মোস্তফা কামাল,নড়াইল
নড়াইলের নড়াগাতী থানার চরসিঙ্গাতী গ্রামে অর্ধশত পরিবার স্বাধীন দেশে পরাধীনভাবে জীবন যাপন করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এলাকার প্রভাবশালীরা দুই বছর আগের একটি হত্যার দায় পরিবারগুলোর কাঁধে চাপিয়ে তাদের গ্রামছাড়া করে জমিজায়গা দখল করে নিতেই প্রতি নিয়ত হুমকি, ভয়ভীতি প্রদান, হাট-বাজারসহ স্বাভাবিক কাজকর্মে যাতায়াত, সন্তানদের স্কুললেখাপড়া ও এমনকি বিদ্যুৎ সংযোগ পেতেও প্রতিবন্ধকা সৃষ্টি করে আসছে।
কার্যাত তাদেরকে অবরুদ্ধ করে রখেছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। এসব বিষয়ে বিভিন্ন সময় ভ‚ক্তভোগীরা প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েও প্রতিকার না পাওয়ার দাবি করলেও পুলিশ বলছে এ সংক্রান্ত কোন অভিযোগ নিয়ে কেউ আসেনি।
সরেজমিন অভিযোগ অনুসন্ধানে সংবাদকর্মীরা চরসিঙ্গাতী গ্রামের পশ্চিম পাড়ায় পৌছালে সেখানে আবালবৃদ্ধ বনিতা সংবাদকর্মীদের ঘিরে সমবেত হয়ে নিজেদের দুর্দশাগ্রস্ত অনিশ্চত জীবনের বর্ণনা তুলে ধরেন। তাদের সবারই শুষ্ক বিবর্ণ অবয়ব। চোখমুখে ভর করে থাকা আতঙ্ক উৎকন্ঠাই বলে দিচ্ছিল ভালো নেই তারা।
এসময় তারা জানান, মধুমতির ভাঙ্গনে ভিটেমাটি হারিয়ে চারদশক আগে নিজেদের আদি নিবাস সিঙ্গাতী গ্রামের বিপরীত পারের চরসিঙ্গাতী এসে বসতি গাড়েন তারা।
সেই থেকে দিন ভালোই কাটছিল তাদের, কিন্তু বছর দুই আগে আসাদুজ্জামান টিটো শরীফ নামে এলাকার এক বিত্তশালী দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হলে চরম দুর্ভোগ নেমে আসে এখানকার চৌধরী, মোল্যাসহ ৩/৪টি বংশের অন্তত অর্ধশত পরিবারে।
ঐ হত্যাকান্ডে তাদের দোষারোপ করে ইয়াছিন শরিফ, আশিক শরিফ, কওসার, জাবের, দুলালের নেতৃত্বে প্রভাবশালীরা পরিবারগুলোকে গ্রাম ছাড়া করে তাদের ভিটেমাটি গ্রাসের মিশনে নামে। ঐ হত্যাকান্ডে আসামী করা হয় ৩০জনকে। বাড়িঘরে হামলা লুটপাটসহ শুরুহয় ভয়াবহ অত্যাচার।
ধারাবাহিক এ নির্যাতনে গত দু’বছরে অন্তত ২০টি পরিবার বাধ্য হয় গ্রাম ছাড়তে। যারা ভিটেমাটির মায়ায় আজো পড়ে আছে, এক প্রকার অবরুদ্ধ অবস্থায় নিদারুন কষ্টে দিন কাটছে তদের। এই আতঙ্কগ্রস্ত অনিশ্চয়তার অন্ধকার থেকে মুক্ত হয়ে স্বভাবিক জীবনে ফেরার আকুতি জানিয়েছেন তারা।
এদিকে, কথা হয় যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সেই শরিফ পক্ষের নেতৃত্বদানকারি ইয়াছিন শরিফ, কওসারের সঙ্গে তাদের দাবি, চৌধুরীরা টিটো শরিফের খুনি হওয়া সত্বেও তাদের উপর অত্যাচার নির্যাতন দুরে থাক স্বাভাবিক জীবনযাপনে কোন প্রকার প্রতিবন্ধকতার অভিযোগ ভিত্তিহীন। অন্যদিকে, চরসিঙ্গাতী গ্রামে অত্যাচার নির্যাতনের কোন অভিযোগ নিয়ে কেউ কখোনো আসেনি এবং সেখান পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে দাবি করে নড়াগাতী থানার অফিসার ইনচার্য রোকসানা খানম বলেন, ব্যক্তি স্বাধীনতার পরিপন্থি যে কোন বেআইনি কর্মকান্ডের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
