জামালউদ্দীন :
পাটকেলঘাটায় খালুর দায়ের করা মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় লিটু নামের এক যুবক হাজতবাস করছেন। ঘটনার বিবরণে জানা গেছে, পাটকেলঘাটার গৌরীপুর গ্রামের মৃত শেখ শামছুর রহমানের পুত্র মুনজুর আলম লিটু ও তার ভাই ইফতেখারুল আলম কুদ্দুস এলাকায় স্বনামধন্য শিল্পপতি ও ইটভাটা ব্যবসায়ী। তাদের অঢেল সম্পত্তির দিকে কু-নজর পড়ে তাদেরই খালাতো বোন একই এলাকার অভয়তলা গ্রামের জিয়াউর রহমানের কন্যা ইডেন কলেজের ছাত্রী রেহেনা খাতুনের। সম্পর্কে খালাতো বোন হওয়ায় তাদের গ্রামের বাড়িতে অবাধে যাতায়াত করত রেহেনা। এ ঘটনার সূত্র ধরে নিজেকে সুন্দর সজ্জিত খাবারে পরিণত করে রাখে। যেন একজন ক্ষুধার্ত মানুষ খাবারের লোভ কোনভাবেই সামাল দিতে না পারে। একপর্যায়ে নিজেকে গর্ভবতী দাবী করে লিটুকে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকে। বিষয়টি তাদের নিকট আত্মীয় হওয়ায় আলোচনার প্রেক্ষিতে প্রাথমিক অবস্থায় থানা মসজিদের ইমাম আব্দুল্লাহর মধ্যস্থতায় মুসলিম শরীয়াত মোতাবেক বিয়ে হয়। এ ঘটনার পর কিছুদিন যেতে না যেতেই রেহেনা নিজেকে ধুরন্ধর প্রমাণ করতে সাতক্ষীরা প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। খালাতো ভাইয়ের বিরুদ্ধে ইডেন কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণের পর চাপে পড়ে বিয়ে, অতঃপর কৌশলে সন্তান হত্যা। ঐ সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন, ২০১৯ সালের ১ সেপ্টেম্বর তার খালা অসুস্থ থাকায় তাকে ফুসলিয়ে তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়। তাদের বাড়িতে থাকাকালীন অবস্থায় প্রতিরাতেই লিটু তাকে ধর্ষণ করত। বিষয়টি জানাজানি হলে তাদেরকে বিয়ে দিবে বলে আশ্বস্ত করে। ২৫ অক্টোবর তারা তাদের গর্ভের সন্তান নষ্ট করে দেয়। ২১ ডিসেম্বর লিটু তাকে বিয়ে করবে না জানিয়ে দেয়। ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ তাকে মারপিট করা হয়। আবার ১৮ ফেব্রুয়ারিতে রেজিস্ট্রি বিয়ে হয়। ২৮ ফেব্রুয়ারি তার দ্বিতীয় দফা বাচ্চা নষ্ট হয়। এসমস্ত কল্পকাহিনী সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করলেও ১ জুন ২০২০ তারিখে পাটকেলঘাটা থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারে ঘটনা যে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক তা পরিষ্কার পরিলক্ষিত হয়েছে। এজাহারে মামলার বাদী রেহেনার পিতা জিয়াউর রহমান শেখ উল্লেখ করেছেন, তার ভাইরাপো লিটু তার বাড়িতে এসে তার কন্যাকে বিয়ের প্রস্তাব দিত। বিয়ে না দিলে সে আত্মহত্যা করবে। যে কারণে ২১ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে তাদের রেজিষ্ট্রিবিহীন বিয়ে হয়। বিয়ের পর কন্যা লিটুর বাড়িতে ঘরসংসার করে। এদিকে অত্র এলাকায় প্রতিবেশী পিন্টু শেখ ও মহিলা মেম্বর সায়েরা বানু এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, রেহেনা কখনই লিটুদের বাড়িতে ঘরসংসার করেনি। সংবাদ সম্মেলনে আরো উল্লেখ করা হয়, লিটু তার খালাতো বোনের পিতার বাড়িতে গিয়ে স্বজোরে পেটে লাথি মেরে বাচ্চা নষ্ট করে। একই ঘটনা এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে লিটু ও তার ভাই তার কন্যা ঘরসংসার করাকালীন সময়ে যৌতুকের দাবীতে লাথি মেরে তার পেটের বাচ্চা নষ্ট করে দিয়েছে। এ বিষয়ে ভিকটিম রেহেনা খাতুনের সাথে যোগাযোগ করে মামলার এজাহার ও সংবাদ সম্মেলনের সাথে মিল না থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে সে বলে, আমি অসুস্থ, এবিষয়ে আমি কথা বলতে রাজি নই। এ বিষয়ে মামলার বাদীর সেলফোনে যোগাযোগ করা হলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি। অপরদিকে পাটকেলঘাটা থানা মসজিদের ইমাম আব্দুল্লাহ এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, এ ধরণের বিয়ের বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। যারা তার নাম ব্যবহার করেছে নিশ্চয়ই তারা ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলের জন্য এমন কাজ করেছে। তবে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর (নিঃ) মোঃ জেল্লাল হোসেনকে মামলার এজাহার ও ভিকটিমের লিখিত সংবাদ সম্মেলনের কপির সাথে কোন মিল নেই জানানো হলে তিনি বলেন, তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।