছে। তাদের প্রতি আপনাদের রাগ, ক্ষোভ, ঘৃণা আমার সঙ্গে শেয়ার করুন।
নাভালনির স্ত্রী আরও বলেন, আমি আজ অ্যালেক্সির একটি কথা আপনাদের বলছি। অ্যালেক্সি বলতেন, ছোট কেনো কিছু করতে লজ্জা নেই। তবে নিজে ভয় পাওয়া লজ্জার বিষয়। আমি এই কথা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।
শেষে তিনি আরও বলেন, আমি এ লড়াইয়ে হাল ছেড়ে দেব না। আমি ভয় পাই না। আপনারাও কোনো কিছুতে ভয় পাবেন না।
এর আগে, নাভালনির মৃত্যুর দুদিন পর রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ইনস্টাগ্রামে দেয়া পোস্টে ইউলিয়া লিখেছেন, ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি।’
পোস্টে নিজেদের একটি ছবি যুক্ত করেন তিনি। ওই ছবিতে দেখা যায়, পরস্পরের মাথা স্পর্শ করে তারা কোনো প্রদর্শনী উপভোগ করছেন।