হোম খুলনাবাগেরহাট পরিছন্নতা কর্মির পেনশনের টাকা আত্বসাৎ করায় হিসাব রক্ষক বরখাস্ত

পরিছন্নতা কর্মির পেনশনের টাকা আত্বসাৎ করায় হিসাব রক্ষক বরখাস্ত

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 102 ভিউজ

জসিম উদ্দিন:
মোংলা সমুদ্র বন্দর কতৃপক্ষের মৃত এক পরিছন্নতা কর্মির অবসর জনিত সুবিধার টাকা আত্বসাৎ করার অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে হিবার রক্ষক কর্মকর্তাকে। গঠন করা হয়েছে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি। ২৭ জুলাই থেকে তদন্ত কাজ শুরু করেছে তদন্ত কমিটি। আগামী ৭ কার্য দিবসে তদন্ত শেষ করার হবে বলে জানিয়েছেন, তদন্ত কমিটির প্রধান। এর আগে ওই ঘটনায় মৃত পরিচন্নতা কর্মি অঞ্জন হালদারের স্ত্রী কবিতা হালদার বন্দর চেয়ারম্যান বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। ওই অভিযোগে তিনি বন্দরের হিসাব রক্ষক কর্মকর্তা মোঃ মুজিবুর রহমান ও রবাট নামক অন্য এক বদলি শ্রমিককে অভিযুক্ত করা হয়।
লিখিত অভিযোগ ও অভিযোগ দাখিলকারী কবিতা হালদার জানায়, তার স্বামী অঞ্জন হালদার মোংলা বন্দরের পরিচন্নতা কর্মি ছিলেন। তাহার আইসি নম্বর ছিলো —২৮৫৯। ২০২১ সালের জুন মাসের ৫ তারিখ তিনি মৃত্যু করন করেন। তার তিন ছেলে ছোট থাকায় তিনি( কবিতা হালদার) তার মৃত স্বামীর আনুতোষিক ও অবসর জনিত সুবিধাদি পাওয়ার জন্য বন্দর কতৃপক্ষের বরাবর আবেদন করেন। এর পর সকল প্রক্রিয়া শেষে ২১ সালের নভেম্বর মাসে তাদের প্রাপ্য টাকা উত্তোলনের জন্য তাকে একটি ব্যাংক একাউন্ট করতে বলেন হিসাবরক্ষক মুজিবুর রহমান। এবং একাউন্ট খোলা হলে কবিতা হালদারের সাক্ষরিত একটি চেক নিয়ে জানানো হয় তাদের মোট পাওনা ১৯ লক্ষ ৪২ হাজার টাকা থেকে ১৪ লক্ষ ৪২ হাজার দেওয়া হবে। বাকী ৫ লক্ষ টাকা বন্দরের ফান্ডে এফডিআর করতে হবে। যা তিন বছর পরে ডাবল হলে তারা টাকা তুলতে পারবেন। আর ৮০ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হবে। না হলে ফাইল আটকে থাকবে। এই নিয়ম না মানলে মৃত স্বামীর পেনশনের টাকা পাওয়া যাবেনা বলে কবিতা হালদারকে ভয় দেয় প্রতারক মুজিবর ।টাকা না পাওয়ার ভয়ে নাবালক শিশুদের কিছু না জানিয়ে বন্দরের বদলি শ্রমিক রবাট এর মাধ্যমে ৮০ হাজার টাকা ঘুষদেন এবং পাঁচ লক্ষ টাকা এফডিআর করার জন্য হিসাব রক্ষক মো: মুজিবুর রহমানের কাছেরেখে আসেন।
এর পর কেটে যায় তিন বছর। এর মধ্যে বার্ধক্য জনিত কারনে অসুস্থ হয়ে পড়েন, মৃত পরিচন্নতা কর্মি অঞ্জন হালদারের স্ত্রী কবিতা হালদার। তাই মায়ের চিকিৎসা করাতে ওই এফডিআর এর টাকা তুলতে বন্দরে ছুটেযান মৃত পরিচন্নতা কর্মি অঞ্জন হালদারের এইচ এস সি পড়–য়া সন্তান অর্গ হালদার। তখন জানতে পারেন, তাদের এফডিআর করতে দেওয়া টাকা গুলো তিন বছর আগে একটি চেক দিয়ে তুলেনেন বন্দরের হিসাব রক্ষক মুজিবুর রহমান। অর্গ জানায়, তাদের টাকা ফেরত দিতে তার মা মুজিবর রহমানের পা ধরেছে। কিন্তু মুজিবর রহমান তার মাতে লাথি মেরে তার রুম থেকে বের করেদেন। এর পর তাদের প্রাপ্য টাকা পাওয়ার ও কর্মকর্তা মুজিবুর রহমানের বিচার চেয়ে ২২ জুলাই বন্দর কতৃপক্ষের চেয়ারম্যান বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন মৃত পরিচন্নতা কর্মির স্ত্রী কবিতা হালদার। লিখিত অভিযোগ পেয়ে ২৩ জুলাই একটি লিখিত নোটিশের মাধ্যমে অভিযুক্ত হিসাব রক্ষক মোঃ মুজিবুর রহমানকে সাময়িক বরাখাস্ত করেন, বন্দরের পরিচালক প্রশাসন কালাচাঁদ সিংহ। একই সাথে বন্দরের উপপ্রধান প্রকৌশলী(নৌ) অনুপম চক্রবর্তীকে আহবায়ক, উর্ধ্বতন হিসাব রক্ষন কর্মকর্তা মোঃ নিয়ামুর রহমান ও উর্দ্ধোতন নিরাপত্তার্ কর্মকর্তা লেঃ কমান্ডার নজরুল ইসলামকে সদস্য করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

এদিকে অভাব অনটনে চিকিৎসা নিতে না পারার কারনে খুব অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, কবিতা হালদার। বিচানায় শুয়ে তিনি প্রতিবেদক কে বলেন, বন্দরের ওই অফিসার মুজিবর আমাদের সব শেষ করে দিয়েছে। সব টাকা আত্বসাৎ করে নিয়েগেছে। আমি লভ্যাংশসহ টাকা ফেরত চাই এবং তার বিচার দাবি করছি। যদি বন্দর কোন বিচার না করে আমি প্রধান উপদেষ্টার কাছে যাব বিচার চাইতে।
তদন্ত কমিটির প্রধান অনুপম চক্রবর্তী জানান, অভিযোগ পেয়ে ২৭ জুলাই থেকে তারা তদন্ত শুরু করেছেন। এরই মধ্যে অভিযুক্ত হিসাব রক্ষক মুজিবুরকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তারা ৭ কার্য দিবসে তদন্ত শেষ করবেন। এর পর বন্দর চেয়ারম্যান ও পরিচালক প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলে জানান।

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত হিসাব রক্ষক কর্মকর্তা মো: মুজিবুর রহমানকে ফোন দিলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় জেনে ব্যস্ত আছি বলে মুঠোফোনের সংযোগ কেটেদেন।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন