নড়াইল অফিস :
নড়াইলে রামপ্রসাদ সিংহ নামে এক ব্যক্তির নিকট হতে জোর পূর্বক ১ লাখ টাকা চাঁদা আদায় একটি সাদা চেক ও ৩শ৫০ টাকার নন জুডিসিয়াল ষ্ট্যাম্পে সাক্ষর করিয়ে নেয়ার ঘটনা ঘটেছে।
এ ঘটনায় নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নের চাঁনপুর গ্রামের ক্ষতিগ্রস্থ গতকাল নড়াইল সদর থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং-১৬। মামলার আসামীরা হলেন নড়াইল পৌরসভার ভওয়াখালি গ্রামের সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র মোস্তফা কামাল মোস্ত (৪৮), সদরের শাহাবাদ ইউনিয়নের জুড়ালিয়া গ্রামের আব্দুল হালিম (৩৫), চানপুর গ্রামের ইমরুল (৪০), বিষ্ণুপুর গ্রামের বুলবুল (২৮) ও টিটুল (৩২)।
মামলার এজহার ও ক্ষতিগ্রস্থ রামপ্রসাদ সূত্রে জানা গেছে, আসামী মোস্তফা কামাল মোস্ত চানপুর গ্রামে রামপ্রসাদের বাড়ির নিকট একটি পশু পালনের খামার করেছে। কিন্তু কোন পশু পালন করে না। মাঝে মধ্যে মোস্ত ওই খামারে যায় এবং অন্যান্য আসামীদের সহযোগিতায় রামপ্রসাদের জায়গাজমি ও বাড়ি ঘর জবর দখলের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন ভাবে হুমকি দেয় । মাঝে মাঝে বন্দুক ও লোহার রড দেখাইয়া ভয় দেখায়।
সম্প্রতি জোরপূর্বক বাড়ি ঘর সহ জায়গা জমি ঘিরে নেয়ার চেষ্টা করলে রামপ্রসাদ বাঁধা দেয়। এ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। এ ঘটনার জের ধরে আসামি ইমরুল ও টিটুল গত ৭ সেপ্টেম্বর সকালে রামপ্রসাদকে জোরপূর্বক বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায় মোস্তর খামারে। এরপর খামারে আটকে রামপ্রসাদকে বেদম মারপিট করে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে এবং বাড়ি ঘর সহ সকল জমি লিখে দেয়ার জন্য হুমকি দেয়।
রামপ্রসাদকে দিয়ে বাড়িতে তার স্ত্রী হাসি সিংহ’র নিকট মোবাইল করায়ে ব্যাংকের চেক বই নিয়ে নেয়। এরপর আসামি হালিম ও বুলবুল জোরপূর্বক রামপ্রসাদকে অগ্রণী ব্যাংক, রূপগঞ্জ বাজার শাখায় নিয়ে যায় এবং ৪৩৫৩৮৪৬ নং চেকে স্বাক্ষর নেয়। স্বাক্ষর করা চেক জমা দিয়ে ১ লাখ টাকা উত্তোলনের পর রামপ্রসাদকে নড়াইল জেলা জজ আদালত এলাকায় ষ্ট্যাম্প বিক্রেতা মাসুদুর রহমানের দোকানে নিয়ে যায়। সেখান থেকে রামপ্রসাদের নামে ৩শ ৫০ টাকার ষ্ট্যাম্প ক্রয় করে। যার বই ক্রমিক নং ২৭০৬। ষ্ট্যাম্পের নং ০৮১৮৪০৮, ০৮১৮৪০৯, ০৮১৮৪১০ ও ৩৬৮৭১০১।
আসামীরা আবারও রামপ্রসাদকে মোস্ত’র খামারে নিয়ে ওই ষ্ট্যম্প গুলিতে স্বাক্ষর নেয়। আসামী হালিম চেক বই হতে আরেকটি ফাঁকা চেকের পাতা জোরপূর্বক ছিড়ে নেয়। যার নং ৪৩৫৩৮৪৭। এসব ঘটনা কাউকে জানালে তাকে ও তার পরিবারের সকলকে খুন করার হুমকি দিয়ে তাকে ছেড়ে দেয় আসামীরা।
এ ঘটনার পর থেকে রামপ্রসাদ ও তার পরিবারের লোকজন চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। সেই সাথে হি›ঝুদের মাঝে চরম আতংক বিরাজ করছে। নড়াইল সদর থানার ওসি শওকত কবির জানান, আসামীদের গ্রেফতার অভিযান অব্যহত আছে।