নড়াইল প্রতিনিধিঃ
নড়াইলের নড়াগাতির পাকুড়িয়া গ্রামে চাঞ্চল্যকর শিশু হামিদা হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন ও হত্যার সাথে জড়িত চারজনকে গ্রেফতার করেছে নড়াগাতি থানা পুলিশ। পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতেই শিশুটিকে হত্যা করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, কালিয়া উপজেলার পাকুরিয়া গ্রামের রবিউল সিকাদারের মেয়ে সুমি খানম (১৪), রবিউল সিকদার(৩৫),বরিউলের স্ত্রী ফরিদা বেগম( ৩২) তোতা সিকদারের স্ত্রী সুলতানা বেগম।
শুক্রবার ( ৩ ডিসেম্বর) রাতে নড়াগাতি থানায় প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান নড়াইলের পুলিশ সুপার এহসানুল কবির এর পক্ষে ওসি মোঃ শরিফুল ইসলাম।
এসময় নড়াগাতি থানা কার্যালয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস,আই দিবাকর,কালিয়া প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক মোঃ রাশেদ কামাল,সাংবাদিক হাচিবুর রহমানসহ কালিয়া প্রেসক্লাবের সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
প্রেস ব্রিফিংয়ে নড়াগাতি থানার ওসি জানান, গত ১৪ নভেম্বর ২০২৪ সন্ধার দিকে হাত পা বাধা শিশু হামিদার লাশ উদ্ধার করে এলাকাবাসি। এ ঘটনায় ‘কালিয়ায় হাত পা বাধা শিশুর লাশ উদ্ধার ‘শিরোনামে ই টেলিভিশন,দৈনিক ওশানসহ বিভিন্ন ইলেকট্রিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় সংবাদ প্রচার হয়। হত্যাকান্ডের ঘটনায় ছায়া তদন্তে নামে পুলিশ। পরে নিহত হামিদার পিতা বাদী হয়ে নড়াগাতি থানায় ৬ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। তদন্তের এক পর্যায়ে নিহতের প্রতিবেশী সুমি খানম কে জিঞ্জাসাবাদের জন্য আটক করে পুলিশ। পরে তার তথ্যমতে রবিউল ও তার স্ত্রী ফরিদা বেগমকে গ্রেফতার করে নড়াগাতি থানা পুলিশ।
আসামী ফরিদা বেগম ও রবিউলের বর্ণনা অনুযায়ী ভিকটিম মৃত হামিদা তাদের প্রতিবেশি শাহানুর শেখ ও হাওয়া বেগমের মেয়ে। ভিকটিমদের সাথে আসামীদের পারিবারিক কলহ ছিল। এছাড়াও রবিউলদের বাড়ির অপর পাশে তোতা সিকদারদের সাথেও তাদের পারিবারিক কলহ ছিল। পারিবারিক কলহের জের ধরে তোতা সিকদার ও তার ছেলে ফেরদৌস রবিউল আর তার স্ত্রীকে মারধর করে। উক্ত মারধরের ঘটনায় রবিউলের পরিবারের মধ্যে রাগ ও ক্ষোভের জন্ম হয় এবং তারা প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করে। উক্ত পরিকল্পনা মোতাবেক ফরিদা বেগম তার মেয়ে সুমিকে দিয়ে কিছু চিরকুট লেখায় ও ভিকটিম হামিদাদের বাড়ির আশপাশে আগুন দেয়। এই চিরকুট লেখা ও আগুন দেওয়ার বিষয়ে বারবার রবিউল ও তার পরিবারের সদস্যরা তোতার ছেলে ফেরদৌসকে দোষারোপ করে।
এই সুযোগে ফরিদা বেগম গত বছরের ১৪ নভেম্বর তারিখ বৃহস্পতিবার সন্ধার দিকে হামিদাকে একা পেয়ে মুখচেপে ধরে শ্বাস রোধ করে হত্যা করে বস্তায় ভরে ধান ক্ষেতে রেখে আসে। তাদেরকে যেন কেউ সন্দেহ না করে তারজন্য সে ভিকটিম হামিদার বাবা ও রবিউলের সাথে ধান ক্ষেতে পানি দিতে যাই এবং উক্ত হত্যাকান্ডের দায় ভার তোতা ও তার পরিবারের সদস্যদের উপর দেয়।