হোম আন্তর্জাতিক পাকিস্তানে বন্যা: বৈশ্বিক উষ্ণায়ন কতটা দায়ী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :

স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ভাসছে পাকিস্তান। ডুবে আছে দেশটির অন্তত এক-তৃতীয়াংশ ভূখণ্ড। এমন নজিরবিহীন বন্যার পেছনে জলবায়ুর অস্বাভাবিক পরিবর্তনের প্রভাবকেই দায়ী করছেন বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি এক গবেষণা প্রতিবেদনেও উঠে এসেছে এমন তথ্য।

ওয়ার্ল্ড ওয়েদার অ্যাট্রিবিউশন গ্রুপের ওই গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, সাম্প্রতিক দশকগুলোয় জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বৃষ্টিপাত ৭৫ শতাংশের মতো বেড়েছে। পাকিস্তানে চলমান বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত সিন্ধু ও বেলুচিস্তানে আগস্টে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাতের কারণও এই বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও জলবায়ুর অস্বাভাবিক পরিবর্তন।

সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, এ বছর সবচেয়ে ভারি বৃষ্টির সময়ে বিজ্ঞানীরা পাকিস্তানের সিন্ধু অববাহিকায় ৬০ দিনে প্রায় ৭৫ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছেন। অন্যদিকে সিন্ধু ও বেলুচিস্তান প্রদেশে ৫ দিনে প্রায় ৫০ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। বৈশ্বিক উষ্ণায়ন না থাকলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কেমন হতো, তা বিজ্ঞানীরা জলবায়ু মডেল ব্যবহার করে নির্ধারণের চেষ্টা করেছেন।

অব্যাহত ভারি বর্ষণের ক্ষেত্রে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাব খতিয়ে দেখতে বিজ্ঞানীরা আবহাওয়ার তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা করে দেখেছেন বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

তবে গবেষকরা জোর দিয়ে বলেছেন, ঐতিহাসিকভাবে পাকিস্তানে মৌসুমি বৃষ্টির পরিমাণের ক্ষেত্রে পার্থক্য দেখা যায়। ফলে পুরো ৬০ দিনের বৃষ্টির পরিমাণের ক্ষেত্রে মানবসৃষ্ট বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাব কতটুকু, তা মূল্যায়ন করা কঠিন।

বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার তথ্যানুযায়ী, গেল ৫০ বছরে বিশ্বে আবহাওয়া সম্পর্কিত দুর্যোগ পাঁচ গুণ বেড়েছে। এতে গড়ে প্রতিদিন ১১৫ জন প্রাণ হারাচ্ছেন বলেও জানানো হয়।

এদিকে পাকিস্তানে বন্যায় এখন পর্যন্ত প্রায় দেড় হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। দেশটির বেশির ভাগ এলাকায় এখনও উদ্ধার অভিযান অব্যাহত আছে। এর মধ্যেই ভয়াবহ ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়া সংক্রমণের কথা জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, জমে থাকা পানির পাশে মানুষ বসবাস করছেন। আর এসব পানিতে এডিস মশা বংশবিস্তার করছে। ফলে এসব বাস্তুচ্যুত মানুষের মাঝেই ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি।

দেশটির সিন্ধু প্রদেশে স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা ৩ হাজার ৮৩০ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হওয়ার কথা জানিয়েছেন। প্রদেশটির একজন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জানান, সিন্ধু প্রদেশের সার্বিক অবস্থা খুবই খারাপ। গোটা প্রদেশে মেডিকেল ক্যাম্প স্থাপনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বেশির ভাগ রোগীই ডেঙ্গু আক্রান্ত। এরপরই আছে ম্যালেরিয়া রোগী।

এ ছাড়া বন্যার কারণে বিশুদ্ধ পানির অভাবে বিভিন্ন এলাকায় পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যাও বাড়ছে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন