হোম অন্যান্যসারাদেশ পরিচালকের বিতর্কিত কর্মকান্ডে ক্ষুব্ধ ডাক্তার-কর্মচারীরা

পরিচালকের বিতর্কিত কর্মকান্ডে ক্ষুব্ধ ডাক্তার-কর্মচারীরা

কর্তৃক
০ মন্তব্য 84 ভিউজ

খুলনা অফিস:

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকের বিরুদ্ধে কর্মরত ডাক্তারকে লাঞ্ছিতের অভিযোগ উঠেছে। এতে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা। এছাড়াও একক সিদ্ধান্তে নিয়ম বহির্ভূতভাবে বহিরাগতদের দিয়ে তদারকি কমিটি গঠন করে স্বাভাবিক কার্যক্রমে জটিলতা সৃষ্টির প্রতিবাদ জানিয়েছেন তারা। অপরদিকে কর্মচারিদের হয়রানী, কোন কারণ ছাড়াই তাদের পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দেয়া, স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে নিজ এলাকার লোক নিয়োগ সহ পরিচালকের নানা বিতর্কিত কর্মকান্ডে ক্ষুব্ধ হাসপাতালের চিকিৎসক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তারা অবিলম্বে এর প্রতিকার দাবি করেছেন।

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুমন রায় জানান, গতকাল সোমবার বেলা ১১টার দিকে তিনি নিজের চোখের চিকিৎসার জন্য পাশে সহকর্মীর চেম্বারে যান। এসময় হাসপাতালের বহির্বিভাগে তার চেম্বার ৩১২ নম্বর রুমে যান হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ মুন্সী রেজা সেকেন্দার। সেখানে রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছিলেন নিউরো মেডিসিনের চিকিৎসক ডাঃ বাপী রায়। সেখানে সুমন রায়কে না পেয়ে বাপী রায়কে দেখে উত্তেজিত হয়ে পড়েন এবং হাসপাতালের স্টাফসহ রোগীদের সামনে অপমান করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। তাকে ওই রুম থেকে বের করে দেন। ঘটনা জানতে পেরে অন্যান্য সহকর্মীরা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বিষয়টি নিয়ে তারা লিখিতভাবে জানাবেন বলে দাবি করেন এই চিকিৎসক নেতা।

হয়রানীর শিকার হাসপাতালের ইনডোর মেডিকেল অফিসার ডাঃ বাপী রায় বলেন, ‘চোখের চিকিৎসার জন্য ডাঃ সুমন রায় পাশের ডাক্তারের ওখানে গেলে আমি তার চেম্বারে বসে রোগী দেখছিলাম। এসময় পরিচালক মহোদয় রুমে এসে রোগী ও হাসপাতালের স্টাফদের সামনে আমাকে গালিগালাজ করেন। আমাকে রুম থেকে বের করে দেন। পরে আমরা অন্যান্য সহকর্মীরা মিলে তার চেম্বারে গেলেও তিনি সেভাবে রেসপন্স করেননি।’

হাসপাতালের একটি সূত্র জানিয়েছে, কয়েকদিন আগে হাসপাতালের সাথে সম্পৃক্ত নন এমন কয়েকজনকে নিয়ে পরিচালক একটি তদারকি কমিটি গঠন করেছেন। ওই কমিটি গঠনের বিষয়ে অন্যান্য চিকিৎসকরাও কিছু জানেন না। হঠাৎ করেই হাসপাতালের বিভিন্ন অংশের দেওয়ালে কমিটির পোস্টার লাগানো হয়েছে। যা নিয়ে সাধারণ চিকিৎসকরা ক্ষুব্ধ। বিষয়টি নিয়ে কথা বলেত গেলেও পরিচালক এ বিষয়ে কারও সাথে কথা বলেননি। গঠিত কমিটির এক সদস্য চিকিৎসকদের বিভিন্ন বিষয়ে হয়রানী করেন। পরিচালক হাসপাতালে নিজের লোক ঢোকাতে কিছুদিন আগে ৬ জন আউটসোর্সিং কর্মচারীকে বাদ দিয়ে তার নিজের এলাকা ঝিনাইদহের ৫জনকে চাকুরী দিয়েছেন হাসপাতালে।

এদিকে হাসপাতালের কর্মচারীদেরকেও হয়রানীর অভিযোগ করেছেন চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে আউটসোর্সিং কর্মচারীদের মধ্যে বিরোধকে কেন্দ্র করে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে হাসপাতালের স্টাফ হাসানকে পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দেন। হাসানের ছেলের সাথে বেতনের টাকা নিয়ে আউটসোর্সিংয়ের ঠিকাদারের লোকদের বিরোধের জের ধরেই এমন কান্ড ঘটান পরিচালক। তিনি বলেন, আউটডোর থেকে ডাক্তারের চেম্বারের সামনে থেকে এটেন্ডেন্টদের টেবিল চেয়ার সরিয়ে দিয়েছেন পরিচালক। এতে রোগীর বিবরণ লিখতে অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে।
অপর একটি সূত্র দাবি করেছে, এসব আউটসোর্সিং কর্মচারীরা নিজেদের কাজ বাদ দিয়ে উর্দ্ধতনদের ব্যক্তিগত কাজ করেন। সুইপার বা পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে যারা নিয়োগ পেয়েছেন তাদের অধিকাংশ আউটসোর্সিং কর্মচারী ডেস্কে বসে কাজ করেন। তারা নিজেদের ওয়ার্ডবয় হিসেবে পরিচয় দিয়ে রোগীদের নিকট থেকে পয়সা হাতিয়ে নেয়। হাসপাতালের কর্মচারীরা এসব বিষয় নিয়ে পরিচালকের নিকট অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার পায়নি।

এসব বিষয় নিয়ে নিজের অবস্থান ব্যাখা করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ মুন্সী রেজা সেকেন্দার বলেন, ‘ডাক্তার সুমন রায়রা হাসপাতালটাকে ডুবাবে। তবে রোগীর সেবা নিশ্চিতকরণে আমি যে কোন পদক্ষেপ নিতে রাজি। ডাঃ বাপী রায়কে গালিগালাজ করা হয়নি। তাকে শুধু চেম্বার থেকে বেরিয়ে যেতে বলা হয়েছে। রোগীর সঠিক সেবা দিতেই একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে’। জনবল নিয়োগেও কোন স্বজনপ্রীতির ঘটনা ঘটেনি বলে তিনি দাবি করেন।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন