নড়াইল প্রতিনিধিঃ
নড়াইলে হাজার কোটি টাকার স্টেশন নির্মিত হলেও রাস্তর অভাবে যাত্রী সংকটে পড়তে যাচ্ছে রেলগাড়ী। শোনা যাচ্ছে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে নতুনভাবে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা জংশন হয়ে খুলনা পর্যন্ত নবনির্মিত রেলপথ। প্রথম বারের মতো পদ্মাসেতু রেল সংযোগ প্রকল্পে যুক্ত হতে যাচ্ছেন নড়াইল জেলা। এর আগে পরীক্ষামূলক এই রুটে তিন দফা পরীক্ষামূলক ভাবে ট্রেন চলাচল করে। ২৪ নভেম্বর ১২ টি বগি নিয়ে সকাল ৯ টা ১০ মিনিটে রাজধানীর কমলাপুর থেকে নড়াইল হয়ে খুলনা যায় ট্রেনটি। এখন শুধু অপেক্ষা উদ্বোধনের। সেই কারণেই
টানটান উত্তেজনায় নড়াইল বাসি কবে ট্রেনে চড়ে ঢাকা যাবে, বেনাপোলে যাবে, যশোর যাবে, খুলনা যাবে। কিন্তু সেই আশা পূরণে গুড়েবালি। স্টেশনে যাওয়ার ভালো রাস্তা নাই । যেটা আছে সেটাও কান ঘুরিয়ে দেখানোর মত অর্থাৎ শহরের পশ্চিম অঞ্চল, দক্ষিণ অঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলের মানুষের রেলের সুবিধা পেতে রেল স্টেশনে যেতে হলে সোজা পথ বাদ দিয়ে কয়েক কিলো ঘুরে দুর্গাপুর হয়ে আবার দক্ষিণে এসে রেল স্টেশনে উঠতে হবে এ যেন ঘুল্লি ঘুলি খেলা।
এ ব্যাপারে বিশিষ্ট আইনজীবী, রাজনীতিবিদ, সমাজসেবক ও নড়াইল জেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি এডভোকেট ইকবাল হোসেন শিকদার বলেন তুলারামপুর, সিতারামপুর, বাশভিটা, মুলিয়া, কুড়িগ্রাম, রূপগঞ্জ, দক্ষিণ নড়াইল, ভওয়াখালি, মাছিমদিয়া, গোবরাসহ দক্ষিণ- পঞ্চাপশ্চিম অঞ্চলের মানুষ যখন রেলের সেবা নেওয়ার জন্য স্টেশনে যেতে চাইবে তখন তাদের চরম চরম দুর্ভোগ ও বিড়ম্বনার শিকার হতে হবে। এ জন্য নতুন বাসটার্মিনালের পশ্চিম উত্তর কোনা হইতে রেলের যে ওয়ার্কিং রোড টা রেল স্টেশনে এসে যুক্ত হয়েছে সেই রোডটি বাস্তবায়ন করে চালু করতে হবে। সেটি চালু হলে এ অঞ্চলের মানুষ সহজেই স্টেশনে যেতে পারবে সেই সাথে রেল যাত্রার সুবিধা ভোগ করতে পারবে অন্যথায় তাদেরকে দুর্গাপুর ঘুরে রেল স্টেশনে যেতে হলে নড়াইল শহরে ব্যাপক যানযট সৃষ্টি যেটা শুধু রেলযাত্রিদের জন্য দুর্বল ভাবনায় এই দুর্ভোগ হবেনা এ জনদুর্ভোগ গোটা শহরবাসীকে পোহাতে হবে। রেল স্টেশনের উত্তর ভওয়াখালির বাসিন্দা বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ফরহাদ হোসেন বলেন,নতুন বাস টার্মিনাল টু রেল স্টেশন পর্যন্ত এই সড়কটি এই অঞ্চলের জনবসতির যোগাযোগের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ রেলের সুবিধা নেব অন্যদিকে শহরে যাবো বা রাত জেগে অন্য কোন তখন আমরা সোজাসুজি এই রাস্তা দিয়ে তোর চলে যেতে পারবো বা রূপগঞ্জ বাজারে যেতে পারবো । এটা যদি না হয় আর এটা যদি না হয় হলে আমাদের দুর্গাপুর হয়ে নড়াইল পুরাতন বাস টার্মিনাল হয়ে তারপর রুপগঞ্জ যেতে হবে শহরের যানজটের সাথে মোকাবেলা করে পাঁচ মিনিটেট মিনিটের পথ অতিক্রম করে এক ঘন্টা লেগে যাবে। তাই আমরা চাই নড়াইল নতুন বাস টার্মিনাল টু রেল স্টেশন পর্যন্ত সংযোগ সড়কটি দ্রুত বাস্তবায়ন হোক। এটা শুধু আমাদের উপকার হবে না এটা একটা অনন্য রোড হিসেবে স্থান পাবে এবং পার্শ্ববর্তী জেলা মাগুরার বাসগুলো এই পথ দিয়ে যাতায়াত করতে পারবে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী সফিকুল ইসলাম বলেন, প্রতিটি জেলা শহরের সাথে অন্য জেলায় যাতায়াতের জন্য একটি বাইপাস সড়ক থাকে যাতে মূল শহর যানজট মুক্ত থাকে। এছাড়া নড়াইল জেলায় যে রেলস্টেশন নির্মত হয়েছে তাই একটি বৃহৎ রেলস্টেশন। এটি ঢাকা, খুলনা, যশোর ও বেনাপোলকে সংযোগ করেছে কিন্তু দুঃখের বিষয় নড়াইলবাসী রেল সেবা পাওয়ার জন্য স্টেশনে যাওয়ার মতো কোনো ভাল যোগাযোগ ব্যবস্থা নাই। যেটা হয়েছে সেটা একটি ওয়ার্ডের এক অংশের কিছু মানুষ সুবিধা পাবে। তাই জনগণের রেল সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নড়াইলের পুরাতন বাস টার্মিনাল হয়ে রেলস্টেশন পর্যন্ত সংযোগ সড়কটি দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। তাহলেই নড়াইলের জনগণ রেল সেবার পরিপূর্ণ স্বাদ গ্রহণ করতে পারবে অন্যথায় এই স্টেশনটি একটি যাত্রী শূন্যস্থান স্টেশন হিসেবে পরিগণিত হবে। ভওয়াখালির বাসিন্দা নড়াইল জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ফরিদ বিশ্বাস বলেন, এত বড় একটি স্টেশন কিন্তু যাওয়ার রাস্তা নাই এটা জন্য দুর্ভাগ্যজনক এটা একটু অপরিকল্পিত যোগাযোগ ব্যবস্থা করা হয়েছে তাই প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানাই দ্রুত রেল সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নড়াইল পুরাতন বাস টার্মিনাল হইতে নতুন রেল স্টেশন পর্যন্ত সংযোগ সড়কটির বাস্তবায়ন করতে হবে তাহলে আমরা সহজেই রেলের সেবা পাওয়ার জন্য নির্বিঘ্নে স্টেশনে যেতে পারবো। এটা শুধুহ আমার একার দাবি না এটা নড়াইলের সচেতন নাগরিক ও আপামর জনসাধারণের দাবী।
উল্লেখ্য : বর্তমানে নড়াইল স্টেশন থেকে নুতুন বাস টার্মিনালের দূরত্ব প্রায় ৫০০০ মিটার বা ৫ কিলোমিটার , কিন্তু বাইপাস সড়ক করলে নড়াইল স্টেশন থেকে বাস টার্মিনালের দূরত্ব রেলের ওয়ার্কিং রোড দিয়ে মাত্র ১৩০০মিটার বা সোয়া ১ কিলোমিটার, সুতরাং বাস টার্মিনাল থেকে স্টেশনের এই রাস্তাটি উন্নয়ন হলে দূরত্ব কমবে প্রায় ৪ কিলোমিটার, তাতে জনগণের অর্থ এবং সময় ২ বাচবে, যেখানে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হয় মানুষের সময়, অর্থ ও নিরাপত্তার দিক বিবেচনা করে কিন্তু নড়াইল রেলস্টেশন এর কোনটি বিবেচনা করা হয়নি বলে মনে করেন নড়াইলের সুশীল সমাজ ।