হোম জাতীয় পানির দিকে তাকিয়েই দিন কাটছে তাদের!

পানির দিকে তাকিয়েই দিন কাটছে তাদের!

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 29 ভিউজ

জাতীয় ডেস্ক:

চারিদিকে থৈ থৈ পানির মাঝে জেগে থাকা একটি বাড়ির আঙ্গিনায় দাঁড়িয়ে আছেন বেশ কিছু নারী। একটু দূর থেকে দেখলেই মনে হতে পারে, গ্রামাঞ্চলের এই নারীরা জড়ো হয়েছেন কোনো বিশেষ ঘটনার খবর জানতে কিংবা মেতে উঠেছেন কোনো খোশগল্পে। কিন্ত না, তাদের দৃষ্টি এখন কেবল বন্যার পানি নামার দিকে, দাঁড়িয়ে এখন অপেক্ষার প্রহর গুনছেন কখন ফিরবেন বাড়িতে।

এমন দৃশ্য কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিযনের ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার চর ভগবতীপুরের। গত এক সপ্তাহ ধরে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমার উপরে থাকায় তলিয়ে আছে এই চরের প্রায় দেড় শতাধিক পরিবারের বাড়িঘর। কোনো কোনো বাড়িতে কোমর সমান পানি। তাই সব ছেড়ে পরিবারের সবাই অবস্থান করছেন চরের মাঝে জেগে থাকা বাড়িতে। তাদের অপেক্ষা এখন পানি নেমে যাওয়ার।

চরের বাসিন্দা আমেনা বেগম জানান, তার ঘরে এখনও কোমর পানি। কোনো শুকনো জায়গা নেই। থাকার চৌকি ভাসিয়ে রেখেছেন। কিন্তু সে চৌকিও ভেঙে গেছে। তাছাড়া তার শিশু বাচ্চাকে চৌকির ওপর ছেড়ে দিলে পানিতে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা বেশি। এ কারণে কোলের শিশুকে নিয়ে চরের জেগে থাকা বাড়িতে অবস্থান করছেন। অপেক্ষা করছেন, বানের পানি নেমে গেলেই সন্তানসহ ফিরে যাবেন নিজ বাড়িতে।

শুধু আমেনা বেগম নয়, আরও অনেক নারী সন্তানসহ অবস্থান করছেন চরের জেগে থাকা বাড়িটিতে।

সরেজমিনে দেখা যায়, বন্যার পানি সামান্য কমলেও তলিয়ে আছে ঘরবাড়ি। তাই কোলের সন্তানদের নিয়ে উঁচু জায়গায় অবস্থান তাদের। থাকা- খাওয়ার কষ্ট নিয়েই দিন-রাত পার করছেন কোনো রকমে।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল গফুর বলেন, ‘চরে বন্যা কবলিত নারী ও শিশুদের উঁচু জায়গায় আনতে চাইলেও আসছেন না। তারা সেখানে থাকতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন।’

কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক সাইদুল আরীফ বলেন, ‘চরাঞ্চলে অবস্থান করা নারী ও শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ব্যবস্থা নেয়া হবে। তারা যাতে সেখানে নিরাপদে থাকে সে ব্যাপারে আমরা সার্বক্ষণিক নজরদারি রাখছি।’

উল্লেখ্য, কুড়িগ্রাম জেলার সদর, উলিপুর, চিলমারী, রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত প্রায় ৪০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ব্রহ্মপুত্র নদের শতাধিক চর ও দ্বীপচরের অবস্থা এখন একইরকম।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন